ঢাকা ০৮:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

পেসারদের কারণে অন্য দলগুলো বাংলাদেশকে নিয়ে দুবার ভাববে: তামিম

স্পোর্টস ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:৪১:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৫৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাওয়ালপিন্ডির উইকেট সব সময়ই ব্যাটসম্যানদের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। তবু সেখানে পেসারদের কিছু করে দেখানোর সম্ভাবনায় সিরিজের আগে পাকিস্তানের শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহদের নামই এসেছে। কিন্তু রাওয়ালপিন্ডিতেই দুই টেস্টে পাকিস্তানের পেসারদের লেগেছে ম্রিয়মাণ, আর বাংলাদেশের তরুণ পেস বোলিং বিভাগ ছড়িয়েছে মুগ্ধতা।

দুই টেস্টেই জিতে পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করা এই বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণ এখন পুরো বিশ্বের প্রশংসা পাচ্ছে। এই বোলিং আক্রমণ দেখেই তামিম ইকবাল বলছেন, এমন বোলিং বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাজটা সহজ করে দেবে। বিদেশে খেলতে যাওয়া বাংলাদেশের সামনে সবুজ পিচ ফেলে জয় তুলে নেওয়ার সহজ সমীকরণ নিয়েও দুবার ভাবতে হবে প্রতিপক্ষকে।

তরুণ পেসার নাহিদ রানা গতিতে মুগ্ধ করেছেন। হাসান মাহমুদ দ্বিতীয় টেস্টে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। এ দুজনকে নিয়েই আলোচনাটা বেশি হচ্ছে। ক্রিকইনফোর সঙ্গে আলাপে তামিম মনে করিয়ে দিয়েছেন পুরো পেস বোলিং বিভাগের কথাই, ‘এটা বাংলাদেশের পেস বোলিং ইউনিটের জন্য এটা অনেক বড় অর্জন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় থেকেই বলছিলাম, পেসাররা দারুণ বোলিং করছে। মনে করিয়ে দিই, তাসকিনও কিন্তু অত উইকেট না পেলেও খুব দারুণ বোলিং করেছে। প্রথম টেস্টের পর আমার সংশয় ছিল যে নাহিদ দ্বিতীয় টেস্টে খেলবে কি না, শরীফুল চোটে না পড়লে আমরা এই টেস্টে নাহিদকে দেখতে হয়তো পেতাম না। তবে ওর দারুণ গতি দিয়ে ও পাকিস্তানের সেরা ব্যাটসম্যানদেরও ভুগিয়েছে।’

পরে হাসানের প্রসঙ্গে তামিমের বিশ্লেষণ, ‘হাসানের সবচেয়ে ভালো দিকটা হলো, ও খুব আলাদা কিছু করার চেষ্টা করেনি। লাইন-লেংথ ঠিক রেখেছে, পরে রিভার্স সুইংও পেয়েছে। পেসাররা এই জয়টা অনেকদিন মনে রাখবে, কারণ, এই উইকেটে আগে অনেক রান হয়েছে। এখানে পাকিস্তানি বোলাররা অত বেশি কিছু আদায় করে নিতে পারেনি যতটা বাংলাদেশি পেসাররা পেরেছে। বাংলাদেশের পেসাররা এটা নিয়ে গর্ব করা উচিত।’

পেসারদের এমন সাফল্যের অবদান সাবেক দুই পেস বোলিং কোচকেই দিলেন তামিম, ‘আগের কোচদেরও কৃতিত্ব দেওয়া উচিত। অ্যালান ডোনাল্ড, ওটিস গিবসন – তারা পেসারদের নিয়ে অনেক কাজ করেছেন এতদূর আসার পেছনে।’

এরপর সঞ্চালক যখন প্রশ্ন করলেন, এমন পেস বোলিং বিভাগের কারণে বাংলাদেশ টেস্টে বড় দল হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখতে পারে কি না, তামিমের উত্তর এল, ‘বাংলাদেশ ভালো বোলিং ইউনিট পেলে সেটা ব্যাটসম্যানদের কাজ সহজ করবে। কারণ, সাধারণত, আমরা বিদেশে গেলে ঘাসের উইকেট পাই। এখন বাংলাদেশের পেসাররা যে মান দেখাচ্ছে, এতে প্রতিপক্ষ আমাদের বিপক্ষে কেমন উইকেট বানাবে এ নিয়ে দুবার ভাববে। কারণ আগে আমরা অনেক বেশিই স্পিনারদের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। পেস বোলিং অ্যাটাক এত অসাধারণ ছিল না। ফলে প্রতিপক্ষ তখন সবুজ উইকেট বানাত, আমাদের জীবন তাতে কঠিন হয়ে যেত। এখন আমার মনে হয় বিদেশে সফরে আমাদের ব্যাটসম্যানরাও কিছুটা সহজতর উইকেট পাবে।’

পেসারদের বাইরে লিটন দাসকে নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ২৬ রানেই ৬ উইকেট হারায়। সেখান থেকে লিটন দাস আর মেহেদি হাসান মিরাজের ব্যাট উদ্ধার করেছে বাংলাদেশকে। মিরাজ দারুণ পাল্টা আক্রমণে ফিফটি করেছেন, লিটন তো সেঞ্চুরিই করে ফেললেন। লিটনকে নিয়ে প্রশ্নে তামিম বলেছেন, ‘আমার মনে হয় নাম্বার সিক্স পজিশনটা ওর জন্য যথাযথ। অনেকদিন ধরেই এটা বলছি। এটাই ওর এমন একমাত্র ইনিংস নয়। আপনি যদি তিন-চার বছর পেছনে ফিরে যান, দেখবেন ওর এমন অনেক ইনিংস আছে বাংলাদেশের হয়ে, এবং এর বেশিরভাগই কঠিন পরিস্থিতিতে। ওর ইনিংস নিয়ে বললে, ও যেভাবে ব্যাট করেছে, যেমন কম্পোজার রেখেছে, কখনোই নিয়ন্ত্রণ হারায়নি, যা করতে চেয়ে তাই দারুণভাবে করেছে।’

তবে লিটনের পাশাপাশি মিরাজের কথাও বলেছেন লিটন, ‘মেহেদি মিরাজের কথাও ভুললে চলবে না। কারণ, বাংলাদেশ যখন ২৬/৬ ছিল, ও-ই এসে পাকিস্তানের বোলারদের পাল্টা আক্রমণ করেছে। এরপর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে, অদের বোলাররা চাপ অনুভব করে। এই দুজনকে কৃতিত্ব দিতে হবে, পুরো বিশ্ব থেকে ওদের প্রশংসা প্রাপ্য।’

নিউজটি শেয়ার করুন

পেসারদের কারণে অন্য দলগুলো বাংলাদেশকে নিয়ে দুবার ভাববে: তামিম

আপডেট সময় : ০৫:৪১:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রাওয়ালপিন্ডির উইকেট সব সময়ই ব্যাটসম্যানদের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। তবু সেখানে পেসারদের কিছু করে দেখানোর সম্ভাবনায় সিরিজের আগে পাকিস্তানের শাহিন আফ্রিদি, নাসিম শাহদের নামই এসেছে। কিন্তু রাওয়ালপিন্ডিতেই দুই টেস্টে পাকিস্তানের পেসারদের লেগেছে ম্রিয়মাণ, আর বাংলাদেশের তরুণ পেস বোলিং বিভাগ ছড়িয়েছে মুগ্ধতা।

দুই টেস্টেই জিতে পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করা এই বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণ এখন পুরো বিশ্বের প্রশংসা পাচ্ছে। এই বোলিং আক্রমণ দেখেই তামিম ইকবাল বলছেন, এমন বোলিং বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাজটা সহজ করে দেবে। বিদেশে খেলতে যাওয়া বাংলাদেশের সামনে সবুজ পিচ ফেলে জয় তুলে নেওয়ার সহজ সমীকরণ নিয়েও দুবার ভাবতে হবে প্রতিপক্ষকে।

তরুণ পেসার নাহিদ রানা গতিতে মুগ্ধ করেছেন। হাসান মাহমুদ দ্বিতীয় টেস্টে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন। এ দুজনকে নিয়েই আলোচনাটা বেশি হচ্ছে। ক্রিকইনফোর সঙ্গে আলাপে তামিম মনে করিয়ে দিয়েছেন পুরো পেস বোলিং বিভাগের কথাই, ‘এটা বাংলাদেশের পেস বোলিং ইউনিটের জন্য এটা অনেক বড় অর্জন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় থেকেই বলছিলাম, পেসাররা দারুণ বোলিং করছে। মনে করিয়ে দিই, তাসকিনও কিন্তু অত উইকেট না পেলেও খুব দারুণ বোলিং করেছে। প্রথম টেস্টের পর আমার সংশয় ছিল যে নাহিদ দ্বিতীয় টেস্টে খেলবে কি না, শরীফুল চোটে না পড়লে আমরা এই টেস্টে নাহিদকে দেখতে হয়তো পেতাম না। তবে ওর দারুণ গতি দিয়ে ও পাকিস্তানের সেরা ব্যাটসম্যানদেরও ভুগিয়েছে।’

পরে হাসানের প্রসঙ্গে তামিমের বিশ্লেষণ, ‘হাসানের সবচেয়ে ভালো দিকটা হলো, ও খুব আলাদা কিছু করার চেষ্টা করেনি। লাইন-লেংথ ঠিক রেখেছে, পরে রিভার্স সুইংও পেয়েছে। পেসাররা এই জয়টা অনেকদিন মনে রাখবে, কারণ, এই উইকেটে আগে অনেক রান হয়েছে। এখানে পাকিস্তানি বোলাররা অত বেশি কিছু আদায় করে নিতে পারেনি যতটা বাংলাদেশি পেসাররা পেরেছে। বাংলাদেশের পেসাররা এটা নিয়ে গর্ব করা উচিত।’

পেসারদের এমন সাফল্যের অবদান সাবেক দুই পেস বোলিং কোচকেই দিলেন তামিম, ‘আগের কোচদেরও কৃতিত্ব দেওয়া উচিত। অ্যালান ডোনাল্ড, ওটিস গিবসন – তারা পেসারদের নিয়ে অনেক কাজ করেছেন এতদূর আসার পেছনে।’

এরপর সঞ্চালক যখন প্রশ্ন করলেন, এমন পেস বোলিং বিভাগের কারণে বাংলাদেশ টেস্টে বড় দল হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখতে পারে কি না, তামিমের উত্তর এল, ‘বাংলাদেশ ভালো বোলিং ইউনিট পেলে সেটা ব্যাটসম্যানদের কাজ সহজ করবে। কারণ, সাধারণত, আমরা বিদেশে গেলে ঘাসের উইকেট পাই। এখন বাংলাদেশের পেসাররা যে মান দেখাচ্ছে, এতে প্রতিপক্ষ আমাদের বিপক্ষে কেমন উইকেট বানাবে এ নিয়ে দুবার ভাববে। কারণ আগে আমরা অনেক বেশিই স্পিনারদের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। পেস বোলিং অ্যাটাক এত অসাধারণ ছিল না। ফলে প্রতিপক্ষ তখন সবুজ উইকেট বানাত, আমাদের জীবন তাতে কঠিন হয়ে যেত। এখন আমার মনে হয় বিদেশে সফরে আমাদের ব্যাটসম্যানরাও কিছুটা সহজতর উইকেট পাবে।’

পেসারদের বাইরে লিটন দাসকে নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ২৬ রানেই ৬ উইকেট হারায়। সেখান থেকে লিটন দাস আর মেহেদি হাসান মিরাজের ব্যাট উদ্ধার করেছে বাংলাদেশকে। মিরাজ দারুণ পাল্টা আক্রমণে ফিফটি করেছেন, লিটন তো সেঞ্চুরিই করে ফেললেন। লিটনকে নিয়ে প্রশ্নে তামিম বলেছেন, ‘আমার মনে হয় নাম্বার সিক্স পজিশনটা ওর জন্য যথাযথ। অনেকদিন ধরেই এটা বলছি। এটাই ওর এমন একমাত্র ইনিংস নয়। আপনি যদি তিন-চার বছর পেছনে ফিরে যান, দেখবেন ওর এমন অনেক ইনিংস আছে বাংলাদেশের হয়ে, এবং এর বেশিরভাগই কঠিন পরিস্থিতিতে। ওর ইনিংস নিয়ে বললে, ও যেভাবে ব্যাট করেছে, যেমন কম্পোজার রেখেছে, কখনোই নিয়ন্ত্রণ হারায়নি, যা করতে চেয়ে তাই দারুণভাবে করেছে।’

তবে লিটনের পাশাপাশি মিরাজের কথাও বলেছেন লিটন, ‘মেহেদি মিরাজের কথাও ভুললে চলবে না। কারণ, বাংলাদেশ যখন ২৬/৬ ছিল, ও-ই এসে পাকিস্তানের বোলারদের পাল্টা আক্রমণ করেছে। এরপর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে, অদের বোলাররা চাপ অনুভব করে। এই দুজনকে কৃতিত্ব দিতে হবে, পুরো বিশ্ব থেকে ওদের প্রশংসা প্রাপ্য।’