ঢাকা ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলে যাওয়ায় স্থবির দুই বড় প্রকল্পের কাজ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৩৬:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৬১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বন্ধ রয়েছে আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন জাতীয় মহাসড়ক ও আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। স্থল ও রেলপথে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ অর্থায়নে চলমান দুই প্রকল্প নিয়ে এখন তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩শ’ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ দেশে চলে যাওয়ায় এই সংকট।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটি চারলেনের মহাসড়কে উন্নীতকরণের প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ, করোনা মহামারি ও বৈশ্বি অর্থনৈতিক মন্দায় বিলম্বিত হয় প্রকল্পের কাজ। প্রায় ৫১ কিলোমিটারের এ মহাসড়ক নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। যা বাস্তবায়ন হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে।

প্রকল্পের তিনটি প্যাকেজের প্রথমটি আশুগঞ্জ থেকে সরাইল, দ্বিতীয়টি সরাইল থেকে আখাউড়ার তন্তরবাজার এবং তৃতীয় প্যাকেজটি তন্তরবাজার থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত। কাজ পায় ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। পুরো প্রকল্পের তৃতীয় প্যাকেজের কাজ এখনও শুরুই করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। তিন দফায় বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। যা শেষ হবার কথা আগামী বছরের জুনে। তবে এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ৫০ শতাংশ।

তবে আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর নিরাপত্তাজনিত কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রায় তিনশ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ দেশে চলে যায়। ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ । অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে নির্মাণসামগ্রী ও দামী যন্ত্রাংশ। প্রকল্প ব্যবস্থাপক বলছেন, ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পুনরায় কাজের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। ফলে কবে নাগাদ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে সেটিও স্পষ্ট নয়।

আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ জানান, ভারতীয় হাইকমিশন থেকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সবুজ সংকেত পেলেই কাজ শুরু করবেন ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

এদিকে, প্রায় ২৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প নিয়েও কাটছে না অনিশ্চয়তা। এ প্রকল্পে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপকসহ অন্তত ৭ জন প্রকৌশলী নিজ দেশে চলে গেছেন। এতে বন্ধ রয়েছে প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ।

রেলপথের কাজ শেষ হওয়ায় কয়েক দফায় ট্রায়াল রান শেষে গত বছরের ১লা নভেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথের উদ্বোধন করেন। তবে সে সময় কাস্টমস, ইমিগ্রেশন ভবন, প্ল্যাটফর্ম এবং সংযোগ সড়কের কাজ বাকি ছিল। যা এখনও পুরোপুরি শেষ করা যায়নি। কবে নাগাদ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা কাজ শুরু করবেন সে সম্পর্কে জানা নেই স্থানীয় প্রশাসনের।

বাণিজ্যিক গুরুত্ব বিবেচনায় আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন মহাসড়ক ও আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের কাজ দ্রুত শেষ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলে যাওয়ায় স্থবির দুই বড় প্রকল্পের কাজ

আপডেট সময় : ০১:৩৬:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বন্ধ রয়েছে আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন জাতীয় মহাসড়ক ও আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। স্থল ও রেলপথে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ অর্থায়নে চলমান দুই প্রকল্প নিয়ে এখন তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩শ’ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ দেশে চলে যাওয়ায় এই সংকট।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটি চারলেনের মহাসড়কে উন্নীতকরণের প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ, করোনা মহামারি ও বৈশ্বি অর্থনৈতিক মন্দায় বিলম্বিত হয় প্রকল্পের কাজ। প্রায় ৫১ কিলোমিটারের এ মহাসড়ক নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। যা বাস্তবায়ন হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে।

প্রকল্পের তিনটি প্যাকেজের প্রথমটি আশুগঞ্জ থেকে সরাইল, দ্বিতীয়টি সরাইল থেকে আখাউড়ার তন্তরবাজার এবং তৃতীয় প্যাকেজটি তন্তরবাজার থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত। কাজ পায় ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। পুরো প্রকল্পের তৃতীয় প্যাকেজের কাজ এখনও শুরুই করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। তিন দফায় বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। যা শেষ হবার কথা আগামী বছরের জুনে। তবে এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ৫০ শতাংশ।

তবে আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর নিরাপত্তাজনিত কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রায় তিনশ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ দেশে চলে যায়। ফলে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ । অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে নির্মাণসামগ্রী ও দামী যন্ত্রাংশ। প্রকল্প ব্যবস্থাপক বলছেন, ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পুনরায় কাজের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। ফলে কবে নাগাদ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে সেটিও স্পষ্ট নয়।

আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ জানান, ভারতীয় হাইকমিশন থেকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সবুজ সংকেত পেলেই কাজ শুরু করবেন ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

এদিকে, প্রায় ২৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প নিয়েও কাটছে না অনিশ্চয়তা। এ প্রকল্পে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপকসহ অন্তত ৭ জন প্রকৌশলী নিজ দেশে চলে গেছেন। এতে বন্ধ রয়েছে প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ।

রেলপথের কাজ শেষ হওয়ায় কয়েক দফায় ট্রায়াল রান শেষে গত বছরের ১লা নভেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথের উদ্বোধন করেন। তবে সে সময় কাস্টমস, ইমিগ্রেশন ভবন, প্ল্যাটফর্ম এবং সংযোগ সড়কের কাজ বাকি ছিল। যা এখনও পুরোপুরি শেষ করা যায়নি। কবে নাগাদ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা কাজ শুরু করবেন সে সম্পর্কে জানা নেই স্থানীয় প্রশাসনের।

বাণিজ্যিক গুরুত্ব বিবেচনায় আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন মহাসড়ক ও আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের কাজ দ্রুত শেষ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।