২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের একাদশের ক্লাস শুরু হবার প্রায় ১ মাস হলেও সিলেবাস হাতে পাননি শিক্ষার্থীরা। কারণ মাধ্যমিকের পাশাপাশি পরিমার্জন হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিকের পঠ্যবইও। পরিমার্জিত বই মুদ্রণে যেতে দেরি হলে আগের বই নকল করে বাজারে সরবরাহের শঙ্কা মুদ্রণ ব্যবসায়ীদের।
পরিমার্জন সংস্করণ হচ্ছে একাদশ-দ্বাদশের পাঠ্যবইও। প্রায় এক মাস আগে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হলেও এখনও পরিমার্জিত নতুন বই পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। তবু কলেজে আসা যাওয়া, চলে ক্লাস। কিন্তু এখনো পুরো সিলেবাস হাতে না পাওয়ায় অনেকটা দ্বিধায় শিক্ষার্থীরা।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘একটা রাজনৈতিক পরিবর্তনে আমরা কিন্তু অনেকটা পিছিয়ে আছি।’
আরেকজন বলেন, ‘১ মাস হওয়ার পরেও আমরা জানতে পারিনি আমাদের সিলেবাস কতটুকু পরিমার্জন সংস্করণ হচ্ছে।’
উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের বিষয়গুলো বাদে বাংলা, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এই তিনটি বিষয়ের ৪টি পাঠ্যবই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রণিত হয়ে থাকে। সবশেষ ২০১৪ সাল থেকে বাংলা সাহিত্য পাঠ ও সহজপাঠ, ২০১৫ সাল থেকে ইংলিশ ফর টুডে এবং ২০২১ এ প্রণিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বই এখনো শিক্ষার্থীদের পাঠ্য। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর উদ্যোগ নেয় পরিমার্জনের। বাংলা বইয়ের কাজ শেষ হলেও বাকি এখনো ইংরেজি ও আইসিটি।
বিগত দিনে পাঠ্যবই প্রণয়নের ক্ষেত্রে লেখকের লেখার মানকে গুরুত্ব না দিয়ে লেখকের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইতিহাস নিয়েও দলীয় রাজনীতিকরণও কম হয়নি বইয়ে। পরিমার্জনের কাজে যুক্ত, এদের অন্যতম রাখাল রাহা। তিনি বলছেন, অল্প সময়ের মধ্যে বিভিন্ন অসঙ্গতির পরিমার্জন করা হচ্ছে।
শিক্ষা-গবেষক রাখাল রাহা বলেন, ‘কিছু ক্ষতি হচ্ছে এইটা আমাদের মেনে নিয়েই দ্রুত এগোতে হচ্ছে।’
এদিকে বইয়ের পরিমার্জন, সংস্করণের কাজ এখনো চলমান থাকায় বই মুদ্রণে যেতেও বিলম্ব হচ্ছে। তবে বেশি দেরি হলে পুরনো বই নকল করে বাজারে সরবরাহ হলে শিক্ষার্থীরা প্রতারিত হবার শঙ্কা করছেন মুদ্রণ ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক চেয়ারম্যান তোফায়েল খান বলেন, ‘যত দেরি করবেন এতে ছাত্ররা প্রতারিত হবে অন্যদিকে পুরনো পাঠ্যসূচি চলে যাবে।’
তবে এনসিটিবি বলছে, এ মাসের মাঝামাঝিতেই চূড়ান্ত পান্ডুলিপি মুদ্রণের জন্য পাঠানো হবে।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান ড. এ. কে. এম. রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘পান্ডুলিপিগুলো খুব দ্রুত করা হবে। অর্ধেকটা কাজ হয়ে গিয়েছে। খুব দ্রুত বাকি কাজ শেষ হলে প্রিন্টে দিয়ে দিবো।’
এছাড়া ব্যবসায়ীরা বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের যে বইগুলো নিজেদের মতো করে বাজারজাত করেন, তাতেও সংশোধন আনা হবে জানিয়েছে এনসিটিবি।