ঢাকা ১০:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত: বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু করেছে দুতাবাস। ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের + ৯৮৯908577368 ও + ৯৮৯১22065745 নম্বরে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) যোগাযোগ করতে বলেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

না জানিয়ে ডম্বুর বাঁধ খুলেছে ভারত, বিবেচনায় নেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:২০:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৪২১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

১৯৮৮ সালের পর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখছে দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের মানুষ। অতিভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পানিতে ভাসছে গ্রামের পর গ্রাম। অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশকে না জানিয়ে ত্রিপুরার ডম্বুর বাঁধ খুলে দিয়েছে ভারত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিবেচনায় রাখা দরকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়টি। সংকটাপন্ন এই অবস্থার জন্য তথ্যের অপ্রতুলতাও দায়ী। বন্যার ক্ষতি কমাতে বাংলাদেশকে জনসম্পৃক্তমূলক বাধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষেণের পরামর্শ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. গওহার নাইম ওয়ারার।

অনেকটা আকস্মিকই ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের অন্তত আট জেলা। বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ভাসছে গ্রামের পর গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে আছে ৩৫ লাখ মানুষ।

কিন্তু হঠাৎ করেই কেন এমন ভয়াবহ বন্যা দেখছে এই অঞ্চলের মানুষ? গত কয়েকদিন ধরে ভারতের ত্রিপুরায় ব্যাপক বৃষ্টিপাতে জলাধারের পানি বৃদ্ধি পায়। এরপরই বাধের স্লুইস গেট খুলে দেয় ভারত। এর আগে, ১৯৯৩ সালে একবার খুলে দেয়া হয়েছে ভারতের ত্রিপুরার ডম্বুর জলাধারের বাধ। তবে, ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাধের গেট খুলে দেয়া হয়নি, অতি বৃষ্টিতে এমন অবস্থা। অবশ্য ভারতের কিছু গণমাধ্যমেই ডম্বুর গেট খোলার খবর এসেছে।

ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী এবং ছাগলনাইয়া উপজেলায় ১৯৮৮ সালের পর বন্যা পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হয়নি। ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পানিতে ফেনীর মুহুরি, কহুয়া ও বিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই অবস্থা বিরাজ করছে কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলেও।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ গওহার নঈম ওয়ারা মনে করেন, শুধু অতিভারি বৃষ্টিপাতের জন্য নয়, বরং বাংলাদেশকে না জানিয়ে ভারত এই বাধ খুলে দেয়ায় এতো মানুষের জীবন এখন সংকটাপন্ন। এক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখা হয়নি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়টি।

গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, ‘এটা তারা বাধ্য হয়ে ছেড়েছে। তবে, যেটা করা উচিত ছিল, সেটা হলো আমাদের জানানো উচিত ছিল। তারা বলতে পারতো যে এরকম বৃষ্টি হচ্ছে, আমরা যদি মনে তাহলে আমরা বাধ খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারি, সেটা খুলে তোমাদের এতক্ষণ আগে তোমাদের জানাবো। কিন্তু তোমরা রেডি থাকো। এইটা আমাদের একটা চুক্তির মাধ্যমে হওয়া উচিত বা করা উচিত। চুক্তি না থাকলেও নদীর ডাউনস্ট্রিটে যারা আছে তাদের জানানো এটা নৈতিক দায়িত্ব। তবে, এটা তার করেনি। যা খুবই খারাপ হয়েছে।’

বন্যায় এমন সংকটাপন্ন অবস্থার জন্য তথ্যের অপ্রতুলতাই প্রধানত দায়ী। বৃষ্টি, বন্যার পূর্বাভাসের ত্রুটি নিয়েও কথা বলেছেন এই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ।

গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, ‘হয়তো ফেনির লোক বিশ্বাস করতো না, বলতো এখানে তো কোনো সময় বন্যা হয় না। অনেকের জীবন ১৯৬৭ সালের আগে শুরুই হয়নি। সে তো দেখেনি এটা, তাকে বিশ্বাস করানো কঠিন ছিল। কিন্তু আমাদের হিসাব রাখা উচিত, উজানে যে জলাধারগুলো আছে সেগুলো যদি ছেড়ে দেয় তাহলে পানি কোন দিক দিয়ে আসবে। সে এলাকাগুলোকে আমার মুক্ত রাখা উচিত ছিল বাড়িঘর না করে।’

বন্যার ক্ষতি কমাতে এতদিনেও বাংলাদেশ নিজের জন্য জনসম্পৃক্তমূলক বাধ নির্মাণ করতে পারেনি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এই বিষয়ে দ্রুত পরিকল্পনা নেয়ার আহ্বান তাদের।

নিউজটি শেয়ার করুন

না জানিয়ে ডম্বুর বাঁধ খুলেছে ভারত, বিবেচনায় নেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক

আপডেট সময় : ০৪:২০:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪

১৯৮৮ সালের পর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখছে দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের মানুষ। অতিভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পানিতে ভাসছে গ্রামের পর গ্রাম। অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশকে না জানিয়ে ত্রিপুরার ডম্বুর বাঁধ খুলে দিয়েছে ভারত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিবেচনায় রাখা দরকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়টি। সংকটাপন্ন এই অবস্থার জন্য তথ্যের অপ্রতুলতাও দায়ী। বন্যার ক্ষতি কমাতে বাংলাদেশকে জনসম্পৃক্তমূলক বাধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষেণের পরামর্শ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. গওহার নাইম ওয়ারার।

অনেকটা আকস্মিকই ভয়াবহ বন্যার কবলে দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের অন্তত আট জেলা। বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ভাসছে গ্রামের পর গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে আছে ৩৫ লাখ মানুষ।

কিন্তু হঠাৎ করেই কেন এমন ভয়াবহ বন্যা দেখছে এই অঞ্চলের মানুষ? গত কয়েকদিন ধরে ভারতের ত্রিপুরায় ব্যাপক বৃষ্টিপাতে জলাধারের পানি বৃদ্ধি পায়। এরপরই বাধের স্লুইস গেট খুলে দেয় ভারত। এর আগে, ১৯৯৩ সালে একবার খুলে দেয়া হয়েছে ভারতের ত্রিপুরার ডম্বুর জলাধারের বাধ। তবে, ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাধের গেট খুলে দেয়া হয়নি, অতি বৃষ্টিতে এমন অবস্থা। অবশ্য ভারতের কিছু গণমাধ্যমেই ডম্বুর গেট খোলার খবর এসেছে।

ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী এবং ছাগলনাইয়া উপজেলায় ১৯৮৮ সালের পর বন্যা পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হয়নি। ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পানিতে ফেনীর মুহুরি, কহুয়া ও বিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই অবস্থা বিরাজ করছে কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলেও।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ গওহার নঈম ওয়ারা মনে করেন, শুধু অতিভারি বৃষ্টিপাতের জন্য নয়, বরং বাংলাদেশকে না জানিয়ে ভারত এই বাধ খুলে দেয়ায় এতো মানুষের জীবন এখন সংকটাপন্ন। এক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখা হয়নি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়টি।

গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, ‘এটা তারা বাধ্য হয়ে ছেড়েছে। তবে, যেটা করা উচিত ছিল, সেটা হলো আমাদের জানানো উচিত ছিল। তারা বলতে পারতো যে এরকম বৃষ্টি হচ্ছে, আমরা যদি মনে তাহলে আমরা বাধ খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারি, সেটা খুলে তোমাদের এতক্ষণ আগে তোমাদের জানাবো। কিন্তু তোমরা রেডি থাকো। এইটা আমাদের একটা চুক্তির মাধ্যমে হওয়া উচিত বা করা উচিত। চুক্তি না থাকলেও নদীর ডাউনস্ট্রিটে যারা আছে তাদের জানানো এটা নৈতিক দায়িত্ব। তবে, এটা তার করেনি। যা খুবই খারাপ হয়েছে।’

বন্যায় এমন সংকটাপন্ন অবস্থার জন্য তথ্যের অপ্রতুলতাই প্রধানত দায়ী। বৃষ্টি, বন্যার পূর্বাভাসের ত্রুটি নিয়েও কথা বলেছেন এই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ।

গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, ‘হয়তো ফেনির লোক বিশ্বাস করতো না, বলতো এখানে তো কোনো সময় বন্যা হয় না। অনেকের জীবন ১৯৬৭ সালের আগে শুরুই হয়নি। সে তো দেখেনি এটা, তাকে বিশ্বাস করানো কঠিন ছিল। কিন্তু আমাদের হিসাব রাখা উচিত, উজানে যে জলাধারগুলো আছে সেগুলো যদি ছেড়ে দেয় তাহলে পানি কোন দিক দিয়ে আসবে। সে এলাকাগুলোকে আমার মুক্ত রাখা উচিত ছিল বাড়িঘর না করে।’

বন্যার ক্ষতি কমাতে এতদিনেও বাংলাদেশ নিজের জন্য জনসম্পৃক্তমূলক বাধ নির্মাণ করতে পারেনি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এই বিষয়ে দ্রুত পরিকল্পনা নেয়ার আহ্বান তাদের।