ঢাকা ০৮:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইরানের পরমাণু স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলার পর সংঘাত আরও বাড়তে পারে এমন উত্তেজনা এড়াতে সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স :::: ইরানের পরমাণু স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীকে 'উদ্বেগজনক' আখ্যা দিয়ে ডাচ প্রধানমন্ত্রী সব পক্ষকে আরও উত্তেজনা বৃদ্ধি রোধের আহ্বান জানিয়েছেন :::: ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইস্তাম্বুলে বলেছেন যে তিনি রবিবার বিকেলে মস্কো যাবেন এবং মার্কিন হামলার পরে সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি পুতিনের সাথে সাক্ষাত করবেন :::: ইরানের ওপর মার্কিন হামলার পর 'সংযম' প্রদর্শনের আহ্বান সৌদি আরবের :::: ইরানের পরমাণু স্থাপনায় মার্কিন বোমা হামলায় পরিস্থিতির অবনতিতে দুঃখ প্রকাশ করেছে কাতার :::: ইরানে মার্কিন হামলার নিন্দা জানিয়েছে ওমান, যুদ্ধের বিস্তারের ঝুঁকি রয়েছে

সরকার পতনের পর বন্ধ সব প্রকল্পের কাজ, ক্ষতির মুখে দেশ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:১৮:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৪২১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শেখ হাসিনার পতনের পর পালিয়েছে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়াররা। তাই প্রায় সব প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে আছে। কিছু কাজ চালু থাকলেও তাতে গতি নেই। নগরবিদরা বলছেন, মাঝপথে কাজ থেমে গেলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে দেশ। তাই শেষ করতে হবে দ্রুত।

আন্ডারপাস নির্মাণের কাজ চলছে, বাইরে এমন সাইনবোর্ড ঝুললেও ভেতরে দেখা যায় সব ফাঁকা। ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা ভ্যাকু মেশিনের দেখা মেলে ভেতরে। ইঞ্জিনিয়ারদের থাকার ঘরেও তালা ঝুলছে।

সবেমাত্র কাজ শুরু হয়েছিল আন্ডারপাসটির। চলছিল খনন কাজ। ঘিরে ফেলা হয়েছিলো প্রকল্প এলাকাটি। আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা নিয়ে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে সাংসদদের আবাসিক এলাকা পর্যন্ত যাবার কথা ছিল আন্ডারপাসটির। তবে হঠাৎই থমকে গেছে কাজ। খুঁজে পাওয়া গেলো না দায়িত্বশীল কাউকে।

রাজধানীর গাবতলীর গৈদারটেক এলাকায় উত্তর সিটির অধীনে চলছিলো ড্রেনেজ লাইন নির্মাণের কাজ। কাজ এগিয়েছে ৫০ শতাংশের বেশি, সব ঠিকই চলছিল। তবে, এখন ভাটা পড়েছে কাজে। খনন কাজের কারণে মাটি উঠে বন্ধ হয়েছে রাস্তা। অসুবিধায় পড়েছেন পথচারীরা। ব্যবসা কমেছে দোকানপাটে।

একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘বেচাকেনা আগের মতো নেই। কাস্টমার কমে গেছে অনেক। বেশিরভাগ সময়ই দোকান বন্ধ রাখতে হয়। এই রাস্তার কাটার জন্য মানুষজন ঠিকমতো চলাচলই করতে পারে না।’ উত্তরার খালপাড়েও একই চিত্র দেখা যায়। ড্রেনেজ লাইন খননের কাজ চলছিল রাজউকের অধীনে। হঠাৎই হাওয়া ঠিকাদার। দুর্বিষহ নাগরিক জীবন।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘গেঞ্জামের আগে এই কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু গেঞ্জামের পর তারা আর আসেনি। এখন তারা আসেও না আর আমরা তাদের আশেপাশেও দেখি না।’

গেলো ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরই দেখা নেই ঠিকাদারদের। স্থবির হয়ে পড়েছে হাজার কোটি টাকার কাজ। বন্ধ আছে যন্ত্রপাতি কেনা, চলমান কাজের বিল, আর্থিক ও প্রশাসনিক কাজের অনুমোদনসহ উন্নয়ন কাজ সম্পর্কিত সবকিছুই। অনিশ্চিত হয়েছে উন্নয়ন যাত্রা। এসব প্রকল্পের কাজ মাঝপথে থমকে গেলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে দেশ। তাই দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদ নগর পরিকল্পনাবিদদের।

নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আকতার মাহমুদ বলেন, ‘যদি সংস্থাগুলোর মধ্যে অনেক বড় ধরনের রদবদল না হয়, তাহলে এই কাজগুলো একটু অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে। কারণ এটা এখন একটা বাস্তবতা। বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে বেশকিছু রদবদলও দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আলটিমেটলি এগুলো চালু করতে হবে। প্রকল্পগুলোকে শেষ করতে হবে। কারণ প্রকল্পগুলো শুরু হয়েছে, এগুলো শেষও হওয়া প্রয়োজন। আর শেষ না হলে আমাদের আর্থিক একটা অপচয় হতে পারে।’

আর যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছু ছোট প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়লেও বড় প্রকল্প শেষ হতে কোন বাধা নেই।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. এম শামসুল হক বলেন, ‘এটাকে ওভারকাম করার জন্য টেন্ডার ডকুমেন্টেই কিন্তু একটা এক্সিট দেয়া আছে। যদি এমন কোনো অবস্থা তৈরি হয় যার জন্য কাজ সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সেটা কীভাবে আবার শুরু করতে হবে তারজন্য ফোর্স মেজরই দেয়া আছে। সেক্ষেত্রে কোনো নির্মাণ কাজের অনিশ্চয়তা দেখি না। যেটা ছিল সেটা কেটে গেছে। এবং এর ক্ষতিপূরণটাও যেহেতু টেন্ডারে আছে সেহেতু বাস্তবায়নকারী সংস্থা এটাকে বিবেচনায় নিলে যে হোঁচট খেয়েছে সেটা থেকে দাঁড়াতে বেশি সময় লাগবে না।’

যদিও সদ্য বিদায়ী সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবে এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর দাবি তাদের অধীনে কোনো প্রকল্পের কাজ বন্ধ নেই।

তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের কোনো কাজ বন্ধ নেই আমাদের। আমাদের সবগুলো কাজ চলমান রাখতে হবে, কোনো কাজই তো বন্ধ না।’

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখাতে ছোট, বড়, মাঝারি থেকে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। আর বিভিন্ন সময়ে কারণে বা অকারণে প্রকল্পগুলোর ব্যয় ও সময় বেড়েছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

সরকার পতনের পর বন্ধ সব প্রকল্পের কাজ, ক্ষতির মুখে দেশ

আপডেট সময় : ০৩:১৮:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৪

শেখ হাসিনার পতনের পর পালিয়েছে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়াররা। তাই প্রায় সব প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে আছে। কিছু কাজ চালু থাকলেও তাতে গতি নেই। নগরবিদরা বলছেন, মাঝপথে কাজ থেমে গেলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে দেশ। তাই শেষ করতে হবে দ্রুত।

আন্ডারপাস নির্মাণের কাজ চলছে, বাইরে এমন সাইনবোর্ড ঝুললেও ভেতরে দেখা যায় সব ফাঁকা। ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা ভ্যাকু মেশিনের দেখা মেলে ভেতরে। ইঞ্জিনিয়ারদের থাকার ঘরেও তালা ঝুলছে।

সবেমাত্র কাজ শুরু হয়েছিল আন্ডারপাসটির। চলছিল খনন কাজ। ঘিরে ফেলা হয়েছিলো প্রকল্প এলাকাটি। আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা নিয়ে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে সাংসদদের আবাসিক এলাকা পর্যন্ত যাবার কথা ছিল আন্ডারপাসটির। তবে হঠাৎই থমকে গেছে কাজ। খুঁজে পাওয়া গেলো না দায়িত্বশীল কাউকে।

রাজধানীর গাবতলীর গৈদারটেক এলাকায় উত্তর সিটির অধীনে চলছিলো ড্রেনেজ লাইন নির্মাণের কাজ। কাজ এগিয়েছে ৫০ শতাংশের বেশি, সব ঠিকই চলছিল। তবে, এখন ভাটা পড়েছে কাজে। খনন কাজের কারণে মাটি উঠে বন্ধ হয়েছে রাস্তা। অসুবিধায় পড়েছেন পথচারীরা। ব্যবসা কমেছে দোকানপাটে।

একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘বেচাকেনা আগের মতো নেই। কাস্টমার কমে গেছে অনেক। বেশিরভাগ সময়ই দোকান বন্ধ রাখতে হয়। এই রাস্তার কাটার জন্য মানুষজন ঠিকমতো চলাচলই করতে পারে না।’ উত্তরার খালপাড়েও একই চিত্র দেখা যায়। ড্রেনেজ লাইন খননের কাজ চলছিল রাজউকের অধীনে। হঠাৎই হাওয়া ঠিকাদার। দুর্বিষহ নাগরিক জীবন।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘গেঞ্জামের আগে এই কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু গেঞ্জামের পর তারা আর আসেনি। এখন তারা আসেও না আর আমরা তাদের আশেপাশেও দেখি না।’

গেলো ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরই দেখা নেই ঠিকাদারদের। স্থবির হয়ে পড়েছে হাজার কোটি টাকার কাজ। বন্ধ আছে যন্ত্রপাতি কেনা, চলমান কাজের বিল, আর্থিক ও প্রশাসনিক কাজের অনুমোদনসহ উন্নয়ন কাজ সম্পর্কিত সবকিছুই। অনিশ্চিত হয়েছে উন্নয়ন যাত্রা। এসব প্রকল্পের কাজ মাঝপথে থমকে গেলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে দেশ। তাই দ্রুত কাজ শেষ করার তাগিদ নগর পরিকল্পনাবিদদের।

নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আকতার মাহমুদ বলেন, ‘যদি সংস্থাগুলোর মধ্যে অনেক বড় ধরনের রদবদল না হয়, তাহলে এই কাজগুলো একটু অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে। কারণ এটা এখন একটা বাস্তবতা। বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে বেশকিছু রদবদলও দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আলটিমেটলি এগুলো চালু করতে হবে। প্রকল্পগুলোকে শেষ করতে হবে। কারণ প্রকল্পগুলো শুরু হয়েছে, এগুলো শেষও হওয়া প্রয়োজন। আর শেষ না হলে আমাদের আর্থিক একটা অপচয় হতে পারে।’

আর যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছু ছোট প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়লেও বড় প্রকল্প শেষ হতে কোন বাধা নেই।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. এম শামসুল হক বলেন, ‘এটাকে ওভারকাম করার জন্য টেন্ডার ডকুমেন্টেই কিন্তু একটা এক্সিট দেয়া আছে। যদি এমন কোনো অবস্থা তৈরি হয় যার জন্য কাজ সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সেটা কীভাবে আবার শুরু করতে হবে তারজন্য ফোর্স মেজরই দেয়া আছে। সেক্ষেত্রে কোনো নির্মাণ কাজের অনিশ্চয়তা দেখি না। যেটা ছিল সেটা কেটে গেছে। এবং এর ক্ষতিপূরণটাও যেহেতু টেন্ডারে আছে সেহেতু বাস্তবায়নকারী সংস্থা এটাকে বিবেচনায় নিলে যে হোঁচট খেয়েছে সেটা থেকে দাঁড়াতে বেশি সময় লাগবে না।’

যদিও সদ্য বিদায়ী সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবে এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর দাবি তাদের অধীনে কোনো প্রকল্পের কাজ বন্ধ নেই।

তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের কোনো কাজ বন্ধ নেই আমাদের। আমাদের সবগুলো কাজ চলমান রাখতে হবে, কোনো কাজই তো বন্ধ না।’

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখাতে ছোট, বড়, মাঝারি থেকে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছিল। আর বিভিন্ন সময়ে কারণে বা অকারণে প্রকল্পগুলোর ব্যয় ও সময় বেড়েছিল।