বাংলাদেশের ফেনী-কুমিল্লা অংশে বন্যার জন্য ভারতকে দায়ী করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এসময় দেশের বন্যাদুর্গত মানুষের সহায়তায় রাজনৈতিক বা ধর্মীয় পরিচয় না দেখারও আহ্বান জানান তিনি। শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, আপনারা সমন্বিতভাবে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ান। তাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিন। বন্যাকবলিত অঞ্চলের মানুষের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও ওষুধের সহায়তা দিন এবং ব্যবস্থা নিন।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তারেক বলেন, ‘আপনাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানাব যে, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার দেশে মানুষে মানুষে হিংসা-বিদ্বেষ-বিভেদ তৈরি করেছিল। কিন্তু আপনাদের প্রতি একান্ত অনুরোধ, মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে আপনারা দয়া করে কারো রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিচয়কে প্রাধান্য দেবেন না। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত ও দলীয় উদ্যোগের পাশাপাশি বন্যার্তদের সহায়তার জন্য সরকার ও প্রশাসন আপনাদের কাছে কোনো সহযোগিতা চাইলে দয়া করে সাধ্যমতো সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিন।’
দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘দলমত নির্বিশেষে আমরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াই, যার যার সাধ্যমতো বিপদগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসি আল্লাহর রহমতে অবশ্যই এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সক্ষম হব।’
তারেক রহমান বলেন, আকস্মিক বন্যায় দেশের উত্তরপূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পূর্বাঞ্চলে জেলার পর জেলা প্লাবিত হওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। জীবন ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকজনের জীবন গেছে। ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
বাংলাদেশের এই আকস্মিক বন্যার জন্য ভারতকে দায়ী করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের এই বন্যা দেশের অভ্যন্তরে কোন কারণে নয়। বন্যাকবলিত অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হলেও সেটি পূর্বাঞ্চলের বন্যার মূল কারণ নয়। বরং এবারের বন্যার মূল কারণ উজানের দেশ প্রতিবেশী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা ও খামখেয়ালিপনা। হঠাৎ করে বাঁধ খুলে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবিয়ে দিলেও একটি বারের জন্যও বাংলাদেশকে আগাম কোনো সতর্কতা দেয়নি তারা। ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা ভাসিয়ে নিলেও বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সামন্যটুকু প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগও পর্যন্ত পায়নি।’
বন্যাকবলিত এলাকায় সহায়সম্বল হারিয়ে লাখ লাখ মানুষ এখন নিদারুণ অসহায় বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। বলেন, এমন পরিস্থিতিতে কোনো অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের সময় নেই। বিএনপি বিশ্বাস করে—বন্যাকবলিত মানুষের জীবন, সম্পদ রক্ষা করাই এই মুহূর্তে প্রধান অগ্রাধিকার।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘দেশের বন্যা পরিস্থিতিতে আমি সারা-দেশে, বিশেষ করে যেসব এলাকা এখনও আক্রান্ত হয়নি, সেসব এলাকার বিএনপি ও এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, আপনারা সমন্বিতভাবে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ান। সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিন।