অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, দেশের ১০ জেলা বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সর্বশেষ হিসেবে ৩৬ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত। আজ বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শফিকুল আলম এ কথা বলেন।
শফিকুল আলম জানান, আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কেবিনেট সভা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন।
শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজ কেবিনেট বৈঠকে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ড. ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগণকে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনের কথা বলেছেন।’
এসময় শফিকুল আলম জানান, ১০ জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে এবং সর্বশেষ হিসেবে ৩৬ লাখ মানুষ বন্যা-কবলিত হয়েছে। দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে উপদেষ্টারা এই জেলাগুলো পরির্দশন করবেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরকে উদ্ধৃত করে শফিকুল আলম জানান, দীর্ঘসময় অতিবৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বন্যার অন্যতম কারণ হলো নদ-নদী ও খালবিল শুকিয়ে যাওয়া।
এদিকে, আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বন্যার্তদের উদ্ধারে ৬ জেলায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের মীরসরাই, কুমিল্লার বুড়িচং, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বন্যার্তদের উদ্ধার কার্যক্রমে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশন, ২৪ পদাতিক ডিভিশন এবং ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের সেনাসদস্যরা নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় মোতায়েন হয়ে নিরলসভাবে পানিবন্দি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া ফেনী, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে সেনাবাহিনীর পাঁচটি মেডিক্যাল টিম চিকিৎসা সহায়তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকাল (২১ আগস্ট) থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের সেনাসদস্যরা ফেনী জেলার পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারে মোতায়েন রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বন্যাকবলিত জেলাসমূহে এ পর্যন্ত আনুমানিক ছয় হাজার বন্যাদুর্গত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়েছে। পাশাপাশি বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ চলমান রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অন্যান্য ফরমেশনসমূহ নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে এবং অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সেনাবাহিনী প্রধান বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত জাতির আস্থার প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে এই মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন।