ঢাকা ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ হারবে না

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:১৯:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৩৬৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আসছেন নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ। আজ শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত টিএসসি এলাকায় দেখা যায়, সব শ্রেণীর মানুষ ট্রাক, পিকআপ, ভ্যান, রিকশা, প্রাইভেটকার ভর্তি করে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আসছেন।

ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পানি থৈ থৈ। পানির তোড়ে ভেসে গেছে বাড়িঘর। আশ্রয়কেন্দ্রে এখনও অনেকে পৌঁছাতে পারেনি। যারা পৌঁছেছেন, তারা এখনও খাবার, পানি, ওষুধ, পোশাকের সমস্যায় ভুগছেন। তাদের মানবেতর জীবনের সঙ্গী কোথাও কোথাও গবাদি পশুরাও। তাদের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছেন মানুষ।

ত্রাণসামগ্রীতে টিএসসি ক্যাফেটেরিয়া, গেমসরুম ভর্তি হয়ে যাওয়ায় সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামসহ টিএসসির বারান্দায় রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি নগদ টাকাও উঠছে। ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে আসা গাড়ির লম্বা লাইন লেগে গেছে টিএসসি এলাকায়। ত্রাণ সামগ্রী প্যাকেজিংয়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে স্কুল-কলেজের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী কাজ করছেন। নগদ অর্থ থেকে শুরু করে শুকনো খাবার, ওষুধ, কাপড় দিয়ে সহায়তা করছেন অনেকে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলছেন, যতদিন বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হচ্ছে ততদিন এ কার্যক্রম চলবে। টিএসসি গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি থেকে দ্বিতীয় দিনে অনলাইন ও অফলাইনে সর্বমোট ১ কোটি ২৬ লাখ ২২ হাজার ১৭২ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার যার পরিমাণ ছিল ২৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। এ ছাড়া আজ বিপুল পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী সহায়তা পাওয়া যায়। আগামীকালও (শনিবার) সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত গণত্রাণ কর্মসূচি চলমান থাকবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লূৎফর রহমান তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লূৎফর রহমান বলেন, টিএসসিতে আজকের টোটাল কালেকশন ১ কোটি ২৬ লাখ ২২ হাজার ১৭২ টাকা। ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ হারবে না।

১০ বছর বয়সী ইহানও ছোট্ট ব্যাংক নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে এসেছিল টাকা জমা দিতে। বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ সহায়তা নিয়ে এসেছিলেন দিনমজুর-রিকশাচালকও। আর বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, নানা বয়সী কর্মজীবী, শিক্ষার্থীরা তো আছেনই। তারা সবাই শুধু টাকা নয়, বস্তায় বস্তায় জমা দেন শুকনো খাবার, ওষুধ, স্যালাইন, টিস্যু, স্যানিটারি ন্যাপকিন, ডায়াপার, মোমবাতি, দেয়াশলাই, পানিসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী। সব মিলিয়ে দুর্যোগ ঘিরে একতাবদ্ধ যেন বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় শ্রেণীর শিশু মিমের ব্যাংকটি, তার মধ্যে আছে তিন বছর ধরে জমানো সাইকেল কেনার টাকা। কিন্তু বন্যাপীড়িত মানুষের জন্য ছোট্ট শিশুটি নিজের শখ উৎসর্গ করে পুরো ব্যাংকটি-ই তুলে দিলেন ত্রাণ সংগ্রহ করা কর্মীদের কাছে। শিশু মিম বলেন, ‘স্কুলের টিউশনির টাকা দিয়ে আমি ব্যাংকে জমিয়েছি সাইকেল কেনার জন্য। এখন আমার পুরা ব্যাংকটাই দিয়ে দিচ্ছি।’

বন্যাদুর্গত জেলাগুলোর জন্য ত্রাণ সংগ্রহ করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ক্যাম্পে দেখা যায় শিশু, নারী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষের সম্মিলন। দুর্যোগের দিনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিপদ কাটিয়ে ওঠার এ এক অভূতপূর্ব প্রচেষ্টা।

ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ হারবে না

আজ শুক্রবার (২৩শে আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর পক্ষে বিজিবি সদর দপ্তরের পরিচালক লে. কর্নেল মীর মনোনয়ার আলী ছাত্র সমন্বয়কদের কাছে ৫০০টি পরিবারের মাঝে বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী হস্তান্তর হস্তান্তর করেন।

এ সময় তিনি বলেন, বিজিবি মহাপরিচালক ছাত্র সমন্বয়কদের এ মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও এধরনের মহৎ কাজে ছাত্রদের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

উল্লেখ্য, বিজিবির বিভিন্ন রিজিয়ন, সেক্টর ও ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের বন্যাদুর্গত এলাকার অসহায় মানুষদের উদ্ধার কার্যক্রম, ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ এবং বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে।

স্নিগ্ধা নামের এক শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবক এই কার্যক্রমের অংশ হয়ে উচ্ছ্বসিত। তার ভাষায়, ‘এই ত্রাণ সংগ্রহের কার্যক্রমে অংশ নিয়ে মনে হচ্ছে আমি আমার দেশের জন্য কিছু করতে পারছি। শুধু আমি নই, যারাই আসছেন খুবই আগ্রহ নিয়ে কাজ করছেন। সবাই দেশের জন্য এক হয়ে কাজ করছে। আসলে এই পরিস্থিতিতে ঘরে বসে থাকা সম্ভব না। এখন এক হয়ে দেশের জন্য করার সময়। সবাই ত্রাণ নিয়ে হাজির হচ্ছে। এমন দৃশ্য অবাক করার মতো।’

আরেক সেচ্ছাসেবক বলেছেন, ‘কেউ জামা কাপড় দিচ্ছে, কেউ বাচ্চাদের ডায়াপার দিচ্ছে, মেয়েদের জন্য স্যানেটারি ন্যাপকিন দিচ্ছে। সবাই এতকিছু নিয়ে আসছে, এতটা আমরা আসলে আশা করিনি। এখন পানি-চিনি-গুড় ও লাইফ জ্যাকেট দিয়ে সহায়তা করতে পারেন। তাহলে আমরা সারভাইভ করতে পারব।’

এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, সাধারণ মানুষ বন্যার্তদের সাহায্যে এভাবে এগিয়ে আসবে তা কল্পনাতীত ছিল। আমরা ভাবতেও পারিনি এত পরিমাণ ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ত্রাণ আসবে। মানুষ যতটা পারছে সাহায্য করছে। দ্রুতই ত্রাণ সামগ্রী বন্যার্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।

ত্রাণ পৌঁছে দিতে আসা একজন নারী বলেন, আমি আজীমপুর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই গণত্রাণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে এসেছি। নিজের যতটুকু সামর্থ্য সে অনুযায়ী আমি সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। দেশের সকল স্তরের মানুষ এগিয়ে এসেছে। অসহায় মানুষের পাশে এভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে দেখে অনেক ভালো লাগছে। এই শিক্ষার্থীরাই সামনের দিনে সুন্দর দেশ গড়বে বলে আমি মনে করি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সরাসরি উপস্থিত হয়ে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী দেওয়া যাবে। অনলাইনে বিকাশ, নগদ, রকেট ও ব্যাং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নিম্নোক্ত নম্বরগুলোতে অর্থ সহায়তা পাঠানো যাবে।

মোবাইল ব্যাংকিং : বিকাশ ও নগদ : 01886969859, রকেট : 018869698597 মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বর দুটি মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট। তাই টাকা পাঠানোর সময় অবশ্যই পেমেন্ট করতে হবে।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট :
Mohammad Anisur Rahman
Account : 20503100200291004
Badda Branch, Dhaka
Islami Bank Bangladesh
Swift code: IBBLBDDH
Routing Number: 125260341

ইতোমধ্যেই বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ বোঝাই বেশ কিছু ট্রাক ও ২০টি বোট পাঠিয়েছে সংগঠনটি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে অনেকেই মুঠোফোনে অর্থ সংগ্রহ করছেন, সেসব ব্যাপারে সতর্ক থেকে সঠিক নম্বরে অর্থ সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

এদিকে, সাধারণ মানুষকে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে উৎসাহ প্রদানের অংশ হিসেবে শুক্রবার সন্ধ্যায় টিএসসিতে কনসার্টের আয়োজন করে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। কনসার্টে গান পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যান্ডের শিল্পীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ হারবে না

আপডেট সময় : ১১:১৯:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আসছেন নানান শ্রেণি-পেশার মানুষ। আজ শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত টিএসসি এলাকায় দেখা যায়, সব শ্রেণীর মানুষ ট্রাক, পিকআপ, ভ্যান, রিকশা, প্রাইভেটকার ভর্তি করে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আসছেন।

ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পানি থৈ থৈ। পানির তোড়ে ভেসে গেছে বাড়িঘর। আশ্রয়কেন্দ্রে এখনও অনেকে পৌঁছাতে পারেনি। যারা পৌঁছেছেন, তারা এখনও খাবার, পানি, ওষুধ, পোশাকের সমস্যায় ভুগছেন। তাদের মানবেতর জীবনের সঙ্গী কোথাও কোথাও গবাদি পশুরাও। তাদের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছেন মানুষ।

ত্রাণসামগ্রীতে টিএসসি ক্যাফেটেরিয়া, গেমসরুম ভর্তি হয়ে যাওয়ায় সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামসহ টিএসসির বারান্দায় রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি নগদ টাকাও উঠছে। ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে আসা গাড়ির লম্বা লাইন লেগে গেছে টিএসসি এলাকায়। ত্রাণ সামগ্রী প্যাকেজিংয়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে স্কুল-কলেজের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী কাজ করছেন। নগদ অর্থ থেকে শুরু করে শুকনো খাবার, ওষুধ, কাপড় দিয়ে সহায়তা করছেন অনেকে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলছেন, যতদিন বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হচ্ছে ততদিন এ কার্যক্রম চলবে। টিএসসি গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি থেকে দ্বিতীয় দিনে অনলাইন ও অফলাইনে সর্বমোট ১ কোটি ২৬ লাখ ২২ হাজার ১৭২ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার যার পরিমাণ ছিল ২৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। এ ছাড়া আজ বিপুল পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী সহায়তা পাওয়া যায়। আগামীকালও (শনিবার) সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত গণত্রাণ কর্মসূচি চলমান থাকবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লূৎফর রহমান তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লূৎফর রহমান বলেন, টিএসসিতে আজকের টোটাল কালেকশন ১ কোটি ২৬ লাখ ২২ হাজার ১৭২ টাকা। ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ হারবে না।

১০ বছর বয়সী ইহানও ছোট্ট ব্যাংক নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে এসেছিল টাকা জমা দিতে। বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ সহায়তা নিয়ে এসেছিলেন দিনমজুর-রিকশাচালকও। আর বিভিন্ন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, নানা বয়সী কর্মজীবী, শিক্ষার্থীরা তো আছেনই। তারা সবাই শুধু টাকা নয়, বস্তায় বস্তায় জমা দেন শুকনো খাবার, ওষুধ, স্যালাইন, টিস্যু, স্যানিটারি ন্যাপকিন, ডায়াপার, মোমবাতি, দেয়াশলাই, পানিসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী। সব মিলিয়ে দুর্যোগ ঘিরে একতাবদ্ধ যেন বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় শ্রেণীর শিশু মিমের ব্যাংকটি, তার মধ্যে আছে তিন বছর ধরে জমানো সাইকেল কেনার টাকা। কিন্তু বন্যাপীড়িত মানুষের জন্য ছোট্ট শিশুটি নিজের শখ উৎসর্গ করে পুরো ব্যাংকটি-ই তুলে দিলেন ত্রাণ সংগ্রহ করা কর্মীদের কাছে। শিশু মিম বলেন, ‘স্কুলের টিউশনির টাকা দিয়ে আমি ব্যাংকে জমিয়েছি সাইকেল কেনার জন্য। এখন আমার পুরা ব্যাংকটাই দিয়ে দিচ্ছি।’

বন্যাদুর্গত জেলাগুলোর জন্য ত্রাণ সংগ্রহ করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ক্যাম্পে দেখা যায় শিশু, নারী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষের সম্মিলন। দুর্যোগের দিনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিপদ কাটিয়ে ওঠার এ এক অভূতপূর্ব প্রচেষ্টা।

ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ হারবে না

আজ শুক্রবার (২৩শে আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর পক্ষে বিজিবি সদর দপ্তরের পরিচালক লে. কর্নেল মীর মনোনয়ার আলী ছাত্র সমন্বয়কদের কাছে ৫০০টি পরিবারের মাঝে বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী হস্তান্তর হস্তান্তর করেন।

এ সময় তিনি বলেন, বিজিবি মহাপরিচালক ছাত্র সমন্বয়কদের এ মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও এধরনের মহৎ কাজে ছাত্রদের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

উল্লেখ্য, বিজিবির বিভিন্ন রিজিয়ন, সেক্টর ও ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের বন্যাদুর্গত এলাকার অসহায় মানুষদের উদ্ধার কার্যক্রম, ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ এবং বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে।

স্নিগ্ধা নামের এক শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবক এই কার্যক্রমের অংশ হয়ে উচ্ছ্বসিত। তার ভাষায়, ‘এই ত্রাণ সংগ্রহের কার্যক্রমে অংশ নিয়ে মনে হচ্ছে আমি আমার দেশের জন্য কিছু করতে পারছি। শুধু আমি নই, যারাই আসছেন খুবই আগ্রহ নিয়ে কাজ করছেন। সবাই দেশের জন্য এক হয়ে কাজ করছে। আসলে এই পরিস্থিতিতে ঘরে বসে থাকা সম্ভব না। এখন এক হয়ে দেশের জন্য করার সময়। সবাই ত্রাণ নিয়ে হাজির হচ্ছে। এমন দৃশ্য অবাক করার মতো।’

আরেক সেচ্ছাসেবক বলেছেন, ‘কেউ জামা কাপড় দিচ্ছে, কেউ বাচ্চাদের ডায়াপার দিচ্ছে, মেয়েদের জন্য স্যানেটারি ন্যাপকিন দিচ্ছে। সবাই এতকিছু নিয়ে আসছে, এতটা আমরা আসলে আশা করিনি। এখন পানি-চিনি-গুড় ও লাইফ জ্যাকেট দিয়ে সহায়তা করতে পারেন। তাহলে আমরা সারভাইভ করতে পারব।’

এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, সাধারণ মানুষ বন্যার্তদের সাহায্যে এভাবে এগিয়ে আসবে তা কল্পনাতীত ছিল। আমরা ভাবতেও পারিনি এত পরিমাণ ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ত্রাণ আসবে। মানুষ যতটা পারছে সাহায্য করছে। দ্রুতই ত্রাণ সামগ্রী বন্যার্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।

ত্রাণ পৌঁছে দিতে আসা একজন নারী বলেন, আমি আজীমপুর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই গণত্রাণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে এসেছি। নিজের যতটুকু সামর্থ্য সে অনুযায়ী আমি সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। দেশের সকল স্তরের মানুষ এগিয়ে এসেছে। অসহায় মানুষের পাশে এভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে দেখে অনেক ভালো লাগছে। এই শিক্ষার্থীরাই সামনের দিনে সুন্দর দেশ গড়বে বলে আমি মনে করি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সরাসরি উপস্থিত হয়ে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী দেওয়া যাবে। অনলাইনে বিকাশ, নগদ, রকেট ও ব্যাং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নিম্নোক্ত নম্বরগুলোতে অর্থ সহায়তা পাঠানো যাবে।

মোবাইল ব্যাংকিং : বিকাশ ও নগদ : 01886969859, রকেট : 018869698597 মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বর দুটি মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট। তাই টাকা পাঠানোর সময় অবশ্যই পেমেন্ট করতে হবে।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট :
Mohammad Anisur Rahman
Account : 20503100200291004
Badda Branch, Dhaka
Islami Bank Bangladesh
Swift code: IBBLBDDH
Routing Number: 125260341

ইতোমধ্যেই বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ বোঝাই বেশ কিছু ট্রাক ও ২০টি বোট পাঠিয়েছে সংগঠনটি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে অনেকেই মুঠোফোনে অর্থ সংগ্রহ করছেন, সেসব ব্যাপারে সতর্ক থেকে সঠিক নম্বরে অর্থ সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

এদিকে, সাধারণ মানুষকে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে উৎসাহ প্রদানের অংশ হিসেবে শুক্রবার সন্ধ্যায় টিএসসিতে কনসার্টের আয়োজন করে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। কনসার্টে গান পরিবেশন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যান্ডের শিল্পীরা।