ঢাকা ০১:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দেশের ১২ জেলায় ভয়াবহ বন্যা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৫৬:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৩৬৩ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দেশের ১২ জেলা। বিভিন্ন স্থানে বাধ ভেঙ্গে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। এছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও ফেনীর বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হয়ে যাওয়ায় বন্ধ আছে যানবাহন চলাচল। পানিবন্দি আছে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষ। দুর্গতদের সহায়তায় মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী।

কুমিল্লার গোমতী নদীতে বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় পানি বেড়িবাঁধের ভেতর অবস্থান করায় বিভিন্ন স্থানে নদীর বাধ দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।

টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় উজানের ঢলে জেলার নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ১০ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও জেলার আদর্শ সদর, লাকসাম, বুড়িচং, বরুড়া, দেবিদ্বার, মুরাদনগর ও দাউদকান্দির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় নিদারুণ কষ্টের রয়েছেন এসব এলাকার মানুষ। গোমতী নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে বাসিন্দারা ইতোমধ্যে বাড়িঘর হারিয়ে সহায়-সম্বল নিয়ে পথে বসেছেন। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় অতি প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন অনেকে। এসব এলাকার শত শত মাছের ঘের, আউশ- আমন ধানের বীজতলা এবং শাকসবজিসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের ৩৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ১২ হাজার ৯৬৬টি পরিবারের প্রায় এক লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। জেলার ১৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৪ হাজার ৩২৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে এক হাজার ৬৫০টি পুকুরের ২১০ টন মাছ। এতে ক্ষতি হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা।

এছাড়াও মৌলভীবাজারের মনু নদীর ৬টি ও ধলাই নদীর ৮টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মনু নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকালের (বুধবার, ২১ আগস্ট) সর্বোচ্চ পানির লেভেল থেকে বর্তমানে পানির লেভেল ২০ সেন্টিমিটার কম। ও চাঁদনীঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়াও ধলাই নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টেও পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর পানি বাল্লা পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এবং মাছুলিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় হবিগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ৫২ মিলিমিটার।

নোয়াখালীর জেলা শহরসহ নয় উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। জেলার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। নোয়াখালীতে ৩৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয়রা।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল থেকে ভারি বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে নগরীতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নগরীর অভ্যন্তরীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে আছে। চট্টগ্রামের হালদা নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে, প্লাবিত হয়েছে ফটিকছড়ি।

নোয়াখালী, ফেনী, মৌলভীবাজার ও কুমিল্লায় পানিবন্দি রয়েছে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষ।

নিউজটি শেয়ার করুন

দেশের ১২ জেলায় ভয়াবহ বন্যা

আপডেট সময় : ১২:৫৬:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪

ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে দেশের ১২ জেলা। বিভিন্ন স্থানে বাধ ভেঙ্গে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। এছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও ফেনীর বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হয়ে যাওয়ায় বন্ধ আছে যানবাহন চলাচল। পানিবন্দি আছে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষ। দুর্গতদের সহায়তায় মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী।

কুমিল্লার গোমতী নদীতে বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় পানি বেড়িবাঁধের ভেতর অবস্থান করায় বিভিন্ন স্থানে নদীর বাধ দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।

টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় উজানের ঢলে জেলার নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ১০ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও জেলার আদর্শ সদর, লাকসাম, বুড়িচং, বরুড়া, দেবিদ্বার, মুরাদনগর ও দাউদকান্দির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় নিদারুণ কষ্টের রয়েছেন এসব এলাকার মানুষ। গোমতী নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে বাসিন্দারা ইতোমধ্যে বাড়িঘর হারিয়ে সহায়-সম্বল নিয়ে পথে বসেছেন। ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় অতি প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন অনেকে। এসব এলাকার শত শত মাছের ঘের, আউশ- আমন ধানের বীজতলা এবং শাকসবজিসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের ৩৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ১২ হাজার ৯৬৬টি পরিবারের প্রায় এক লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। জেলার ১৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৪ হাজার ৩২৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে এক হাজার ৬৫০টি পুকুরের ২১০ টন মাছ। এতে ক্ষতি হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা।

এছাড়াও মৌলভীবাজারের মনু নদীর ৬টি ও ধলাই নদীর ৮টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মনু নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকালের (বুধবার, ২১ আগস্ট) সর্বোচ্চ পানির লেভেল থেকে বর্তমানে পানির লেভেল ২০ সেন্টিমিটার কম। ও চাঁদনীঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়াও ধলাই নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টেও পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

হবিগঞ্জে খোয়াই নদীর পানি বাল্লা পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এবং মাছুলিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় হবিগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ৫২ মিলিমিটার।

নোয়াখালীর জেলা শহরসহ নয় উপজেলার অধিকাংশ এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। জেলার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। নোয়াখালীতে ৩৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয়রা।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল থেকে ভারি বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে নগরীতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নগরীর অভ্যন্তরীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে আছে। চট্টগ্রামের হালদা নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে, প্লাবিত হয়েছে ফটিকছড়ি।

নোয়াখালী, ফেনী, মৌলভীবাজার ও কুমিল্লায় পানিবন্দি রয়েছে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষ।