ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে উৎখাতে আমেরিকা জড়িত বলে জল্পনা শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনা নিজেও এ কথা বলেছেন বলে এক প্রতিবেদনে দাবি করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্র প্রিন্ট ও ইকোনোমিক টাইমস। তবে এমন অভিযোগ-জল্পনা সরাসরি প্রত্যাখান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি জানিয়েছে, হাসিনাকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মার্কিন হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়েরে এসব মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় আমাদের আদৌ কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। এই ঘটনার সাথে মার্কিন সরকার জড়িত ছিল বলে যদি কোনো প্রতিবেদনে বলা হয় বা গুজব ছড়ানো হয়, তবে তা নিছক মিথ্যা।’
সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়েরে আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জনগণেরই বাংলাদেশ সরকারের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা উচিত এবং আমাদের অবস্থান ঠিক এটাই।’
গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সম্প্রতি নীরবতা ভাঙেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন, তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য দায়ী আমেরিকার মতো বিদেশি শক্তি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট ও ইকোনোমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত শনিবার আওয়ামী লীগের উদ্দেশে এক বার্তা দেন শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি ক্ষমতায় থাকতে পারতাম, যদি আমি সেন্ট মার্টিন ও বঙ্গোপসাগর আমেরিকাকে দিয়ে দিতাম।’ তবে, তাঁর ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় দাবি করেন, তাঁর মা (শেখ হাসিনা) এমন কোনো কথা বলেননি।
হাসিনা সরকারের সঙ্গে বহু বছর ধরে আমেরিকার সম্পর্কে টানাপোড়েন ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারির নির্বাচনের আগে তিনি বলেছিলেন যে, বিমান ঘাঁটির বদলে ক্ষমতায় ফেরার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এক শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি। ওই নির্বাচন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য এসেছিল আমেরিকা থেকে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত জুলাই থেকেই উত্তাল বাংলাদেশ। পরে এই আন্দোলন রূপ নেয় সরকারপতনের আন্দোলনে। গণ আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। এরপর তিনি দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। বর্তমানে তিনি সেখানেই রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এরই মধ্যে গত ৮ আগস্ট শপথ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে।
https://twitter.com/i/status/1823103690359685205