০৭:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টানা বৃষ্টিতে বন্যার কবলে খাগড়াছড়ি, তলিয়েছে শহর-গ্রাম

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বির্পযয়ের মুখে খাগড়াছড়ি। রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে প্লাবিত হয়েছে গ্রাম থেকে শহর। এর আগে কখনও খাগড়াছড়ি শহর না ডুবলেও আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেই রের্কডও ভেঙেছে। শহরের ভেতরে প্রবেশ করছে বন্যার পানি।

সকাল থেকে শহরের আদালত সড়ক, মাস্টারপাড়া, মিলনপুর, বায়তুশরফসহ খাগড়াছড়ি পৌর শহরের সাতটি সড়ক এখন পানির নিচে। জেলা সদরের বেশিরভাগ এলাকার মানুষ পানিবন্দি।

বুধবার পানি কমে যাওয়ায় খাগড়াছড়ি জেলা সদরের আশ্রয় কেন্দ্রগুলো থেকে বাড়ি ফিরেছিল অনেক পরিবার। তবে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে আবারও বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে মাইনী নদীর পানি বেড়ে দীঘিনালার মেরুং, বোয়ালখালি ও কবাখালি ইউনিয়নের ৫০ গ্রাম প্লাবিত হয়। বন্যায় ঘর-বাড়ি, সড়ক, কৃষি জমি ও পুকুর পানিতে ডুবে গেছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

খাগড়াছড়ি পৌর শহরের বাসিন্দা আরাফুলত ইসলাম, মাঈন উদ্দিন ও মো. বেলাল হোসান বলেন, ‘এত পানি গত ১০ বছরেও দেখি নাই। শহরের মধ্যে সাধারণত পানি ওঠে না। এবার শহরের প্রধান সড়কগুলোতে পানি উঠে গেছে। টানা এক সপ্তাহ বৃষ্টি আর নদীর পানি বেড়ে পৌরসভার গঞ্জপাড়া, অপর্ণা চৌধুরী পাড়া, রাজ্যমনি পাড়া, কালাডেবা, বটতলী, ফুটবিল, শান্তিনগর, মুসলিম পাড়া পুরোপুরি পানির নিচে। কেবল খাগড়াছড়ি সদরের তিন হাজারের মতো পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।’

গেল মঙ্গলবার থেকে বিকেল থেকে সাজেক সড়কের কবাখালি, বাঘাইহাট বাজার ও মাচালং বাজারসহ একাধিক অংশ পাঁচ থেকে ছয় ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে সড়কটিতে পর্যটকবাহী যানবাহনসহ সকল ধরনের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়ক ডুবে যাওয়ায় সাজেকে বেড়াতে এসে আটকা পড়েছে অন্তত আড়াই শ পর্যটক।

এদিকে পাহাড়ি ঢলে দীঘিনালা-লংগদু সড়কের হেড কোয়ার্টার এলাকায় সড়ক ডুবে যাওয়ার রাঙামাটির লংগদুর সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ডুবে গেছে মেরুং বাজার।

মেরুং ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ঘনশ্যাম ত্রিপুরা বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। মাইনী নদীর পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গ্রামের সঙ্গে এখন শহরগুলোও পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। এরইমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোও ডোবা শুরু হয়েছে। মেরুং বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রের নিচতলা ডুবে গেছে। সেখানে আশ্রয় নেওয়া ২৯টি পরিবারকে বিদ্যালয় ভবনের দ্বিতীয় তলায় তুলে দেওয়া হয়েছে।’

খাগড়াছড়ি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, পুরো জেলায় ৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। আশ্রিতদের জন্য শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

টানা বৃষ্টিতে বন্যার কবলে খাগড়াছড়ি, তলিয়েছে শহর-গ্রাম

আপডেট : ০১:০৬:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বির্পযয়ের মুখে খাগড়াছড়ি। রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারণে প্লাবিত হয়েছে গ্রাম থেকে শহর। এর আগে কখনও খাগড়াছড়ি শহর না ডুবলেও আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেই রের্কডও ভেঙেছে। শহরের ভেতরে প্রবেশ করছে বন্যার পানি।

সকাল থেকে শহরের আদালত সড়ক, মাস্টারপাড়া, মিলনপুর, বায়তুশরফসহ খাগড়াছড়ি পৌর শহরের সাতটি সড়ক এখন পানির নিচে। জেলা সদরের বেশিরভাগ এলাকার মানুষ পানিবন্দি।

বুধবার পানি কমে যাওয়ায় খাগড়াছড়ি জেলা সদরের আশ্রয় কেন্দ্রগুলো থেকে বাড়ি ফিরেছিল অনেক পরিবার। তবে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে আবারও বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে মাইনী নদীর পানি বেড়ে দীঘিনালার মেরুং, বোয়ালখালি ও কবাখালি ইউনিয়নের ৫০ গ্রাম প্লাবিত হয়। বন্যায় ঘর-বাড়ি, সড়ক, কৃষি জমি ও পুকুর পানিতে ডুবে গেছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

খাগড়াছড়ি পৌর শহরের বাসিন্দা আরাফুলত ইসলাম, মাঈন উদ্দিন ও মো. বেলাল হোসান বলেন, ‘এত পানি গত ১০ বছরেও দেখি নাই। শহরের মধ্যে সাধারণত পানি ওঠে না। এবার শহরের প্রধান সড়কগুলোতে পানি উঠে গেছে। টানা এক সপ্তাহ বৃষ্টি আর নদীর পানি বেড়ে পৌরসভার গঞ্জপাড়া, অপর্ণা চৌধুরী পাড়া, রাজ্যমনি পাড়া, কালাডেবা, বটতলী, ফুটবিল, শান্তিনগর, মুসলিম পাড়া পুরোপুরি পানির নিচে। কেবল খাগড়াছড়ি সদরের তিন হাজারের মতো পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।’

গেল মঙ্গলবার থেকে বিকেল থেকে সাজেক সড়কের কবাখালি, বাঘাইহাট বাজার ও মাচালং বাজারসহ একাধিক অংশ পাঁচ থেকে ছয় ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে সড়কটিতে পর্যটকবাহী যানবাহনসহ সকল ধরনের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়ক ডুবে যাওয়ায় সাজেকে বেড়াতে এসে আটকা পড়েছে অন্তত আড়াই শ পর্যটক।

এদিকে পাহাড়ি ঢলে দীঘিনালা-লংগদু সড়কের হেড কোয়ার্টার এলাকায় সড়ক ডুবে যাওয়ার রাঙামাটির লংগদুর সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ডুবে গেছে মেরুং বাজার।

মেরুং ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ঘনশ্যাম ত্রিপুরা বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। মাইনী নদীর পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গ্রামের সঙ্গে এখন শহরগুলোও পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। এরইমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোও ডোবা শুরু হয়েছে। মেরুং বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রের নিচতলা ডুবে গেছে। সেখানে আশ্রয় নেওয়া ২৯টি পরিবারকে বিদ্যালয় ভবনের দ্বিতীয় তলায় তুলে দেওয়া হয়েছে।’

খাগড়াছড়ি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, পুরো জেলায় ৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। আশ্রিতদের জন্য শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।