ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দেশে-না বিদেশে এ নিয়ে নানা চলছে আলোচনা। তবে তিনি এখন সপরিবারে বেলজিয়ামে অবস্থান করছেন বলে নিশ্চিত হয়েছে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল। সেখান থেকে তিনি মোবাইল ফোনে কথাবার্তাও বলছেন ঢাকা-চট্টগ্রামের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে। তার দেশ ছাড়ার ৬ দিন পর দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত গত ২ সেপ্টেম্বর হাছান মাহমুদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়।
গত ৬ আগস্ট ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ গ্রেপ্তার হন- এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে পলককে গ্রেপ্তার দেখানো হলেও হাছান মাহমুদ ছিলেন নিখোঁজ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, হাছান মাহমুদ এখন বেলজিয়ামের লিমবুর্গ প্রদেশের হ্যাসেল্ট সিটিতে তাঁর নিজের বাড়িতেই আছেন একমাত্র ছেলে আর স্ত্রী নুরান ফাতেমাকে নিয়ে।
জানা গেছে, হাছান মাহমুদ ঢাকা থেকে সরাসরি বেলজিয়াম যাননি। এমিরাতের ফ্লাইটে তিনি দুবাই হয়ে প্রথম জার্মানির ডসেলড্রপ বিমানবন্দরে যান গত ২৬ আগস্ট বিকেল পৌনে ৩টায়। সেখান থেকে সড়কপথে গাড়ি চালিয়ে তাঁকে বেলজিয়ামের বাড়িতে পৌঁছে দেন জার্মানি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোবারক আলী ভূঁইয়া বকুল।
জার্মানি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোবারক আলী ভূঁইয়া বকুল বলেন, ‘তিনি এইখানে আছেন এবং সেভ আছেন, এইটুকু আরকি। আর পরশুদিন আমাদের বেলজিয়ামে একটা মিটিং ছিল ওইখানে উনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না সেটি আগেই বলে দিয়েছেন। উনি এখানে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতেছেন না, কারো সঙ্গেই তার যোগাযোগ নাই।’
হাছান মাহমুদ বেলজিয়াম থেকে যাদের সঙ্গে ফোনকলে কথা বলেছেন তাদের একজন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার আইপিটিভি সি প্লাসের প্রধান সম্পাদক আলমগীর অপু। তার সঙ্গে গত ৩১ আগস্ট রাত ১০টা ২৭ মিনিটে টানা ১৫ মিনিট কথা বলেন সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এইসময় নিজের আক্রোশ থেকে কিছুদিন সি-প্লাস এর সম্প্রচার বন্ধ রাখার জন্য দুঃখ প্রকাশও করেন বলে জানান অপু।
সিপ্লাস টিভি প্রধান সম্পাদক ও সিইও আলমগীর অপু বলেন, ‘৩১ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি আমাকে কল দিয়েছিলেন। কল দিয়ে…উনি হয়ত উনার ভুল বুঝতে পেরেছেন এবং বুঝতে পেরে উনি আমাকে কল করে অনেকগুলো কথার ভেতরে উনি বারবার দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এটার জন্য উনি লজ্জিত।’
স্ত্রী পরিবারের সঙ্গে বেলজিয়ামের নিজ বাড়িতে আছেন বলেও অপুকে জানান হাছান মাহমুদ।
দেশ ছাড়লেও সরকার পতনের পর হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে ঢাকা-চট্টগ্রামে অনেকগুলো হত্যা মামলা হয়েছে। সরকারি এত নজরদারির পরও কীভাবে তিনি বেলজিয়াম গেলেন সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।