০৯:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত রাজশাহীর চাষিরা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : ০২:০২:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১৪ দেখেছেন

মৌসুম ভেদে বছরজুড়ে রাজশাহীর সব উপজেলাতেই সবজির আবাদ হয়। বেশি লাভজনক ও উৎপাদনে কম সময় লাগায় মৌসুমের এ সময়ে আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত থাকে চাষিরা। আর এসব সবজি শীত শুরুর আগেই বাজারে উঠে, তাতে চাহিদা আর দাম দু’টোই ভালো পাওয়ার আশা চাষিদের। চলতি মৌসুমে জেলায় সবজি চাষে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

সপ্তাহখানেক আগের চাষ দেয়া নরম মাটিতে সারি বেঁধে লাগানো হয় ফুলকপির চারা। শরতের প্রখর রুদ্র তাপ উপেক্ষা করেই কেউ ব্যস্ত চারা রোপণে আবার কেউ পানি দিচ্ছে চারাগাছে। পাশেই কেউ আবার ব্যস্ত হয়ে থাকে বীজতলা থেকে চারা তোলার কাজে। দম ফেলার ফুরসত নেই, যেন বেলা শেষের আগেই শেষ করতে হবে বিশাল এই কর্মযজ্ঞ।

শীত আসতে এখনও বাকি মাস খানেক। তবে মৌসুমের এই সময়টিতেই ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিমসহ হরেক রকম আগাম জাতের শীতকালীন সবজির চাষ করেন রাজশাহীর দূর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামের চাষিরা। শীতের শুরুতে বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় এসব সবজি চাষের এটিই উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন চাষিরা।

একজন সবজি চাষি বলেন, ‘আগাম জাত লাগানো উদ্দেশ্য হচ্ছে কৃষকের লাভবান হওয়া। অনেক দাম পাওয়া যায়। কপিতে দামও ভালো পাওয়া যায়। গত বছর তিন হাজার টাকা মণ বিক্রি করেছিলাম। এবারও আশা করা যাচ্ছে যে, তিন হাজার টাকা মণ বিক্রি হবে।’

এসব চারাগাছে রোপণের ৪৫ থেকে ৫৫ দিনের মধ্যেই শুরু হয় ফল আসা। আর বিঘাপ্রতি জমিতে চারাগাছ রোপণ ও সার-কীটনাশকসহ অন্যান্য পরিচর্যায় খরচ হয় ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। তবে খরচের বিপরীতে বিঘায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার সবজি বিক্রির আশা চাষিদের। ফলে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর আগাম শীতকালীন সবজি চাষে আগ্রহ বেড়েছে তাদের।

একজন সবজি চাষি বলেন, ‘লাগানোর ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যেই ফুল কাটা হবে। শীত আসার আগেই কাটা হয়ে যাবে। বাজারে এই আগাম জাতের মানে আগাম সময়ে কপির চাহিদা থাকে সবার।’

খরিপ-২ মৌসুমে এবার জেলার ৫ হাজার ৫২৬ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে হরেক রকম আগাম শীতকালীন সবজির। তবে এরইমধ্যে দু’একটি আগাম জাতের শীতকালীন সবজি উঠেছে স্থানীয় বাজারে। চাহিদা ও স্বাদ খানিকটা কম হলেও চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সেসব সবজি।

একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘পাতাকপি, শিম, মূলা, ফুলকপি বিক্রি করছি। পালংশাকও বিক্রি করছি। পালংশাক ৩০ টাকায় কিনে ৪০ টাকায় বিক্রি করছি। আর মূলা ২০ টাকা কেজি কিনে ২৫ টাকায় বিক্রি করছি।’

দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় ফসলের ভয়াবহ ক্ষতি হলেও উত্তরের উঁচু বরেন্দ্র অঞ্চল ফসল উৎপাদনে সমৃদ্ধ। তাই এ মৌসুমেও সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. উম্মে সালমা বলেন, ‘যেহেতু আগাম শীতকালীন সবজিতে কৃষকরা লাভবান হয়। এবং এজন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। এবং তারা সে অনুযায়ী খুব সফলভাবে এ শীতকালীন সবজি উৎপাদন করছে। এই শীতকালীন সবজির প্রতি ভোক্তার যে চাহিদা তা মৌসুমের শুরুতেই ভোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে পারবো।’

চলতি মৌসুমে জেলায় আগাম শীতকালীন সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৪ হাজার ৯২০ টন। আর রবি মৌসুমে শীতকালীন সবজির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ চার হাজার টন।

শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত রাজশাহীর চাষিরা

আপডেট : ০২:০২:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মৌসুম ভেদে বছরজুড়ে রাজশাহীর সব উপজেলাতেই সবজির আবাদ হয়। বেশি লাভজনক ও উৎপাদনে কম সময় লাগায় মৌসুমের এ সময়ে আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত থাকে চাষিরা। আর এসব সবজি শীত শুরুর আগেই বাজারে উঠে, তাতে চাহিদা আর দাম দু’টোই ভালো পাওয়ার আশা চাষিদের। চলতি মৌসুমে জেলায় সবজি চাষে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

সপ্তাহখানেক আগের চাষ দেয়া নরম মাটিতে সারি বেঁধে লাগানো হয় ফুলকপির চারা। শরতের প্রখর রুদ্র তাপ উপেক্ষা করেই কেউ ব্যস্ত চারা রোপণে আবার কেউ পানি দিচ্ছে চারাগাছে। পাশেই কেউ আবার ব্যস্ত হয়ে থাকে বীজতলা থেকে চারা তোলার কাজে। দম ফেলার ফুরসত নেই, যেন বেলা শেষের আগেই শেষ করতে হবে বিশাল এই কর্মযজ্ঞ।

শীত আসতে এখনও বাকি মাস খানেক। তবে মৌসুমের এই সময়টিতেই ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিমসহ হরেক রকম আগাম জাতের শীতকালীন সবজির চাষ করেন রাজশাহীর দূর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামের চাষিরা। শীতের শুরুতে বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় এসব সবজি চাষের এটিই উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন চাষিরা।

একজন সবজি চাষি বলেন, ‘আগাম জাত লাগানো উদ্দেশ্য হচ্ছে কৃষকের লাভবান হওয়া। অনেক দাম পাওয়া যায়। কপিতে দামও ভালো পাওয়া যায়। গত বছর তিন হাজার টাকা মণ বিক্রি করেছিলাম। এবারও আশা করা যাচ্ছে যে, তিন হাজার টাকা মণ বিক্রি হবে।’

এসব চারাগাছে রোপণের ৪৫ থেকে ৫৫ দিনের মধ্যেই শুরু হয় ফল আসা। আর বিঘাপ্রতি জমিতে চারাগাছ রোপণ ও সার-কীটনাশকসহ অন্যান্য পরিচর্যায় খরচ হয় ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। তবে খরচের বিপরীতে বিঘায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার সবজি বিক্রির আশা চাষিদের। ফলে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর আগাম শীতকালীন সবজি চাষে আগ্রহ বেড়েছে তাদের।

একজন সবজি চাষি বলেন, ‘লাগানোর ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যেই ফুল কাটা হবে। শীত আসার আগেই কাটা হয়ে যাবে। বাজারে এই আগাম জাতের মানে আগাম সময়ে কপির চাহিদা থাকে সবার।’

খরিপ-২ মৌসুমে এবার জেলার ৫ হাজার ৫২৬ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে হরেক রকম আগাম শীতকালীন সবজির। তবে এরইমধ্যে দু’একটি আগাম জাতের শীতকালীন সবজি উঠেছে স্থানীয় বাজারে। চাহিদা ও স্বাদ খানিকটা কম হলেও চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সেসব সবজি।

একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘পাতাকপি, শিম, মূলা, ফুলকপি বিক্রি করছি। পালংশাকও বিক্রি করছি। পালংশাক ৩০ টাকায় কিনে ৪০ টাকায় বিক্রি করছি। আর মূলা ২০ টাকা কেজি কিনে ২৫ টাকায় বিক্রি করছি।’

দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় ফসলের ভয়াবহ ক্ষতি হলেও উত্তরের উঁচু বরেন্দ্র অঞ্চল ফসল উৎপাদনে সমৃদ্ধ। তাই এ মৌসুমেও সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. উম্মে সালমা বলেন, ‘যেহেতু আগাম শীতকালীন সবজিতে কৃষকরা লাভবান হয়। এবং এজন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। এবং তারা সে অনুযায়ী খুব সফলভাবে এ শীতকালীন সবজি উৎপাদন করছে। এই শীতকালীন সবজির প্রতি ভোক্তার যে চাহিদা তা মৌসুমের শুরুতেই ভোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে পারবো।’

চলতি মৌসুমে জেলায় আগাম শীতকালীন সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৪ হাজার ৯২০ টন। আর রবি মৌসুমে শীতকালীন সবজির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ চার হাজার টন।