লেবাননে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই হামলার মাধ্যমে লেবাননভিত্তিক মিলিশিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহর হাজারো রকেট লাঞ্চার ধ্বংস করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। তবে হিজবুল্লাহ জোর দিয়ে বলেছে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একঝাঁক ড্রোন ও রকেট ছুঁড়েছে তারা। খবর এএফপির।
গত ১০ মাস ধরে গাজা উপত্যকায় চলতে থাকা ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা ও গোলা বিনিময়ের ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। এই হামলা ও পাল্টা হামলার কারণে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে নতুন করে সহিংসতা ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি গোটা মধ্যপ্রাচ্য আবারও ব্যাপকভাবে উত্তপ্ত হয়ে পড়ার ভয়ে ভীত হয়ে পড়ছেন অনেকেই।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এই হামলায় দেশটির শ’খানেক যুদ্ধবিমান অংশ নেয় এবং ২৭০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। হামলায় ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের দিকে তাক করে রাখা স্বল্পপাল্লার রকেটের ৯০ ভাগই ধ্বংস করে দেওয়ার দাবি জানায় তারা।
তবে ইরান সমর্থিত লেবাননভিত্তিক শক্তিশালী সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তাদের হামলা প্রতিহত করা হয়েছে বা তাদের হাজারো রকেট লাঞ্চার ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে–এমন খবরকে অস্বীকার করেছে। সংগঠনটি বলেছে তাদের ‘অপারেশন’ শেষ হয়েছে এবং তা সফলও হয়েছে। এই হামলায় সংগঠনটি বিপুল সংখ্যক ড্রোন ও ৩২০টির বেশি কাতিউসা রকেটের মাধ্যমে শত্রুর লক্ষ্যবস্তুতে আঘাতের কথা উল্লেখ করেছে।
এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার মন্ত্রিসভাকে বলেছেন, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে চলতে থাকা অভিযানে এই হামলা ‘শেষ কথা’ নয়।
এই যুদ্ধের সময় ইসরায়েলি নৌবাহিনীর একজন সদস্য নিহত ও আরও দুজন আহত হয়েছে। সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ইন্টারসেপ্টর ওই নৌসেনাদের জলযানটিকে আঘাত করে থাকতে পারে।
গাজা যুদ্ধ যতদিন ধরে চলছে সেই পুরো সময়টা জুড়েই হিজবুল্লাহ লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বলছে তাদের ফিলিস্তিনি মিত্র হামাসকে যুদ্ধে সমর্থন দিতেই তারা এসব হামলা চালাচ্ছে।
তবে জুলাইয়ের শেষ দিকে হামাসের রাজনৈতিক প্রধানসহ ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শুকুরকে হত্যার পর ইসারয়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের প্রত্যয় ঘোষণা করেছে সংগঠনটি।
এদিকে, যুদ্ধকে উসকে না দিতে ও গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে গতকাল রোববারও (২৫ আগস্ট) সবপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য ও জর্ডান। জর্ডানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ‘কার্যকর ও প্রতিরোধমূলক’ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।