গত কয়েক দশকে ব্রাজিলের সবচেয়ে বাজে দল কি এটিই? প্রশ্নটা এখন আর ফিসফাস আওয়াজে নেই, জোরেশোরেই উঠছে। না ওঠার কারণও নেই! বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে যে এবার ব্রাজিলকে দেখে পাড়ার কোনো দলের মতোই মনে হচ্ছে!
লাতিন অঞ্চলের বাছাইপর্বে আজ আবার হেরেছে ব্রাজিল, এবার প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ে, ব্যবধান ১-০। প্যারাগুয়ের আসুনসিওনে এই হারটি মিলিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই হার দেখল ব্রাজিল। অথচ বাছাইপর্বে এক সময়ে হার শব্দটির সঙ্গে পরিচয়ই প্রায় ভুলে যাওয়া ব্রাজিল এবারের আগে ৭১ ম্যাচের মধ্যে হার দেখেছিল মাত্র ৫টি ম্যাচে! আর প্যারাগুয়ের কাছে হারল ২০০৮ সালের পর এই প্রথমবার।
শুধু হারই নয়, ব্রাজিলের খেলায়ও সাম্বা তো দূরের কথা, কোনো ছন্দই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আজ প্যারাগুয়ের বিপক্ষেও যেমন, পুরো ৯০ মিনিটে ব্রাজিলের মনে রাখার মতো কোনো আক্রমণ দেখা যায়নি। তিনটা শট প্রতিপক্ষের পোস্টে রাখতে পেরেছে ব্রাজিল, সবই ব্রাজিলের জার্সিতে একের পর এক হতশ্রী পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে যাওয়া ভিনিসিয়ুসের পায়ে, তিনটির কোনোটিতেই প্রতিপক্ষ খুব বেশি শঙ্কায় সম্ভবত ছিল না।
আক্রমণে প্রাণ নেই, মাঝমাঠে খেলা গড়ে দেওয়ার কেউ নেই, রক্ষণও গড়ের মাঠ। আজ ২০ মিনিটেই যেভাবে গোল খেয়ে গেছে ব্রাজিল, সেটাও ডিফেন্ডিং শেখানো কোচদের ম্যানুয়েলে জায়গা করে নিতে পারে – ‘যেভাবে ডিফেন্ড করা উচিত নয়’ বিভাগে!
বক্সের সামনে প্যারাগুয়ের দিয়েগো গোমেস যখন বল পেলেন, তাঁর সামনে ব্রাজিলের তিন ডিফেন্ডার ঠিকই ছিলেন। কিন্তু তাঁরা গোমেসকে এত জায়গা দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন যে, দেখে মনে হচ্ছিল তাঁরা যেন গোমেসকে ‘দেখি তো গোল করতে পারো কি না’ চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছিলেন। গোমেস পেরেছেন, দারুণভাবেই পেরেছেন। বক্সের বাইরে থেকেই ডান পায়ের বাইরের অংশের দুর্দান্ত শটে বল জড়িয়ে দিলেন জালে। ডানদিকের পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে বাঁদিকের জালে ঢোকা শটটা ঠেকানোর সাধ্য আর হয়নি প্রাণান্ত ঝাঁপিয়ে পড়া ব্রাজিল গোলকিপার আলিসনের।
ব্রাজিলের ভাগ্য ভালো বলা যায়, ২০২৬ বিশ্বকাপ ৪৮ দলের হওয়ায় এবার লাতিন অঞ্চলের দশ দলের মধ্যে ছয়টিই বিশ্বকাপে জায়গা পাবে। সে কারণে এত হারের পরও ব্রাজিলের বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়া নিয়ে এখনো শঙ্কা জাগেনি। সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে চতুর্থ এই হারের পর ৮ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আছে পয়েন্ট তালিকার পাঁচে।