ঢাকা ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নতুন প্রশাসনও টেনে তুলতে পারছে না যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে!

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:০৩:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৫৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রবৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিলেও যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে উজ্জীবিত করতে ব্যর্থ স্টারমার প্রশাসন। ক্ষমতায় আসার দুই মাস পরেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না লেবার পার্টি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে জনরোষ যখন তুঙ্গে ঠিক তখনই অক্টোবরে ঘোষিত হতে যাওয়া বাজেট নিয়ে আগাম সতর্কতা দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ব্রিটেনের আগামী বাজেট সাধারণ মানুষদের জন্য সুখকর হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

ব্রেক্সিট, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ কিংবা কোভিড মহামারির জেরে বেহাল দশা হয়েছে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি। গত জুনের তুলনায় জুলাইয়ে দেশটিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল শূণ্যের কোঠায়।

দীর্ঘ ১৪ বছরের কনজারভেটিভ শাসনের অবসান শেষে গেল জুলাই মাসে লেবার পার্টি যখন যুক্তরাজ্যের মসনদে বসে তখন ব্রিটেনের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করাই ছিল তাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ। তবে, দায়িত্ব নেয়ার দুই মাস পেরোলেও ব্যাংক সুদের হার ৫ দশমিক ২৫ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা ছাড়া ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য অর্থনৈতিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারেনি দলটি।

এবার ব্রিটেনের আগামী জাতীয় বাজেটকে কেন্দ্র করে নতুন আলোচনার জন্ম দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। অক্টোবরে ঘোষিত হতে যাওয়া বাজেট নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন তার সরকারের অধীনে ঘোষিত প্রথম বাজেট কিছুটা চাপের কারণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি নিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির ভুল নীতি ও ঋণের খেসারত দিতে হবে স্টারমার প্রশাসনকেই।

ব্রিটেনের আইনজীবী নাশিত রহমান বলেন, ‘লেবার পার্টি নির্বাচনী মেনুফেস্টো দিয়েছিল কনজারভেটিভ পার্টির প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী। নির্বাচনের পর দেখা গেলো সরকারি অর্থের অবস্থা ভয়ংকর খারাপ। কনজারভেটিভ পার্টি মিথ্যাচার করেছে। সেই মিথ্যাচারের আলোকে নতুন করে অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করছে লেবার পার্টি। এবং তাদের প্রচুর ট্যাক্স আরোপ করতে হবে।’

আগামী বাজেটে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আয়কর বৃদ্ধির ইঙ্গিত না দিলেও বাজেট কাটছাঁট ও বেশকিছু খাতে কর বাড়ানো হতে পারে বলে ধারণা অর্থনীতি বিশ্লেষকদের।

ব্রিটেনের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্টের প্রফেসর ড. মুশফিক উদ্দিন বলেন, ‘নতুন সরকার হিসেবে লেবার পার্টি আসলে বেশকিছু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এর মধ্যে একটি অন্যতম হচ্ছে বাজেটের ডেফসিট। তারা বলছে গত সরকারের কাছ থেকে প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলারের ডেফসিট তারা হাইড করছে। ফিসকেল স্ট্যাটিস বলেছে হ্যাঁ, এই অভিযোগের মধ্যে কিছু সত্যতা রয়েছে। এটা পূরণ করার জন্য তাদের দু’টি রাস্তা আছে। একটি হচ্ছে তারা নতুন টাকা প্রিন্ট করতে পারে অথবা তারা সরকারি বডি বড় করতে পারে।’

দেশটির অর্থনীতির এমন পরিস্থিতির জন্য কনজারভেটিভ পার্টির দুর্নীতি ও ব্যর্থতাকে দায়ী করছে লেবার পার্টিও। এর আগে চ্যান্সেলর র‍্যাচেল রিভস এর নির্দেশে বিগত সরকার কোন খাতে কত ব্যয় করেছে এবং অর্থনীতির কোথায় কোথায় চ্যালেঞ্জ আছে, তা বোঝার জন্য খতিয়ান করে রাজস্ব বিভাগ। এতে দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের পাবলিক ফাইন্যান্সে প্রায় ২২ বিলিয়ন পাউন্ডের ঘাটতি রয়েছে। যার খেসারত দিতে হতে পারে ব্রিটিশ নাগরিকদের।

কনজারভেটিভ পার্টি অবশ্য আগে থেকেই দাবি করে আসছে, লেবার পার্টি ক্ষমতায় এলেই করের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে। যদিও স্টারমার প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও সাধারণ কর বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

নতুন প্রশাসনও টেনে তুলতে পারছে না যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে!

আপডেট সময় : ০৪:০৩:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রবৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিলেও যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে উজ্জীবিত করতে ব্যর্থ স্টারমার প্রশাসন। ক্ষমতায় আসার দুই মাস পরেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না লেবার পার্টি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে জনরোষ যখন তুঙ্গে ঠিক তখনই অক্টোবরে ঘোষিত হতে যাওয়া বাজেট নিয়ে আগাম সতর্কতা দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ব্রিটেনের আগামী বাজেট সাধারণ মানুষদের জন্য সুখকর হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

ব্রেক্সিট, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ কিংবা কোভিড মহামারির জেরে বেহাল দশা হয়েছে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি। গত জুনের তুলনায় জুলাইয়ে দেশটিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল শূণ্যের কোঠায়।

দীর্ঘ ১৪ বছরের কনজারভেটিভ শাসনের অবসান শেষে গেল জুলাই মাসে লেবার পার্টি যখন যুক্তরাজ্যের মসনদে বসে তখন ব্রিটেনের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করাই ছিল তাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ। তবে, দায়িত্ব নেয়ার দুই মাস পেরোলেও ব্যাংক সুদের হার ৫ দশমিক ২৫ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা ছাড়া ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য অর্থনৈতিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারেনি দলটি।

এবার ব্রিটেনের আগামী জাতীয় বাজেটকে কেন্দ্র করে নতুন আলোচনার জন্ম দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। অক্টোবরে ঘোষিত হতে যাওয়া বাজেট নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন তার সরকারের অধীনে ঘোষিত প্রথম বাজেট কিছুটা চাপের কারণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি নিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির ভুল নীতি ও ঋণের খেসারত দিতে হবে স্টারমার প্রশাসনকেই।

ব্রিটেনের আইনজীবী নাশিত রহমান বলেন, ‘লেবার পার্টি নির্বাচনী মেনুফেস্টো দিয়েছিল কনজারভেটিভ পার্টির প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী। নির্বাচনের পর দেখা গেলো সরকারি অর্থের অবস্থা ভয়ংকর খারাপ। কনজারভেটিভ পার্টি মিথ্যাচার করেছে। সেই মিথ্যাচারের আলোকে নতুন করে অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করছে লেবার পার্টি। এবং তাদের প্রচুর ট্যাক্স আরোপ করতে হবে।’

আগামী বাজেটে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আয়কর বৃদ্ধির ইঙ্গিত না দিলেও বাজেট কাটছাঁট ও বেশকিছু খাতে কর বাড়ানো হতে পারে বলে ধারণা অর্থনীতি বিশ্লেষকদের।

ব্রিটেনের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্টের প্রফেসর ড. মুশফিক উদ্দিন বলেন, ‘নতুন সরকার হিসেবে লেবার পার্টি আসলে বেশকিছু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এর মধ্যে একটি অন্যতম হচ্ছে বাজেটের ডেফসিট। তারা বলছে গত সরকারের কাছ থেকে প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলারের ডেফসিট তারা হাইড করছে। ফিসকেল স্ট্যাটিস বলেছে হ্যাঁ, এই অভিযোগের মধ্যে কিছু সত্যতা রয়েছে। এটা পূরণ করার জন্য তাদের দু’টি রাস্তা আছে। একটি হচ্ছে তারা নতুন টাকা প্রিন্ট করতে পারে অথবা তারা সরকারি বডি বড় করতে পারে।’

দেশটির অর্থনীতির এমন পরিস্থিতির জন্য কনজারভেটিভ পার্টির দুর্নীতি ও ব্যর্থতাকে দায়ী করছে লেবার পার্টিও। এর আগে চ্যান্সেলর র‍্যাচেল রিভস এর নির্দেশে বিগত সরকার কোন খাতে কত ব্যয় করেছে এবং অর্থনীতির কোথায় কোথায় চ্যালেঞ্জ আছে, তা বোঝার জন্য খতিয়ান করে রাজস্ব বিভাগ। এতে দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের পাবলিক ফাইন্যান্সে প্রায় ২২ বিলিয়ন পাউন্ডের ঘাটতি রয়েছে। যার খেসারত দিতে হতে পারে ব্রিটিশ নাগরিকদের।

কনজারভেটিভ পার্টি অবশ্য আগে থেকেই দাবি করে আসছে, লেবার পার্টি ক্ষমতায় এলেই করের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে। যদিও স্টারমার প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও সাধারণ কর বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।