ঢাকা ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৪:৪০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৩৬৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া রায় পরিবর্তনের জন্য প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।

আজ রোববার (১৮ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ বিথির আদালতে মামলাটির আবেদন করেন ইমরুল হাসান নামে একজন আইনজীবী। পরে বিচারক আবেদনকারীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি খারিজের আদেশ দেন।

মামলার আবেদন থেকে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশ সংবিধানে যোগ করা হয়েছিল। এরপর থেকে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়ে পরবর্তী সরকার গঠিত হচ্ছিল। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ কয়েকজন রিট আবেদন করলে ২০০৪ সালে হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ বলে ঘোষণা করে রায় দেন। ওই রায়ে বলা হয়, ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধান সম্মত ও বৈধ। এ সংশোধনী সংবিধানের কোনো মৌলিক কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেনি।

এরপরে রিট আবেদনকারী ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১০ সালের ১ মার্চ আপিল বিভাগে এর শুনানি শুরু হয়। আপিল আবেদনকারী এবং রাষ্ট্রপক্ষ ছাড়াও শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে শীর্ষস্থানীয় আটজন আইনজীবী বক্তব্য দিয়েছেন। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী টি এইচ খান, ড. কামাল হোসেন, আমীর-উল ইসলাম, মাহমুদুল ইসলাম ও রোকনউদ্দিন মাহমুদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন।

মামলার আবেদন থেকে আরও জানা যায়, অ্যামিকাস কিউরিদের বক্তব্য আমলে না নিয়ে এ বি এম খায়রুল হক তার চাকরি মেয়াদকালের শেষের দিকে তড়িঘড়ি করে ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে রায় দেন। ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় প্রকাশ্যে আদালতে ঘোষিত রায়ে সুপ্রিম কোর্ট দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পথ খোলা রেখেছিল। ২০১২ সালের ১৭ মে এ বি এম খায়রুল হক অবসর নেন। সেই সঙ্গে তিনি ওই আপিল মামলার নথি বাসায় নিয়ে যান, যা বেআইনি। রায় দেওয়ার ১৬ মাস তিন দিন পর ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।

ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় প্রকাশ্যে আদালতে ঘোষিত রায়ে সুপ্রিম কোর্ট দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পথ খোলা রেখেছিলেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক অবসরে গিয়ে রায় ঘোষণার ১৬ মাস তিন দিন পর যে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করলেন সেখানে তিনি এ অংশটি রাখেননি। অসাধুভাবে প্রধান বিচারপতির পদ ব্যবহার করে প্রতারণামূলকভাবে বিশ্বাস ভঙ্গ ও জালিয়াতির মাধ্যমে এ রায় দেন। এ বি এম খায়রুল হক তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান কর্তৃক ২০১০ সালের ১ অক্টোবর নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ২০১২ সালের ১৭ মে পর্যন্ত ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ

আপডেট সময় : ০৪:৪০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪

সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া রায় পরিবর্তনের জন্য প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।

আজ রোববার (১৮ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ বিথির আদালতে মামলাটির আবেদন করেন ইমরুল হাসান নামে একজন আইনজীবী। পরে বিচারক আবেদনকারীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি খারিজের আদেশ দেন।

মামলার আবেদন থেকে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশ সংবিধানে যোগ করা হয়েছিল। এরপর থেকে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়ে পরবর্তী সরকার গঠিত হচ্ছিল। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ কয়েকজন রিট আবেদন করলে ২০০৪ সালে হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ বলে ঘোষণা করে রায় দেন। ওই রায়ে বলা হয়, ত্রয়োদশ সংশোধনী সংবিধান সম্মত ও বৈধ। এ সংশোধনী সংবিধানের কোনো মৌলিক কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেনি।

এরপরে রিট আবেদনকারী ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১০ সালের ১ মার্চ আপিল বিভাগে এর শুনানি শুরু হয়। আপিল আবেদনকারী এবং রাষ্ট্রপক্ষ ছাড়াও শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে শীর্ষস্থানীয় আটজন আইনজীবী বক্তব্য দিয়েছেন। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী টি এইচ খান, ড. কামাল হোসেন, আমীর-উল ইসলাম, মাহমুদুল ইসলাম ও রোকনউদ্দিন মাহমুদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন।

মামলার আবেদন থেকে আরও জানা যায়, অ্যামিকাস কিউরিদের বক্তব্য আমলে না নিয়ে এ বি এম খায়রুল হক তার চাকরি মেয়াদকালের শেষের দিকে তড়িঘড়ি করে ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে রায় দেন। ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় প্রকাশ্যে আদালতে ঘোষিত রায়ে সুপ্রিম কোর্ট দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পথ খোলা রেখেছিল। ২০১২ সালের ১৭ মে এ বি এম খায়রুল হক অবসর নেন। সেই সঙ্গে তিনি ওই আপিল মামলার নথি বাসায় নিয়ে যান, যা বেআইনি। রায় দেওয়ার ১৬ মাস তিন দিন পর ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।

ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় প্রকাশ্যে আদালতে ঘোষিত রায়ে সুপ্রিম কোর্ট দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পথ খোলা রেখেছিলেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক অবসরে গিয়ে রায় ঘোষণার ১৬ মাস তিন দিন পর যে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করলেন সেখানে তিনি এ অংশটি রাখেননি। অসাধুভাবে প্রধান বিচারপতির পদ ব্যবহার করে প্রতারণামূলকভাবে বিশ্বাস ভঙ্গ ও জালিয়াতির মাধ্যমে এ রায় দেন। এ বি এম খায়রুল হক তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান কর্তৃক ২০১০ সালের ১ অক্টোবর নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ২০১২ সালের ১৭ মে পর্যন্ত ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।