ঢাকা ০৮:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নেতানিয়াহু প্রশাসন বিরোধী আন্দোলন চরমে

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:০৭:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৫৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাজায় সবশেষ ছয় জিম্মি নিহতের খবরে তেলআবিব থেকে ইসরাইলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। ধরপাকড় চালিয়েও আন্দোলনকারীদের দমাতে পাড়ছে না পুলিশ। বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু প্রশাসন বিরোধী আন্দোলন চরম পর্যায় পৌঁছানোয় তেলআবিবের বিমানবন্দর দুই ঘণ্টা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে হামাসকে দায়ী করে ইসরাইলি জনগণকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। এদিকে গাজার পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরেও অভিযান জোরালো করেছে ইসরাইলি বাহিনী।

হামাসের হাতে বাকি জিম্মিদের রেখে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসী হামলার বিরুদ্ধে ইসরাইলে ক্রমেই বাড়ছে উত্তেজনার পারদ। রাফাহ শহরের টানেল থেকে এক মার্কিনসহ ছয় জিম্মির মরদেহ উদ্ধারের পর গতকাল (রোববার, ১ সেপ্টেম্বর) থেকে আরও বেশি চড়াও হচ্ছেন বিক্ষুব্ধ ইসরাইলিরা।

যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় নেতানিয়াহু প্রশাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামছেন লাখ লাখ আন্দোলনকারী। আজ (সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর) একদিনের ধর্মঘটও পালন করছেন শ্রমিক নেতারা। ধরপাকড় চালিয়েও তাদের দমাতে পারছে না পুলিশ। সব মিলিয়ে বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে তেলআবিবসহ পুরো দেশ। নড়বড়ে হয়ে উঠছে নেতানিয়াহুর মসনদ।

একজন আন্দোলনকারী বলেন, ‘ইসরাইলি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। কারণ যুদ্ধবিরতি চুক্তি না করে সরকার ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তাই আমরা আমাদের দেশের অস্তিত্ব রক্ষা এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে বিক্ষোভ করছি।’

অন্য একজন আন্দোলনকারী বলেন, ‘আমি মনে করি একটি অপরাধী সরকার আমাদের শাসন করছে। যারা শুধু নিজেদের স্বার্থে জিম্মিদের খুন হতে দিচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশের ভালো চাইছেন না। তিনি শুধু নিজের ভালোর কথা ভাবেন।’

এ অবস্থায় প্রায় ১১ মাসের যুদ্ধের অবসান এবং জিম্মিদের মুক্তিতে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে দাবি করে ইসরাইলি জনগণকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। একইসঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে হামাস দায়ী বলে অভিযোগ তুলেছেন ইসরাইলের সরকারপ্রধান। আর হামাসের অভিযোগ, কাতারে হওয়া আলোচনায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে রাজি হয়নি ইসরাইল। তাই জিম্মিদের মৃত্যুর দায় নেতানিয়াহুরই। ইসরাইলিদের হয় নেতানিয়াহু নয়তো যুদ্ধবিরতি চুক্তি- যেকোনো একটিকে বেছে নেয়া উচিত বলে জানিয়েছে গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা নৃশংস শত্রুদের বিরুদ্ধে সব ফ্রন্টে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। যারা আমাদের সবাইকে হত্যা করতে চায়। আমাদের জিম্মিদের মুক্তির জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। তবে, হামাস যুদ্ধবিরতি চায় না। তাই আমি ইসরাইলি নাগরিকদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এদিকে গাজার ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুর পোলিও টিকা নিশ্চিতে রোববার থেকে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা লড়াই থেকে বিরত থাকতে সম্মত হয়েছে হামাস-ইসরাইল। এর আওতায় প্রথম দিনে অন্তত ৭২ হাজার ৬১১ শিশুকে টিকা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

গাজায় চলমান আগ্রাসনের মধ্যে অধিকৃত পশ্চিম তীরেও দখলদারিত্ব অভিযান জোরালো করছে ইসরাইলি বাহিনী। প্রাণ যাচ্ছে বহু ফিলিস্তিনির। ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে জেনিন শহর থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন অসংখ্য ফিলিস্তিনি। এরমধ্যেই পশ্চিম তীরের হেবরনের এক তল্লাশি চৌকিতে বন্দুক হামলায় অন্তত তিন ইসরাইলি পুলিশ নিহত হওয়ার পর অঞ্চলটিতে আরও কঠোর পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে ইসরাইল।

নিউজটি শেয়ার করুন

নেতানিয়াহু প্রশাসন বিরোধী আন্দোলন চরমে

আপডেট সময় : ০২:০৭:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাজায় সবশেষ ছয় জিম্মি নিহতের খবরে তেলআবিব থেকে ইসরাইলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। ধরপাকড় চালিয়েও আন্দোলনকারীদের দমাতে পাড়ছে না পুলিশ। বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু প্রশাসন বিরোধী আন্দোলন চরম পর্যায় পৌঁছানোয় তেলআবিবের বিমানবন্দর দুই ঘণ্টা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে হামাসকে দায়ী করে ইসরাইলি জনগণকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। এদিকে গাজার পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরেও অভিযান জোরালো করেছে ইসরাইলি বাহিনী।

হামাসের হাতে বাকি জিম্মিদের রেখে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসী হামলার বিরুদ্ধে ইসরাইলে ক্রমেই বাড়ছে উত্তেজনার পারদ। রাফাহ শহরের টানেল থেকে এক মার্কিনসহ ছয় জিম্মির মরদেহ উদ্ধারের পর গতকাল (রোববার, ১ সেপ্টেম্বর) থেকে আরও বেশি চড়াও হচ্ছেন বিক্ষুব্ধ ইসরাইলিরা।

যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় নেতানিয়াহু প্রশাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামছেন লাখ লাখ আন্দোলনকারী। আজ (সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর) একদিনের ধর্মঘটও পালন করছেন শ্রমিক নেতারা। ধরপাকড় চালিয়েও তাদের দমাতে পারছে না পুলিশ। সব মিলিয়ে বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে তেলআবিবসহ পুরো দেশ। নড়বড়ে হয়ে উঠছে নেতানিয়াহুর মসনদ।

একজন আন্দোলনকারী বলেন, ‘ইসরাইলি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। কারণ যুদ্ধবিরতি চুক্তি না করে সরকার ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তাই আমরা আমাদের দেশের অস্তিত্ব রক্ষা এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে বিক্ষোভ করছি।’

অন্য একজন আন্দোলনকারী বলেন, ‘আমি মনে করি একটি অপরাধী সরকার আমাদের শাসন করছে। যারা শুধু নিজেদের স্বার্থে জিম্মিদের খুন হতে দিচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশের ভালো চাইছেন না। তিনি শুধু নিজের ভালোর কথা ভাবেন।’

এ অবস্থায় প্রায় ১১ মাসের যুদ্ধের অবসান এবং জিম্মিদের মুক্তিতে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে দাবি করে ইসরাইলি জনগণকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। একইসঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার পেছনে হামাস দায়ী বলে অভিযোগ তুলেছেন ইসরাইলের সরকারপ্রধান। আর হামাসের অভিযোগ, কাতারে হওয়া আলোচনায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে রাজি হয়নি ইসরাইল। তাই জিম্মিদের মৃত্যুর দায় নেতানিয়াহুরই। ইসরাইলিদের হয় নেতানিয়াহু নয়তো যুদ্ধবিরতি চুক্তি- যেকোনো একটিকে বেছে নেয়া উচিত বলে জানিয়েছে গাজার স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি।

নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা নৃশংস শত্রুদের বিরুদ্ধে সব ফ্রন্টে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। যারা আমাদের সবাইকে হত্যা করতে চায়। আমাদের জিম্মিদের মুক্তির জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। তবে, হামাস যুদ্ধবিরতি চায় না। তাই আমি ইসরাইলি নাগরিকদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এদিকে গাজার ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশুর পোলিও টিকা নিশ্চিতে রোববার থেকে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা লড়াই থেকে বিরত থাকতে সম্মত হয়েছে হামাস-ইসরাইল। এর আওতায় প্রথম দিনে অন্তত ৭২ হাজার ৬১১ শিশুকে টিকা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

গাজায় চলমান আগ্রাসনের মধ্যে অধিকৃত পশ্চিম তীরেও দখলদারিত্ব অভিযান জোরালো করছে ইসরাইলি বাহিনী। প্রাণ যাচ্ছে বহু ফিলিস্তিনির। ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে জেনিন শহর থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন অসংখ্য ফিলিস্তিনি। এরমধ্যেই পশ্চিম তীরের হেবরনের এক তল্লাশি চৌকিতে বন্দুক হামলায় অন্তত তিন ইসরাইলি পুলিশ নিহত হওয়ার পর অঞ্চলটিতে আরও কঠোর পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে ইসরাইল।