হায়েনাদের আক্রমণকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে : মির্জা ফখরুল
- আপডেট সময় : ১০:১৩:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ৩৫৬ বার পড়া হয়েছে
গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের হামলায় শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক দিদারের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পরিষ্কার করে বলতে চাই, এখনও হায়েনারা (আওয়ামী লীগ) লুকিয়ে আছে, যেকোনো সময় আক্রমণ করবে। হায়েনাদের আক্রমণকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভায় এ কথা বলেন তিনি। বিএনপির পক্ষ থেকে এ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের জন্য দেশের মানুষ সবসময় আত্মত্যাগ করেছে ও প্রাণ দিয়েছে। ৭১-এ যখন আমার স্বাধীন হলাম, তখন ভেবেছিলাম সত্যিকার অর্থে আমরা একটা প্রকৃত গণতান্ত্রিক দেশ পাব। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, যারা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের দাবিদার ছিলেন প্রথম তাদের অর্থাৎ আওয়ামী লীগের হাতেই গণতন্ত্র ধ্বংস হয়। ৭৫’ সালে তারা একদলীয় বাকশাল কায়েম করে।
তিনি বলেন, এই দলটি আবার ২০০৮ সালে নির্বাচনের পর রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। ছাত্রদের আন্দোলনকে বারবার দমন করতে নির্যাতন, গুম খুন করেছে। ফলশ্রুতিতে জুলাই-আগস্টে ও ১৭ বছর এ দেশের গণতান্ত্রিক মানুষ জীবন দিয়েছেন, প্রাণ দিয়েছেন।
আন্দোলনে যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তাদের কথা তুলে ধরে অভিবাদন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্যালুট জানান বেগম খালেদা জিয়াকে, গণতন্ত্রের প্রশ্নে তিনি কখনো আপস করেননি, মাথা নোয়াননি। দীর্ঘ ছয় বছর কারাগারে ছিলেন। ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি মুক্ত হয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ আমরা স্বাধীন হয়েছি কিন্তু চারদিকে নাগিনীদের বিষাক্ত নিশ্বাস। তারা চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্নভাবে আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরির জন্য পাঁয়তারা করে যাচ্ছে।
নেতাকর্মীদের কোনোভাবেই ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তে পা না দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, গণঅভ্যুত্থান ও আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে আমরা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পেয়েছি। এই সরকারের কাছে দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা আকাশচুম্বী। মানুষের আশা, তারা একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের মাধ্যমে নির্বাচন দিয়ে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে।
স্মরণসভায় বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আওয়ামী লীগ দাঁড়ানোর জন্যও একটা মুরগির খোপ পায়নি। আগামী ১০০ বছরেও ছাত্র-জনতার কাছে তারা আস্থা পাবে না। ছাত্র-জনতার হত্যাসহ গত ১৫ বছরের গুম-খুন ও নির্যাতনের বিচার হলে আওয়ামী লীগ ‘কবর লীগে’ পরিণত হবে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের রক্তের সঙ্গে কেউ যেন বেঈমানি না করে তার জন্য সতর্ক থাকার আহ্বান জানান পার্থ।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব, সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন প্রমুখ।
স্মরণসভার শুরুতে জুলাই বিপ্লবে শহীদ ইয়ামিনের পিতা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ, এর থেকে ভারি কোনো বোঝা নেই। আর কোনো পিতা-মা-বোনকে এই নির্মম পরিস্থিতির শিকার যেন হতে না হয়। আমার ছেলেকে পুলিশের সাঁজোয়া যান থেকে টেনে-হিঁচড়ে ফেলে দেওয়ার দৃশ্য যেন আর দেখতে না হয়। এমন কোনো ইয়ামিন যেন পুলিশের ঘৃণার পাত্র না হয়। আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই।
শহীদের মর্যাদা দেওয়ার আহ্বান জানান জানিয়ে এসময় তিনি ‘সাঁজোয়া যান’ নিয়ে একটি স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।