০৭:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রিনল্যান্ডের ভূমিধসে পৃথিবী কেঁপেছিল টানা নয় দিন

গ্রিনল্যান্ডে ভূমিধসের কারণে পুরো পৃথিবী কেঁপেছিল টানা নয় দিন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভূমিধস আর বড় ধরনের সুনামি হয়েছে উত্তর মেরুতে অবস্থিত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডে। কেঁপে ওঠে আর্কটিক থেকে অ্যান্টার্কটিকা। সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য।

গেলো বছরের সেপ্টেম্বরে পৃথিবীর সর্বদক্ষিণ মেরুর গ্রিনল্যান্ডের উত্তর পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ডিকসন ফিওর্দে ভয়াবহ ভূমিধস হয়। পাথর আর বরফের বড় বড় খণ্ড সমুদ্রে ধসে পড়ে। এগুলো ২ হাজার ২০০ মিটার পর্যন্ত প্রবাহিত হয়। এই পাথর আর হিমবাহ আটকে যায় ফিওর্দ হিসেবে পরিচিত ছোট জলসীমায়। সৃষ্টি হয় ২০০ মিটার উচ্চতার মেগাসুনামি। এই ভূমিধস আর সুনামির কারণে টানা নয় দিন হাজার বার কেঁপে ওঠে পৃথিবী। এই ঘটনা ঘটে ২০২৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর।

ভূমিকম্প বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে আসা এই চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন বলছে, সেসময় কেঁপেছে পৃথিবীর উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু। সাধারণ ভূমিকম্পের তুলনায় কম্পনের মাত্রা বেশি না থাকায় সেটি খুব একটা অনুভূত হয়নি বলে জানান বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, সুনামির উচ্চতা ২০০ মিটারের অর্থ, এই সুনামি ইন্দোনেশিয়ায় ২০০৪ সালের সুনামি কিংবা জাপানের ২০১১ সালের সুনামির চেয়ে ভয়াবহ।

সম্প্রতি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা প্রতিবেদনে কাজ করেছে বিশ্বের ১৫ দেশের ৪০ প্রতিষ্ঠানের ৬৬ জন বিজ্ঞানী। প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ভূ-কম্পন তথ্য, স্যাটেলাইটের ছবি, ডিকসন ফিওর্দের পানির উচ্চতা, সুনামি স্রোতের উৎপত্তির বিস্তারিত। জানা যায়, গলে যাওয়া হিমবাহ পাথর ধরে রাখার সক্ষমতা হারানোয় ডিকসন ফিওর্দের ১ হাজার ২০০ মিটার উঁচু পর্বত ওপর থেকে ধসে পড়ে গেলো বছরের সেপ্টেম্বরে।

দশকের পর দশক ধরে চলা বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে গ্রিনল্যান্ডে বরফের স্তরের ঘনত্ব ১০ মিটারের মতো কমে গেছে। যে কারণে ওপরে থাকা পাহাড় পর্বতকে আগের মতো শক্তিশালীভাবে ধরে রাখতে পারছে না হিমবাহগুলো। এই প্রথম একসঙ্গে ভূমিধস আর সুনামি রেকর্ড করা হয়েছে গ্রিনল্যান্ডে। উষ্ণায়নের কারণে আর্কটিক অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন প্রকট আকার নিয়েছে। একই ধরনের ভূ-কম্পন রেকর্ড করা হয়েছে আলাস্কা, কানাডা, নরওয়ে আর চিলিতে।

সাধারণত সুনামি ভূ-গর্ভে ভূমিকম্পের কারণে হয়, সমুদ্রে প্রভাব ফেলে কয়েক ঘণ্টা পর। কিন্তু এই ঘটনায় ঢেউ আটকে থেকে সৃষ্টি করেছে কম্পন। ন্যাশনাল জিওলজিক্যাল সার্ভে ফর ডেনমার্ক এন্ড গ্রিনল্যান্ড বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনে হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে এখন এই ভূমিধস আর সুনামির ঘটনা আর্কটিকে নিয়মিত ঘটবে। যদিও বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রথমবারের মতো পুরো পৃথিবীতে অনুভূত হলো মাটির নিচ থেকে।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্প বাতিল : পরিকল্পনা উপদেষ্টা

গ্রিনল্যান্ডের ভূমিধসে পৃথিবী কেঁপেছিল টানা নয় দিন

আপডেট : ০২:৫২:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গ্রিনল্যান্ডে ভূমিধসের কারণে পুরো পৃথিবী কেঁপেছিল টানা নয় দিন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভূমিধস আর বড় ধরনের সুনামি হয়েছে উত্তর মেরুতে অবস্থিত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডে। কেঁপে ওঠে আর্কটিক থেকে অ্যান্টার্কটিকা। সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য।

গেলো বছরের সেপ্টেম্বরে পৃথিবীর সর্বদক্ষিণ মেরুর গ্রিনল্যান্ডের উত্তর পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ডিকসন ফিওর্দে ভয়াবহ ভূমিধস হয়। পাথর আর বরফের বড় বড় খণ্ড সমুদ্রে ধসে পড়ে। এগুলো ২ হাজার ২০০ মিটার পর্যন্ত প্রবাহিত হয়। এই পাথর আর হিমবাহ আটকে যায় ফিওর্দ হিসেবে পরিচিত ছোট জলসীমায়। সৃষ্টি হয় ২০০ মিটার উচ্চতার মেগাসুনামি। এই ভূমিধস আর সুনামির কারণে টানা নয় দিন হাজার বার কেঁপে ওঠে পৃথিবী। এই ঘটনা ঘটে ২০২৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর।

ভূমিকম্প বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে আসা এই চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন বলছে, সেসময় কেঁপেছে পৃথিবীর উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু। সাধারণ ভূমিকম্পের তুলনায় কম্পনের মাত্রা বেশি না থাকায় সেটি খুব একটা অনুভূত হয়নি বলে জানান বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, সুনামির উচ্চতা ২০০ মিটারের অর্থ, এই সুনামি ইন্দোনেশিয়ায় ২০০৪ সালের সুনামি কিংবা জাপানের ২০১১ সালের সুনামির চেয়ে ভয়াবহ।

সম্প্রতি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা প্রতিবেদনে কাজ করেছে বিশ্বের ১৫ দেশের ৪০ প্রতিষ্ঠানের ৬৬ জন বিজ্ঞানী। প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ভূ-কম্পন তথ্য, স্যাটেলাইটের ছবি, ডিকসন ফিওর্দের পানির উচ্চতা, সুনামি স্রোতের উৎপত্তির বিস্তারিত। জানা যায়, গলে যাওয়া হিমবাহ পাথর ধরে রাখার সক্ষমতা হারানোয় ডিকসন ফিওর্দের ১ হাজার ২০০ মিটার উঁচু পর্বত ওপর থেকে ধসে পড়ে গেলো বছরের সেপ্টেম্বরে।

দশকের পর দশক ধরে চলা বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে গ্রিনল্যান্ডে বরফের স্তরের ঘনত্ব ১০ মিটারের মতো কমে গেছে। যে কারণে ওপরে থাকা পাহাড় পর্বতকে আগের মতো শক্তিশালীভাবে ধরে রাখতে পারছে না হিমবাহগুলো। এই প্রথম একসঙ্গে ভূমিধস আর সুনামি রেকর্ড করা হয়েছে গ্রিনল্যান্ডে। উষ্ণায়নের কারণে আর্কটিক অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন প্রকট আকার নিয়েছে। একই ধরনের ভূ-কম্পন রেকর্ড করা হয়েছে আলাস্কা, কানাডা, নরওয়ে আর চিলিতে।

সাধারণত সুনামি ভূ-গর্ভে ভূমিকম্পের কারণে হয়, সমুদ্রে প্রভাব ফেলে কয়েক ঘণ্টা পর। কিন্তু এই ঘটনায় ঢেউ আটকে থেকে সৃষ্টি করেছে কম্পন। ন্যাশনাল জিওলজিক্যাল সার্ভে ফর ডেনমার্ক এন্ড গ্রিনল্যান্ড বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনে হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে এখন এই ভূমিধস আর সুনামির ঘটনা আর্কটিকে নিয়মিত ঘটবে। যদিও বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রথমবারের মতো পুরো পৃথিবীতে অনুভূত হলো মাটির নিচ থেকে।