ঢাকা ১০:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেয়ায় বিপাকে স্থানীয় ভারতীয়রা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:১৯:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৩৬৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তিস্তার তাণ্ডবে প্রতিনিয়ত আশ্রয়হীন হয়ে পড়ছেন নদী তীরবর্তী মানুষ। ফলে, চরমে পৌঁছেছে ভোগান্তি।

পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার মহকুমার বাগরাকোট গ্রামের টোটগাঁও বস্তি। একসময় তিস্তার চরে কৃষিকাজ ও পশুপালন করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন এখানকার বেশিরভাগ গ্রামবাসী। কিন্তু গেল বছর সিকিমে তিস্তা যে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিল, তার প্রভাব পড়ে এই গ্রামেও। এরপর থেকেই লাগামহীনভাবে তিস্তার আগ্রাসী রূপের শিকার হয় গোটা গ্রাম। দেখা দেয় ভয়াবহ ভাঙন। দিনদিন আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন গ্রামের অসহায় বাসিন্দারা।

তিস্তার তাণ্ডবে এরইমধ্যে পানিতে বিলীন হয়ে গেছে ৭০ থেকে ৮০টি ঘরবাড়ি। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে কৃষি জমি, রাস্তাঘাট, মন্দির থেকে শুরু করে বহু স্থাপনা। এখনও থামে না ধ্বংসলীলা। প্রতি মুহূর্তে নদী তার সীমানা বাড়িয়ে চলেছে। ফলে চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন টোটগাঁও এর বাসিন্দারা।

গ্রামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা সরকারের তরফ থেকে পাঠানো ত্রাণের খাবার পাইনি। এই কষ্টের কথা তাদের জানানোর পর আমাদের চাল-ডাল দিয়েছে। এখন, রান্না করে খাওয়ার ব্যবস্থা করবো।’

গ্রামবাসীর অভিযোগ, তিস্তার ভাঙনে বহু পরিবার আজ আশ্রয়হীন হলেও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। আর তাই অবিলম্বে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা করার দাবি তাদের।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘পানি বেড়ে গেছে। আমরা বাড়ি থেকে সব মালামাল সড়িয়ে নিয়েছি। এখন যদি বাড়িঘর ভেঙ্গে যায় আমরা কী করবো?’

এদিকে, গেল কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে এখনও অব্যাহত রয়েছে নদী ভাঙন। ইতোমধ্যেই ডিভিসি, ফারাক্কা সবাই জল ছাড়া শুরু করেছে। যার জেরে দেখা দিয়েছে প্লাবনের আশঙ্কা। এতে, আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরবর্তী মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।

ফরাক্কা বাঁধ প্রকল্প সূত্রের খবর, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে একটানা ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেই ফরাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এ কারণেই পানির চাপ বাড়ায় বাঁধ বাঁচাতে বাধ্য হয়েই খুলে দেয়া হয়েছে ফারাক্কা ব্যারেজের সবগুলো গেট। পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে নতুন করে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে বহু এলাকা।

গেল ১৫ দিন ধরে গঙ্গার পানির স্তর বাড়তে থাকায় সমশেরগঞ্জ এবং প্রতাপগঞ্জ পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে নতুন করে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে নদীগর্ভে চলে গেছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। ফলে, সর্বস্ব হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। এ অবস্থায় কবে নাগাদ এ সমস্যার সমাধান হবে সেদিকেই তাকিয়ে বানভাসি এবং নদী তীরবর্তী এলাকার অসহায় মানুষ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেয়ায় বিপাকে স্থানীয় ভারতীয়রা

আপডেট সময় : ০১:১৯:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তিস্তার তাণ্ডবে প্রতিনিয়ত আশ্রয়হীন হয়ে পড়ছেন নদী তীরবর্তী মানুষ। ফলে, চরমে পৌঁছেছে ভোগান্তি।

পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার মহকুমার বাগরাকোট গ্রামের টোটগাঁও বস্তি। একসময় তিস্তার চরে কৃষিকাজ ও পশুপালন করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন এখানকার বেশিরভাগ গ্রামবাসী। কিন্তু গেল বছর সিকিমে তিস্তা যে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিল, তার প্রভাব পড়ে এই গ্রামেও। এরপর থেকেই লাগামহীনভাবে তিস্তার আগ্রাসী রূপের শিকার হয় গোটা গ্রাম। দেখা দেয় ভয়াবহ ভাঙন। দিনদিন আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন গ্রামের অসহায় বাসিন্দারা।

তিস্তার তাণ্ডবে এরইমধ্যে পানিতে বিলীন হয়ে গেছে ৭০ থেকে ৮০টি ঘরবাড়ি। নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে কৃষি জমি, রাস্তাঘাট, মন্দির থেকে শুরু করে বহু স্থাপনা। এখনও থামে না ধ্বংসলীলা। প্রতি মুহূর্তে নদী তার সীমানা বাড়িয়ে চলেছে। ফলে চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন টোটগাঁও এর বাসিন্দারা।

গ্রামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা সরকারের তরফ থেকে পাঠানো ত্রাণের খাবার পাইনি। এই কষ্টের কথা তাদের জানানোর পর আমাদের চাল-ডাল দিয়েছে। এখন, রান্না করে খাওয়ার ব্যবস্থা করবো।’

গ্রামবাসীর অভিযোগ, তিস্তার ভাঙনে বহু পরিবার আজ আশ্রয়হীন হলেও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। আর তাই অবিলম্বে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা করার দাবি তাদের।

স্থানীয় একজন বলেন, ‘পানি বেড়ে গেছে। আমরা বাড়ি থেকে সব মালামাল সড়িয়ে নিয়েছি। এখন যদি বাড়িঘর ভেঙ্গে যায় আমরা কী করবো?’

এদিকে, গেল কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে এখনও অব্যাহত রয়েছে নদী ভাঙন। ইতোমধ্যেই ডিভিসি, ফারাক্কা সবাই জল ছাড়া শুরু করেছে। যার জেরে দেখা দিয়েছে প্লাবনের আশঙ্কা। এতে, আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরবর্তী মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।

ফরাক্কা বাঁধ প্রকল্প সূত্রের খবর, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে একটানা ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেই ফরাক্কা বাঁধ প্রকল্পের পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এ কারণেই পানির চাপ বাড়ায় বাঁধ বাঁচাতে বাধ্য হয়েই খুলে দেয়া হয়েছে ফারাক্কা ব্যারেজের সবগুলো গেট। পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে নতুন করে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে বহু এলাকা।

গেল ১৫ দিন ধরে গঙ্গার পানির স্তর বাড়তে থাকায় সমশেরগঞ্জ এবং প্রতাপগঞ্জ পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে নতুন করে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে নদীগর্ভে চলে গেছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। ফলে, সর্বস্ব হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। এ অবস্থায় কবে নাগাদ এ সমস্যার সমাধান হবে সেদিকেই তাকিয়ে বানভাসি এবং নদী তীরবর্তী এলাকার অসহায় মানুষ।