ঢাকা ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গোমতীর ঢলে প্লাবিত কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল

কুমিল্লা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১২:৫৯:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৩৬৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টানা তিন দিনের বৃষ্টির পাশাপাশি ভারতের ত্রিপুরা থেকে ঢলের পানি মিলে গোমতীর ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। কুমিল্লার গোমতী নদীতে পানি বেড়েছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকেই বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নদীর পানি। টানা তিন দিনের বৃষ্টির পাশাপাশি ভারতের ত্রিপুরা থেকে ঢলের পানি মিলে গোমতীর এই ভয়ঙ্কর রূপ গত ২০ বছরের মধ্যে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। প্রচণ্ড স্রোত আর পানির অস্বাভাবিক উচ্চতায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কার পাশাপাশি ঘর ছেড়ে বাঁধের ওপর আশ্রয় নিতে হয়েছে সহস্রাধিক পরিবারকে। অন্তত ৪ হাজার হেক্টর চরের জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্রমাগত পানি বাড়তে থাকায় গোমতীর দু-কূল ছাপিয়ে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার সকালে কুমিল্লা গোমতীনদীর আদর্শ সদর উপজেলার বানাশুয়া, পালপাড়া, রত্নবতী, টিক্কারচর,জালুয়াপাড়া, বুড়িচং উপজেলার ভান্তি, শিমাইলখাড়া, পূর্বহুড়া, নানুয়ার বাজার, মিথলাপুর, গোবিন্দপুর, ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলার মালাপাড়া এলাকায় ঘুরে দেখা যায় গোমতীর তীর ঘেঁষে পানির ঢেউ। চরের হাজার একর সবজি খেত ডুবে গেছে। চরের বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। প্লাবনের তোড়ে পানি উপচে আশপাশের এলাকা ডুবে যাবার শঙ্কায় অনেকেই বাঁধ দেখতে ভিড় করেছেন নদীর তীরে।

বুধবার দুপুরে বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের কিংবা যে পুরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নদীর স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে লোকালয় দিয়ে। বেড়ি বাধের ভেতরের এই গ্রামটিতে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। সেখানে কোনো স্কুলকলেজ না থাকায় অনেকেই আশ্রয়ের যেতে পারেননি। কেউ কেউ আশপাশের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে চলে গেছেন।

এই গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, গ্রামটিতে কোনো স্কুলকলেজ বা উঁচু ভবন নেই। যাদের পাকা বাড়ি ঘর নেই তারা আশ্রয়ের জন্য বেরিবাধেঁর ওপরে যেতে হয়েছে।

গোমতী পাড়ের বাসিন্দারা জানান, গত ২০ বছরের বেশি সময় পর এ বছরই গোমতীর পানি এত বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। চরের ভেতর বসবাসকারী সহস্রাধিক পরিবার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। বুধবার দুপুরে বেড়িবাঁধের ভেতরের গ্রামগুলো তলিয়ে গেছে পানের নিচে। নদীর বাঁধের কয়েক জায়গায় ফাটল দেখা দেওয়ায় বালুর বস্তা দিয়ে মেরামত করতে হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে।

একই উপজেলার মালাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আলাউদ্দিন আজাদ জানান, তিনি পরিবার নিয়ে চরের ভেতর বসবাস করেন। গেল ২০ বছরে গোমতী নদীতে এত পানি দেখেননি। তাঁর বৃদ্ধ মা ও স্ত্রী সন্তান আর দুটি গাভি নিয়ে গোমতীর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।

বুড়িচং উপজেলার ভান্তি এলাকার আবুল কালাম জানান, তার ১২০ শতক জমির মুলা পানিতে তলিয়ে গেছে। যতগুলো সম্ভব মূলা তুলে নিয়ে আসা হয়েছে।

কামাড়খাড়া এলাকার নোয়াব মিয়া জানান, শিম ও চালকুমড়ার চাষ করেছিলেন। শিমগাছ ছোট ছিল। মাচায় ঝুলছিল কচি চাল কুমড়ো। সব এখন পানির নিচে।

সদর উপজেলার জালুয়াপাড়া এলাকার কৃষক রহিম মিয়া জানান, এক লাখ টাকা পুঁজি ব্যয় করে ঝিঙা, শশিন্দা, করলা ও চাল কুমড়ার চারা রোপন করেছেন। লতাগুলো মাচায় উঠবে এই সময়ে গোমতীর পানিতে তাঁর চারাগুলো পানিতে ডুবে গেছে।

টিক্কারচর এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধে শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। চরের ভেতর পানি গলা সমান হয়ে গেছে। ঘর থেকে প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই বের করতে পারেননি।

চাঁনপুর এলাকার সোহেল মিয়া জানান, তাঁর সন্তানদের বই খাতা, নিজের গায়ের জামা কাপড় মঙ্গলবার রাতে নিয়ে বের হয়েছেন। বুধবার বৃষ্টিতে ভিজে ঘর থেকে খাট আলমারী বের করছেন।

একই এলাকার বাঁধের ভেতরে বসবাসকারী আমিনুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে এত পানি বাড়বে বুঝতে পারিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি হু হু করে পানি বাড়ছে। কোনোরকমে বাচ্চাকাচ্চা, ছাগল মুরগি নিয়ে বাঁধের ওপরে আশ্রয় নিয়েছি।

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা জানান, গতকাল রাত থেকে গোমতীর বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরেছি। বিভিন্ন এলাকায় গোমতীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই সব এলাকায় স্থানীয়রা মাটি ও বালুর বস্তা দিয়ে বাঁধ রক্ষায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন।

এদিকে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে গোমতী ছাড়াও কাকড়ী, পাগুলি ও সালদানদী দিয়ে ভারত থেকে পানি আসা অব্যাহত রয়েছে। এতে করে কুমিল্লায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওয়ালিউজ্জামান জানান, নদীতে ক্রমাগত পানি বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঝুকিপূর্ণ স্থানগুলো পরিদর্শন করছেন। যেসব এলাকায় ফাটল দেখা দিয়েছে সেসব পয়েন্টগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করা হয়েছে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘নদীর পানি বৃদ্ধির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বেড়িবাঁধের ভেতরে যেসব মানুষ বসবাস করেন তাদেরকে আমরা নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য বলেছি। কোথাও কোথাও মাইকিং করা হয়েছে। সকল স্কুলকলেজগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। দুর্গত এলাকায় সেনাবাহিনী, স্বেচ্ছাসেবকেরা মিলে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবেন।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে কুমিল্লায় গোমতীর চরে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আইয়ুব মাহমুদ জানান, গোমতীর ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানি সরে না যাওয়া পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করা সম্ভব নয়। তিনি কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি সভা ডেকেছেন।

এদিকে বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা, ফায়ার সার্ভিসের স্বেচ্ছাসেবক, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা নদীর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। বুধবার সারাদিন দুর্গতদের সরলতায় স্বেচ্ছায় কাজ করেছেন অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বারবার ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে- যেকোনো প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবকরা পাশে দাঁড়াবে দূর্গতদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

গোমতীর ঢলে প্লাবিত কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল

আপডেট সময় : ১২:৫৯:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪

টানা তিন দিনের বৃষ্টির পাশাপাশি ভারতের ত্রিপুরা থেকে ঢলের পানি মিলে গোমতীর ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। কুমিল্লার গোমতী নদীতে পানি বেড়েছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকেই বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নদীর পানি। টানা তিন দিনের বৃষ্টির পাশাপাশি ভারতের ত্রিপুরা থেকে ঢলের পানি মিলে গোমতীর এই ভয়ঙ্কর রূপ গত ২০ বছরের মধ্যে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। প্রচণ্ড স্রোত আর পানির অস্বাভাবিক উচ্চতায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কার পাশাপাশি ঘর ছেড়ে বাঁধের ওপর আশ্রয় নিতে হয়েছে সহস্রাধিক পরিবারকে। অন্তত ৪ হাজার হেক্টর চরের জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্রমাগত পানি বাড়তে থাকায় গোমতীর দু-কূল ছাপিয়ে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার সকালে কুমিল্লা গোমতীনদীর আদর্শ সদর উপজেলার বানাশুয়া, পালপাড়া, রত্নবতী, টিক্কারচর,জালুয়াপাড়া, বুড়িচং উপজেলার ভান্তি, শিমাইলখাড়া, পূর্বহুড়া, নানুয়ার বাজার, মিথলাপুর, গোবিন্দপুর, ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলার মালাপাড়া এলাকায় ঘুরে দেখা যায় গোমতীর তীর ঘেঁষে পানির ঢেউ। চরের হাজার একর সবজি খেত ডুবে গেছে। চরের বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। প্লাবনের তোড়ে পানি উপচে আশপাশের এলাকা ডুবে যাবার শঙ্কায় অনেকেই বাঁধ দেখতে ভিড় করেছেন নদীর তীরে।

বুধবার দুপুরে বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের কিংবা যে পুরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নদীর স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে লোকালয় দিয়ে। বেড়ি বাধের ভেতরের এই গ্রামটিতে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। সেখানে কোনো স্কুলকলেজ না থাকায় অনেকেই আশ্রয়ের যেতে পারেননি। কেউ কেউ আশপাশের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে চলে গেছেন।

এই গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, গ্রামটিতে কোনো স্কুলকলেজ বা উঁচু ভবন নেই। যাদের পাকা বাড়ি ঘর নেই তারা আশ্রয়ের জন্য বেরিবাধেঁর ওপরে যেতে হয়েছে।

গোমতী পাড়ের বাসিন্দারা জানান, গত ২০ বছরের বেশি সময় পর এ বছরই গোমতীর পানি এত বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। চরের ভেতর বসবাসকারী সহস্রাধিক পরিবার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। বুধবার দুপুরে বেড়িবাঁধের ভেতরের গ্রামগুলো তলিয়ে গেছে পানের নিচে। নদীর বাঁধের কয়েক জায়গায় ফাটল দেখা দেওয়ায় বালুর বস্তা দিয়ে মেরামত করতে হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে।

একই উপজেলার মালাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আলাউদ্দিন আজাদ জানান, তিনি পরিবার নিয়ে চরের ভেতর বসবাস করেন। গেল ২০ বছরে গোমতী নদীতে এত পানি দেখেননি। তাঁর বৃদ্ধ মা ও স্ত্রী সন্তান আর দুটি গাভি নিয়ে গোমতীর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।

বুড়িচং উপজেলার ভান্তি এলাকার আবুল কালাম জানান, তার ১২০ শতক জমির মুলা পানিতে তলিয়ে গেছে। যতগুলো সম্ভব মূলা তুলে নিয়ে আসা হয়েছে।

কামাড়খাড়া এলাকার নোয়াব মিয়া জানান, শিম ও চালকুমড়ার চাষ করেছিলেন। শিমগাছ ছোট ছিল। মাচায় ঝুলছিল কচি চাল কুমড়ো। সব এখন পানির নিচে।

সদর উপজেলার জালুয়াপাড়া এলাকার কৃষক রহিম মিয়া জানান, এক লাখ টাকা পুঁজি ব্যয় করে ঝিঙা, শশিন্দা, করলা ও চাল কুমড়ার চারা রোপন করেছেন। লতাগুলো মাচায় উঠবে এই সময়ে গোমতীর পানিতে তাঁর চারাগুলো পানিতে ডুবে গেছে।

টিক্কারচর এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধে শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। চরের ভেতর পানি গলা সমান হয়ে গেছে। ঘর থেকে প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই বের করতে পারেননি।

চাঁনপুর এলাকার সোহেল মিয়া জানান, তাঁর সন্তানদের বই খাতা, নিজের গায়ের জামা কাপড় মঙ্গলবার রাতে নিয়ে বের হয়েছেন। বুধবার বৃষ্টিতে ভিজে ঘর থেকে খাট আলমারী বের করছেন।

একই এলাকার বাঁধের ভেতরে বসবাসকারী আমিনুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে এত পানি বাড়বে বুঝতে পারিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি হু হু করে পানি বাড়ছে। কোনোরকমে বাচ্চাকাচ্চা, ছাগল মুরগি নিয়ে বাঁধের ওপরে আশ্রয় নিয়েছি।

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা জানান, গতকাল রাত থেকে গোমতীর বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরেছি। বিভিন্ন এলাকায় গোমতীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই সব এলাকায় স্থানীয়রা মাটি ও বালুর বস্তা দিয়ে বাঁধ রক্ষায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন।

এদিকে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে গোমতী ছাড়াও কাকড়ী, পাগুলি ও সালদানদী দিয়ে ভারত থেকে পানি আসা অব্যাহত রয়েছে। এতে করে কুমিল্লায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওয়ালিউজ্জামান জানান, নদীতে ক্রমাগত পানি বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঝুকিপূর্ণ স্থানগুলো পরিদর্শন করছেন। যেসব এলাকায় ফাটল দেখা দিয়েছে সেসব পয়েন্টগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করা হয়েছে।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘নদীর পানি বৃদ্ধির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বেড়িবাঁধের ভেতরে যেসব মানুষ বসবাস করেন তাদেরকে আমরা নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য বলেছি। কোথাও কোথাও মাইকিং করা হয়েছে। সকল স্কুলকলেজগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। দুর্গত এলাকায় সেনাবাহিনী, স্বেচ্ছাসেবকেরা মিলে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবেন।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে কুমিল্লায় গোমতীর চরে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আইয়ুব মাহমুদ জানান, গোমতীর ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানি সরে না যাওয়া পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন করা সম্ভব নয়। তিনি কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি সভা ডেকেছেন।

এদিকে বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা, ফায়ার সার্ভিসের স্বেচ্ছাসেবক, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা নদীর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। বুধবার সারাদিন দুর্গতদের সরলতায় স্বেচ্ছায় কাজ করেছেন অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বারবার ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে- যেকোনো প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবকরা পাশে দাঁড়াবে দূর্গতদের।