১১:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রথমবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পের ছবি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া

যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দিতেই উত্তর কোরিয়া প্রথমবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পের ছবি প্রকাশ করেছে বলে। বিশ্লেষকদের মতে, অপ্রতিরোধ্য গতিতে পারমাণবিক সক্ষমতা বাড়িয়ে যাচ্ছে দেশটি। পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে কখনও স্বীকৃতি দেবে না বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।

ঠিক কতোগুলো পারমাণবিক অস্ত্র আছে উত্তর কোরিয়ার ভাণ্ডারে, তা স্পষ্টভাবে জানা না গেলেও সাম্প্রতিক এক হিসাবে বেরিয়েছে, সংখ্যাটি ৫০। এর সাথে আরও ৪০টি অস্ত্র নির্মাণের মতো পর্যাপ্ত উপকরণ আছে দেশটির কাছে।

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই প্রথমবার নিজেদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বিশ্ববাসীর কাছে উন্মুক্ত করলো কিম প্রশাসন। দেশের সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র পরিদর্শনের বেশ কিছু ছবি শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) প্রকাশ করে পিয়ংইয়ং।

পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র নির্মাণের অপরিহার্য উপাদান ইউরেনিয়াম। ইউরেনিয়াম কেন্দ্রের ছবি প্রকাশের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রকে উত্তর কোরিয়া বার্তা দিয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে। বলা হচ্ছে, নতুন মার্কিন প্রশাসনকে এটাই দেখাতে চান কিম যে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ অসম্ভব।

দক্ষিণ কোরিয়ার আসান ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজ রিসার্চ ফেলো ইয়াং উক বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া ক্রমাগত একটাই বার্তা দিয়ে যাচ্ছে যে পারমাণবিক অস্ত্র সক্ষমতার প্রশ্নে দেশটি আর পেছাবে না। তাই যদি কোনো আলোচনা হয়, তাহলে পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবেই কর্মপরিকল্পনা ও চুক্তি দাঁড় করতে হবে।’

কবে কিংবা কোন পরমাণু কেন্দ্র কিম পরিদর্শন করেছেন, তা জানা যায়নি। হতে পারে ইয়ংবিয়নে উত্তর কোরিয়ার প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পরমাণু বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র কিংবা অন্য কোনো গোপন স্থান। দীর্ঘদিন ধরেই বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছিলেন, অন্তত একটি হলেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র তো উত্তর কোরিয়ার আছে।

ইয়াং উক বলেন, ‘ছবিতে যে প্রকল্প দেখা যাচ্ছে, সেটি বছরে ২০ থেকে ২৫ কেজি উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন ইউরেনিয়াম উৎপাদনে সক্ষম। যা একটি পারমাণবিক বোমা তৈরিতে প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়ামের ৯০ শতাংশ। এ ধরনের কয়টি কেন্দ্র উত্তর কোরিয়ার আছে? তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর ভিত্তি করে দেশটির পারমাণবিক সক্ষমতার প্রকৃত তথ্য জানা সম্ভব।

উত্তর কোরিয়ার ইউরেনিয়াম উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনায় ক্ষুব্ধ হয়েছে প্রতিবেশি দক্ষিণ কোরিয়া।

দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিফিকেশন মিনিস্ট্রির মুখপাত্র কু বিয়ং-স্যাম বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার অবৈধভাবে পারমাণবিক অস্ত্র আধুনিকায়ন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বেশ কয়েকটি রেজোল্যুশনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। কোরীয় উপদ্বীপ ও সারা বিশ্বের শান্তির প্রতি এটি গুরুতর হুমকি। কোনো পরিস্থিতিতেই উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডারে আমরা বা বিশ্ব সম্প্রদায় স্বীকৃতি দেবে না এবং এটা দেশটিকে মানতেই হবে।’

এর আগে দেশের গোপন পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের পরিধি দ্রুতগতিতে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন কিম। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ সবশেষ প্রতিবেদনে জানায়, একইভাবে এবার ইউরেনিয়াম কেন্দ্রে উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে সাতজনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ৮৬০

প্রথমবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পের ছবি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া

আপডেট : ০২:১৭:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দিতেই উত্তর কোরিয়া প্রথমবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পের ছবি প্রকাশ করেছে বলে। বিশ্লেষকদের মতে, অপ্রতিরোধ্য গতিতে পারমাণবিক সক্ষমতা বাড়িয়ে যাচ্ছে দেশটি। পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে কখনও স্বীকৃতি দেবে না বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।

ঠিক কতোগুলো পারমাণবিক অস্ত্র আছে উত্তর কোরিয়ার ভাণ্ডারে, তা স্পষ্টভাবে জানা না গেলেও সাম্প্রতিক এক হিসাবে বেরিয়েছে, সংখ্যাটি ৫০। এর সাথে আরও ৪০টি অস্ত্র নির্মাণের মতো পর্যাপ্ত উপকরণ আছে দেশটির কাছে।

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই প্রথমবার নিজেদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বিশ্ববাসীর কাছে উন্মুক্ত করলো কিম প্রশাসন। দেশের সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র পরিদর্শনের বেশ কিছু ছবি শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) প্রকাশ করে পিয়ংইয়ং।

পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র নির্মাণের অপরিহার্য উপাদান ইউরেনিয়াম। ইউরেনিয়াম কেন্দ্রের ছবি প্রকাশের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রকে উত্তর কোরিয়া বার্তা দিয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে। বলা হচ্ছে, নতুন মার্কিন প্রশাসনকে এটাই দেখাতে চান কিম যে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ অসম্ভব।

দক্ষিণ কোরিয়ার আসান ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজ রিসার্চ ফেলো ইয়াং উক বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া ক্রমাগত একটাই বার্তা দিয়ে যাচ্ছে যে পারমাণবিক অস্ত্র সক্ষমতার প্রশ্নে দেশটি আর পেছাবে না। তাই যদি কোনো আলোচনা হয়, তাহলে পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবেই কর্মপরিকল্পনা ও চুক্তি দাঁড় করতে হবে।’

কবে কিংবা কোন পরমাণু কেন্দ্র কিম পরিদর্শন করেছেন, তা জানা যায়নি। হতে পারে ইয়ংবিয়নে উত্তর কোরিয়ার প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পরমাণু বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র কিংবা অন্য কোনো গোপন স্থান। দীর্ঘদিন ধরেই বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছিলেন, অন্তত একটি হলেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র তো উত্তর কোরিয়ার আছে।

ইয়াং উক বলেন, ‘ছবিতে যে প্রকল্প দেখা যাচ্ছে, সেটি বছরে ২০ থেকে ২৫ কেজি উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন ইউরেনিয়াম উৎপাদনে সক্ষম। যা একটি পারমাণবিক বোমা তৈরিতে প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়ামের ৯০ শতাংশ। এ ধরনের কয়টি কেন্দ্র উত্তর কোরিয়ার আছে? তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর ভিত্তি করে দেশটির পারমাণবিক সক্ষমতার প্রকৃত তথ্য জানা সম্ভব।

উত্তর কোরিয়ার ইউরেনিয়াম উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনায় ক্ষুব্ধ হয়েছে প্রতিবেশি দক্ষিণ কোরিয়া।

দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিফিকেশন মিনিস্ট্রির মুখপাত্র কু বিয়ং-স্যাম বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার অবৈধভাবে পারমাণবিক অস্ত্র আধুনিকায়ন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বেশ কয়েকটি রেজোল্যুশনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। কোরীয় উপদ্বীপ ও সারা বিশ্বের শান্তির প্রতি এটি গুরুতর হুমকি। কোনো পরিস্থিতিতেই উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডারে আমরা বা বিশ্ব সম্প্রদায় স্বীকৃতি দেবে না এবং এটা দেশটিকে মানতেই হবে।’

এর আগে দেশের গোপন পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের পরিধি দ্রুতগতিতে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন কিম। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ সবশেষ প্রতিবেদনে জানায়, একইভাবে এবার ইউরেনিয়াম কেন্দ্রে উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।