ছাত্র-জনতার আন্দোলন কতটা নৃশংসভাবে দমনের চেষ্টা করেছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার, সে বিষয়ে এক মাস তদন্ত করবে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল। দেশের আটটি বিভাগীয় শহর ঘুরে সহিংসতার শিকার ব্যক্তি, ভুক্তভোগীদের স্বজন এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য নেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করবেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আট সদস্যের তথ্যানুসন্ধান দলের মধ্যে দু’জন সদস্য ঢাকায় আসছেন। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় পৌঁছাবেন আরও তিনজন সদস্য। মূলত মঙ্গলবারেই আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের কাজ শুরু হবে। তথ্যানুসন্ধান দলের অন্য সদস্যরাও আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ঢাকায় চলে আসবেন।
প্রাথমিকভাবে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল বাংলাদেশে চার সপ্তাহ অবস্থান করবে। তদন্তের জন্য প্রয়োজন হলে আরও কয়েক দিন তারা থাকতে পারে। তথ্যানুসন্ধান দলটি গত জুলাই ও আগস্টের শুরুর দিকে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ ১৫ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করবে। তদন্ত প্রতিবেদন আগামী নভেম্বরের শেষ সপ্তাহের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দেয়া হতে পারে।
১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভ ও পরবর্তী সহিংসতায় কমপক্ষে ৬৫০ বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও অস্থিরতা বিষয়ে প্রাথমিক বিশ্লেষণ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদন ১৫ আগস্ট জেনেভা থেকে প্রকাশিত হয়।
যেসব জায়গায় বিক্ষোভ, অসন্তোষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, সেসব জায়গায় যাবেন তথ্যানুসন্ধান দলের সদস্যরা। সাক্ষ্য গ্রহণ ও তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহের জন্য ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের কিছু এলাকা, চট্টগ্রাম, রংপুরসহ দেশের অন্তত আটটি বিভাগীয় ও জেলা শহরকে নির্বাচন করা হয়েছে।
জানা গেছে, নৃশংসতার তদন্তের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় সংস্থা ও বেসরকারি পক্ষগুলোর যুক্ততার যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা আমলে নেয়া হবে। তদন্তে ১৫ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধ, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যা, রাজনৈতিক ও বেসরকারি পক্ষগুলোর মাধ্যমে হত্যা ও নির্যাতন, জনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার নামে মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ, নির্বতনমূলক আটক ও গ্রেপ্তার, গুম, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা, সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি ইত্যাদি।