কোথাও যেন কোনো গোলযোগ না হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে খেয়াল রাখতে আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ শনিবার বেলা ১১টার পর রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বাড়িতে গিয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, আবু সাঈদের আত্মত্যাগ সারা জীবন মনে রাখবো। আবু সাঈদ এক নয়, এরকম আবু সাঈদ ঘরে ঘরে আছে। তবে আর কোনো আবু সাঈদকে যেন এভাবে প্রাণ দিতে না হয়। তারা যে স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলন করেছিলো তা পূরণ করার চেষ্টা করবো।
ড. ইউনূস বলেন, আবু সাঈদ যেমন দাঁড়িয়েছে, আমাদেরও সেভাবে দাঁড়াতে হবে। যারা পার্থক্য করে আমরা তেমন না। আমরা সবাই বাংলাদেশি, আমরা বাংলাদেশেরই সন্তান। আবু সাঈদের মা সবার মা এবং সবার মা আবু সাঈদের মা। কাজেই তাকে রক্ষা করতে হবে, তাদের বোনদের রক্ষা করতে হবে, তাদের ভাইদের রক্ষা করতে হবে। সবাই মিলে এটা করতে হবে।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আরও দুই উপদেষ্টা নাদিম ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াকে নিয়ে পীরগঞ্জে মেরিন একাডেমিতে পৌঁছান ড. ইউনূস। এরপর তাঁরা সেখান থেকে গাড়িবহরে করে আবু সাঈদের বাড়িতে যান। সাঈদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও তাঁর কবর জিয়ারত করেন তাঁরা। এসময় রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসানসহ জেলা ও উপজেলার প্রশাসনের ঊর্দ্ধতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে মাঠে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ–ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে গত ১৬ জুলাই রংপুরের কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেরোবির ইংরেজি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। পুলিশের বন্দুকের সামনে তাঁর বুক পেতে দেওয়ার দৃশ্যটি মুহূর্তেই দেশে–বিদেশে আলোচিত হয়।
আবু সাঈদের ওপর গুলি ও একইদিন ৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় কোটা সংস্কার আন্দোলন নতুন মোড় নেয়। ছাত্রদের সঙ্গে মাঠে নেমে পড়ে বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরাসহ নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ। যার ফলে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন হয়।