মিয়ানমারে টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ জনে। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ৮৯ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানা যায়, ইয়াগির জেরে ৬৫ হাজারের বেশি ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ।
এদিকে, গতকাল ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলায় বিদেশি সহায়তার জন্য বিরল আবেদন করেছেন মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সামরিক বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তা সরবরাহ করতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশি দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে গিয়ে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তবে এর আগে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বিদেশি মানবিক সহায়তায় বাধা বা বন্ধ করে দিয়েছিল।
দেশটির রাজধানী নেপিদোতেও বন্যার প্রভাব পড়েছে। সেখানে শত শত মানুষ আটকা পড়েছে। নেপিদোর তাতকন এলাকায় বন্যায় ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। ইয়াঙ্গুন ও মান্দালয়ের মধ্যকার রেল পরিবহন সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। মান্দালয়ের পিয়াবওয়ে শহরের একটি রেল সেতু বন্যায় ভেসে গেছে। নেপিদোর ইয়াঙ্গুন-মান্দালয় মহাসড়কও পানিতে ডুবে গেছে। ফলে যানবাহন চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে মান্দালয়, সাগাইন ও মগওয়ে অঞ্চলে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাত চলছে। চলমান সংঘাতে দেশটিতে ২৭ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভোগান্তি আরো বাড়িয়েছে।
এদিকে ভিয়েতনাম, লাওস, থাইল্যান্ডের কিছু অংশে টাইফুন ইয়াগির জেরে বন্যা দেখা দিয়েছে। ইয়াগির প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভিয়েতনাম। দেশটিতে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় আড়াই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।