১২:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বড় অংকের অর্থ লোপাটের অভিযোগ

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : ০৬:১৭:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১১ দেখেছেন

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পেছনে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে বাংলাদেশ, যা পুরো বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। একটি অনভিজ্ঞ দেশ হিসেবে অতিরিক্ত ব্যয়ে এতো বড় নির্মাণ প্রকল্পের ভার নেয়ার বিনিময়ে এর আড়ালে বড় অংকের লোপাটের অভিযোগ উঠেছে এরইমধ্যে। তবে, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ও চলমান প্রকল্প ঠিক রাখতে রূপপুরের বিষয়টি এখনো আলোচনায় আনেনি অন্তর্বর্তী সরকার। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, আর্থিক ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে খতিয়ে দেখতে হবে প্রকল্পের সব চুক্তিপত্র।

আওয়ামী শাসনামলে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নে সবচেয়ে বড় ও অগ্রাধিকার প্রকল্প ছিল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্লোবাল ডিফেন্স করপোরেশনের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপের মধ্যস্থতায় রূপপুর প্রকল্পের আড়ালে ৫শ’ কোটি ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন শেখ হাসিনা ও তার ছেলে জয়।

২০১৬ সালে শুরু হওয়া ১২শ’ মেগাওয়াট রূপপুর প্রকল্পে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ ধরলেও আনুষঙ্গিক ব্যয় দাঁড়ায় ১৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। যার ৯০ শতাংশই ঋণ দেবে রাশিয়া আর ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি ব্যয় করবে বাংলাদেশ।

গ্লোবাল ডিফেন্স করপোরেশনের ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, প্রকৃত খরচের তুলনায় রূপপুর প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণ ও চুল্লি কেনা বাবদ মাত্রাতিরিক্ত বেশি ব্যয় দেখানোর বিনিময়ে ৫ বিলিয়ন ডলার ঘুষ নিয়েছেন শেখ হাসিনা ও তার ছেলে।

যে অর্থ রাশিয়ার বিশেষ তহবিল থেকে সরাসরি পাঠানো হয়েছে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকে। বিনিময়ে বাংলাদেশের মতো একটি অনভিজ্ঞ দেশকে অতিরিক্ত ব্যয়ে পারমাণবিক সুবিধা দিয়েছে রাশিয়া। তবে, এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে রোসাটম ও রাশান সরকার।

একাধিক সূত্র বলছে, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের আওতার বাইরেও রোসাটমের সঙ্গে আরও একটি চুক্তি হয়েছে রাশান সরকারের। ওই চুক্তির আওতায় বিনিয়োগের একটি অংশ রোসাটমকে সরাসরি দেবে রাশিয়া, আরেকটি অংশ দেওয়া হবে শেখ হাসিনাকে।

ঠিক কত ডলার রাশিয়া-রোসাটম ও শেখ হাসিনার মধ্যে লেনদেন হচ্ছে, তা অবগত ছিলো না রূপপুর প্রকল্পের বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষও। আর প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে এ লেনদেনে রাশিয়াকে রাজি করাতে শেখ হাসিনার সময় লেগেছে অন্তত এক বছর।

তবে প্রশ্ন উঠতে পারে সাড়ে বারো বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পের বিনিময়ে অতিরিক্ত ৫ বিলিয়ন ডলার শেখ হাসিনাকে দিয়ে রাশিয়ার লাভ কোথায়? যার বিনিয়োগের ঋণ পরিশোধ শুরু হবে ২০২৭ থেকে। জিডিসির ওই প্রতিবেদনের বিপরীতে এমন প্রশ্ন রূপপুর কর্তৃপক্ষের!

ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার এজেন্সি ও সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারি তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ভারত, রাশিয়া, তুরস্ক, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ায় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি ইউনিট নির্মাণব্যয় গড়ে ১ হাজার ৫৫৬ ডলার বা ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৮১ ডলার বা ৬ লাখ ৬ হাজার টাকা।

কিন্তু রূপপুরে প্রতি ইউনিটের ব্যয় ৫ হাজার ৮৯০ ডলার বা ৬ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য ও হাঙ্গেরির তুলনায় কম হলেও এশিয়ায় নির্মাণ ব্যয়ে সর্বোচ্চ রূপপুর। এমনকি ভারত, তুরস্ক, ইরান, বুলগেরিয়াসহ বেশ কিছু দেশে আরও কম খরচে প্রকল্প নির্মাণ করেছে রোসাটম।

যদিও, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে দায়িত্ব পাওয়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, এখনোও রূপপুরের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি অভ্যন্তরে। প্রকল্প চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা কর্তৃপক্ষের।

তবে দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে ইতোমধ্যে রিট হয়েছে আদালতে। আর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো একটি স্পর্শকাতর প্রকল্পেও যদি এতো বড় দুর্নীতির অভিযোগ আসে, তবে অবকাঠামোগত কোনো ত্রুটি আছে কী না খতিয়ে দেখার পাশাপাশি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সব ধরনের নথিপত্র যাচাই বাছাই করে তা উন্মুক্ত করা উচিত বলে মত বিশ্লেষকদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান বলেন, ‘সাধারণত দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকল্পে যেটা হয় যারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে তারা গুণগত মান কম্প্রোমাইজ করতে বাধ্য হন। এখন এ ধরনের স্পর্শকাতর বিপজ্জনক পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সেখানে যদি দুর্নীতির বিষয় সামনে আসে তাহলে নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু এখানে স্বচ্ছতা ছিল না এবং দুর্নীতির একটা প্রসঙ্গ এসেছে তাই এ ধরনের চুক্তি অবশ্যই জনগণের সামনে প্রকাশ হওয়া উচিত।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্প নির্মাণে অতিরিক্ত ব্যয়ের খরচ যোগাতেই বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে গ্রাহকের ওপর ভর্তুকির দায় চাপিয়ে আসছিলো আওয়ামী লীগ সরকার। তাই জনগণের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে রাষ্ট্রীয় মেগা প্রকল্পগুলো নতুন করে খতিয়ে দেখতে হবে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. ম . তামিম বলেন, ‘যতগুলো প্রকল্প স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৫ বছরে সেগুলোর একটা বড় অংশই ওভার এস্টিমেটেড। এবং এর জন্য যে অতিরিক্ত পয়সা দিতে হচ্ছে তা তো মানুষকেই দিতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন আমরা যেহেতু জানি প্রকল্পগুলো বিশেষ আইনে দেয়া হয়েছে। সেগুলো হয়তো রাজনৈতিক বিবেচনায় বা টাকার বিনিময়ে দেয়া হয়েছে। তাই প্রতিটি প্রকল্পের প্রকৃত খরচ কত আছে তা দেখা দরকার।’

রূপপুর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে নব্বই শতাংশ, আর দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ বাকি ৪৫ শতাংশ। এপর্যন্ত রাশিয়ার ঋণে ব্যয় হয়েছে ৮ বিলিয়ন ডলার। চুক্তি অনুযায়ী আরও ৫ বিলিয়নের মতো ডলার খরচ করবে রাশিয়া। এবছরের ডিসেম্বরে চুল্লিতে জ্বালানি প্রবেশ ও আগামী বছরের শেষে উৎপাদনের যাওয়ার কথা রয়েছে প্রথম ইউনিটের।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বড় অংকের অর্থ লোপাটের অভিযোগ

আপডেট : ০৬:১৭:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পেছনে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে বাংলাদেশ, যা পুরো বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। একটি অনভিজ্ঞ দেশ হিসেবে অতিরিক্ত ব্যয়ে এতো বড় নির্মাণ প্রকল্পের ভার নেয়ার বিনিময়ে এর আড়ালে বড় অংকের লোপাটের অভিযোগ উঠেছে এরইমধ্যে। তবে, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ও চলমান প্রকল্প ঠিক রাখতে রূপপুরের বিষয়টি এখনো আলোচনায় আনেনি অন্তর্বর্তী সরকার। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, আর্থিক ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে খতিয়ে দেখতে হবে প্রকল্পের সব চুক্তিপত্র।

আওয়ামী শাসনামলে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নে সবচেয়ে বড় ও অগ্রাধিকার প্রকল্প ছিল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্লোবাল ডিফেন্স করপোরেশনের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপের মধ্যস্থতায় রূপপুর প্রকল্পের আড়ালে ৫শ’ কোটি ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন শেখ হাসিনা ও তার ছেলে জয়।

২০১৬ সালে শুরু হওয়া ১২শ’ মেগাওয়াট রূপপুর প্রকল্পে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ ধরলেও আনুষঙ্গিক ব্যয় দাঁড়ায় ১৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। যার ৯০ শতাংশই ঋণ দেবে রাশিয়া আর ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি ব্যয় করবে বাংলাদেশ।

গ্লোবাল ডিফেন্স করপোরেশনের ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, প্রকৃত খরচের তুলনায় রূপপুর প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণ ও চুল্লি কেনা বাবদ মাত্রাতিরিক্ত বেশি ব্যয় দেখানোর বিনিময়ে ৫ বিলিয়ন ডলার ঘুষ নিয়েছেন শেখ হাসিনা ও তার ছেলে।

যে অর্থ রাশিয়ার বিশেষ তহবিল থেকে সরাসরি পাঠানো হয়েছে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকে। বিনিময়ে বাংলাদেশের মতো একটি অনভিজ্ঞ দেশকে অতিরিক্ত ব্যয়ে পারমাণবিক সুবিধা দিয়েছে রাশিয়া। তবে, এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে রোসাটম ও রাশান সরকার।

একাধিক সূত্র বলছে, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের আওতার বাইরেও রোসাটমের সঙ্গে আরও একটি চুক্তি হয়েছে রাশান সরকারের। ওই চুক্তির আওতায় বিনিয়োগের একটি অংশ রোসাটমকে সরাসরি দেবে রাশিয়া, আরেকটি অংশ দেওয়া হবে শেখ হাসিনাকে।

ঠিক কত ডলার রাশিয়া-রোসাটম ও শেখ হাসিনার মধ্যে লেনদেন হচ্ছে, তা অবগত ছিলো না রূপপুর প্রকল্পের বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষও। আর প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে এ লেনদেনে রাশিয়াকে রাজি করাতে শেখ হাসিনার সময় লেগেছে অন্তত এক বছর।

তবে প্রশ্ন উঠতে পারে সাড়ে বারো বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পের বিনিময়ে অতিরিক্ত ৫ বিলিয়ন ডলার শেখ হাসিনাকে দিয়ে রাশিয়ার লাভ কোথায়? যার বিনিয়োগের ঋণ পরিশোধ শুরু হবে ২০২৭ থেকে। জিডিসির ওই প্রতিবেদনের বিপরীতে এমন প্রশ্ন রূপপুর কর্তৃপক্ষের!

ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার এজেন্সি ও সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারি তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ভারত, রাশিয়া, তুরস্ক, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ায় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি ইউনিট নির্মাণব্যয় গড়ে ১ হাজার ৫৫৬ ডলার বা ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৮১ ডলার বা ৬ লাখ ৬ হাজার টাকা।

কিন্তু রূপপুরে প্রতি ইউনিটের ব্যয় ৫ হাজার ৮৯০ ডলার বা ৬ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য ও হাঙ্গেরির তুলনায় কম হলেও এশিয়ায় নির্মাণ ব্যয়ে সর্বোচ্চ রূপপুর। এমনকি ভারত, তুরস্ক, ইরান, বুলগেরিয়াসহ বেশ কিছু দেশে আরও কম খরচে প্রকল্প নির্মাণ করেছে রোসাটম।

যদিও, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে দায়িত্ব পাওয়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, এখনোও রূপপুরের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি অভ্যন্তরে। প্রকল্প চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা কর্তৃপক্ষের।

তবে দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে ইতোমধ্যে রিট হয়েছে আদালতে। আর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো একটি স্পর্শকাতর প্রকল্পেও যদি এতো বড় দুর্নীতির অভিযোগ আসে, তবে অবকাঠামোগত কোনো ত্রুটি আছে কী না খতিয়ে দেখার পাশাপাশি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সব ধরনের নথিপত্র যাচাই বাছাই করে তা উন্মুক্ত করা উচিত বলে মত বিশ্লেষকদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান বলেন, ‘সাধারণত দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকল্পে যেটা হয় যারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে তারা গুণগত মান কম্প্রোমাইজ করতে বাধ্য হন। এখন এ ধরনের স্পর্শকাতর বিপজ্জনক পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সেখানে যদি দুর্নীতির বিষয় সামনে আসে তাহলে নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু এখানে স্বচ্ছতা ছিল না এবং দুর্নীতির একটা প্রসঙ্গ এসেছে তাই এ ধরনের চুক্তি অবশ্যই জনগণের সামনে প্রকাশ হওয়া উচিত।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্প নির্মাণে অতিরিক্ত ব্যয়ের খরচ যোগাতেই বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে গ্রাহকের ওপর ভর্তুকির দায় চাপিয়ে আসছিলো আওয়ামী লীগ সরকার। তাই জনগণের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে রাষ্ট্রীয় মেগা প্রকল্পগুলো নতুন করে খতিয়ে দেখতে হবে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. ম . তামিম বলেন, ‘যতগুলো প্রকল্প স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৫ বছরে সেগুলোর একটা বড় অংশই ওভার এস্টিমেটেড। এবং এর জন্য যে অতিরিক্ত পয়সা দিতে হচ্ছে তা তো মানুষকেই দিতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন আমরা যেহেতু জানি প্রকল্পগুলো বিশেষ আইনে দেয়া হয়েছে। সেগুলো হয়তো রাজনৈতিক বিবেচনায় বা টাকার বিনিময়ে দেয়া হয়েছে। তাই প্রতিটি প্রকল্পের প্রকৃত খরচ কত আছে তা দেখা দরকার।’

রূপপুর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে নব্বই শতাংশ, আর দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ বাকি ৪৫ শতাংশ। এপর্যন্ত রাশিয়ার ঋণে ব্যয় হয়েছে ৮ বিলিয়ন ডলার। চুক্তি অনুযায়ী আরও ৫ বিলিয়নের মতো ডলার খরচ করবে রাশিয়া। এবছরের ডিসেম্বরে চুল্লিতে জ্বালানি প্রবেশ ও আগামী বছরের শেষে উৎপাদনের যাওয়ার কথা রয়েছে প্রথম ইউনিটের।