ঘরের ছেলেকে সমর্থন দিতে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে জড়ো হয়েছিলেন ২৩ হাজারের বেশি মানুষ। টেলর ফ্রিৎজ যুক্তরাষ্ট্রের ঘরের ছেলে। তার সমর্থনে মাতল পুরো গ্যালারি। ফ্রিৎজ পয়েন্ট পেলেই ফ্ল্যাশিং মিডোর স্টেডিয়াম শুনেছে গর্জন। আবার সিনারের বেলায় গ্যালারিতে নেমেছে রাজ্যের নীরবতা। শেষ পর্যন্ত জয় হলো নীরবতারই। ইতালিয়ান যুবক সিনার ইউএস ওপেনের ফাইনালে জিতলেন ৬-৩, ৬-৪, ৭-৫ গেমের সরাসরি সেটে।
ইউএস ওপেন দিয়ে বছরটাই যেন নিজের করে নিয়েছেন সিনার। ২০২৪ সালের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম যুক্ত হলো তার ট্রফি ক্যাবিনেটে। প্রথমটিও জিতেছিলেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের পর এই বছর ইউএস ওপেনও জিতলেন বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকা সিনার। ডোপ বিতর্ক পার করে এসেছিলেন। জয় করেই থামলেন।
একইসঙ্গে নতুন ইতিহাসও গড়লেন সিনার। প্রথম ইতালিয়ান হিসাবে ইউএস ওপেন জিতলেন তিনি। ২৩ বছরের সিনার এটিপি র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের এক নম্বর। কিন্তু তার গ্র্যান্ড স্ল্যাম সংখ্যা মাত্র দুই। এই বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতেছিলেন তিনি। বছরের শুরু এবং শেষটা ভাল হল তাঁর। হার্ড কোর্টের দু’টি গ্র্যান্ড স্ল্যামই জিতে নিলেন তিনি।
এ বারের ইউএস ওপেন ছিল অঘটনের। কার্লোস আলকারাজ় এবং নোভাক জোকোভিচ কোয়ার্টার ফাইনালের আগেই বিদায় নেন। সিনারের রাস্তাটা তাতে কিছুটা সহজ হয়। তবে ফাইনালের প্রতিপক্ষ ফ্রিৎজ নেহাত ছেড়ে দেয়ার নন। দর্শক ছিল ফ্রিৎজের পক্ষে। ২৬ বছরের এই মার্কিন তারকা এবারই প্রথম কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে খেলতে নেমেছিলেন তিনি।
ফ্রিৎজের বড় অস্ত্র প্রধান তার সার্ভিস। কিন্তু সিনারের শক্ত ব্যাকহ্যান্ডের বিপক্ষে কাজে লাগেনি তা। প্রথম এবং দ্বিতীয় সার্ভে পয়েন্ট জেতার শতাংশে এগিয়ে থাকলেন র্যাঙ্কিংয়ের নাম্বার ওয়ান। যদিও ফ্রিৎজ ১০টি এইস (Ace) পেয়েছিলেন। কিন্তু সিনারের দুর্দান্ত ব্যাকহ্যান্ড আর কার্যকরী ফোরহ্যান্ডের শটগুলো বারবার ছিটকে দেয়কে স্বাগতিক তারকাকে।
সিনার শুধু ইউএস ওপেন জিতলেন না সেই সঙ্গে জবাব দিলেন সমালোচকদেরও। এই গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলতে নামার বিতর্কে জড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। মার্চে ইন্ডিয়ান ওয়েলস প্রতিযোগিতায় খেলার সময় সিনারের শরীরে ক্লোস্টেবল নামে একটি পদার্থ পাওয়া গিয়েছিল। বিশ্ব অ্যান্টি ডোপিং এজেন্সি (ওয়াডা) ক্লোস্টেবল পদার্থটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক টেনিস ইন্টিগ্রিটি এজেন্সি (আইটিআইএ) সিনারের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
আইটিআইএ জানিয়েছিল, ইটালির টেনিস তারকা ইচ্ছাকৃত ভাবে ডোপিং করেননি। তার ফিজিয়োথেরাপিস্ট না জেনে কোনও একটি ওষুধ দিয়েছিলেন, সেটার মধ্যে ক্লোস্টেবল ছিল। এই নিয়ে ব্যাপক জলঘোলা হলেও শেষ পর্যন্ত কোর্টে নেমেছিলেন সিনার। আর শেষটা করলেন জয় দিয়েই।