ঢাকা ০৩:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

১৩ বছরে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:১৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৫৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টানা ১৩ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার পর সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের মুখে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের বাসিন্দাদের প্রশ্ন, বাংলার মেয়ের হাতে বাংলার মেয়ের নিরাপত্তা-সুবিচার কোথায়? প্রশ্ন উঠছে, নিহত চিকিৎসকের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা আর চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবি পূরণে কেনো এমন কালক্ষেপণ করছেন মমতা?

কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক সহকর্মীকে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচারের দাবিতে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন গড়িয়েছে ষষ্ঠ সপ্তাহে। গেল ৯ আগস্ট থেকে কর্মবিরতির পাশাপাশি পাঁচ দাবিতে মঙ্গলবার থেকে রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবনের বাইরেও বসেছেন ধর্নায়। দাবি না মানা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যেতে অনড় তারা।

একজন চিকিৎসক বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যখন ভোটের প্রচার করেন, তখন বড় বড় করে লেখা থাকে বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়, তবে বাংলা নিজের মেয়ের বিচার কেনো দিচ্ছে না এখন।’

জুনিয়র চিকিৎসকদের দীর্ঘ কর্মবিরতিতে অচলপ্রায় পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য খাত। এমন পরিস্থিতিতে ন্যায়বিচার, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ দ্রুত দাবি আদায়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতকে সচল করতে আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন প্রবীণ চিকিৎসকরাও। এমনকি প্রয়োজনে তারাও কর্মবিরতিতে যাবেন বলেও সতর্ক করেন প্রশাসনকে।

একজন চিকিৎসক বলেন, ‘আম,রা সিনিয়র চিকিৎসকরা জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে সর্বদাই আছি। যদি তাদের ওপর কোনোরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেমে আসে তাহলে আমরা বধ্য হবো কর্মবিরতির মতো বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে।’

দাবি পাঁচ দফা হলেও একটা দফাতেই আটকে আছে চিকিৎসকদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের আলোচনা। সেই আলোচনার অপেক্ষায় রাজ্যবাসী। বিক্ষুব্ধ জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে বৈঠকটি সরাসরি সম্প্রচার বা লাইভ স্ট্রিমিং করতে হবে, যেন আলোচনায় কী কথা হচ্ছে না হচ্ছে, সেসব যেন জানতে পারেন সারা বাংলার মানুষ। কিন্তু এতে কোনোভাবেই রাজি নয় রাজ্য সরকার। নিহত চিকিৎসকের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত আর চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের মতো সাধারণ দাবি পূরণে মমতার কালক্ষেপণে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।

গেলো সপ্তাহে রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নে বৈঠকের জন্য দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেও আন্দোলনকারীদের দেখা পাননি বলে দাবি করেন মমতা। যদিও দেননি আলোচনা লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সুযোগ। তার দাবি, সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন মামলা বলে এ নিয়ে বৈঠক সরাসরি সম্প্রচারের সুযোগ নেই। এ যুক্তি মানতে চাননি জুনিয়র চিকিৎসকরা। যদিও আইন বলছে ভিন্ন কথা।

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘মিটিং লাইভ স্ট্রিমিং হবে কি হবে না? এটা বিচারাধীন ব্যাপার না, হতে পারে না। মিটিং ডাকা বা আলোচনা করার কথা সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারে বলা আছে। কীভাবে আলোচনা হবে তা বলা থাকতে পারে না।’

জ্যোতি বসুর পর পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক হাজার একর কৃষিজমি পুঁজিবাদীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নয় হাজারের বেশি ভূমিমালিককে ফিরিয়ে দিতে প্রতিবাদের মশাল ধরা নেত্রী তিনি। সেই মমতাই টানা ১৩ বছরের বেশি সময়ের ক্ষমতায় সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন এখন। চতুর্দিক থেকে চাপ বাড়তে থাকার মধ্যে কোন পথ বেছে নেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান, সেটাই দেখার অপেক্ষায় পশ্চিমবঙ্গবাসী।

নিউজটি শেয়ার করুন

১৩ বছরে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা

আপডেট সময় : ০১:১৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

টানা ১৩ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার পর সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের মুখে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের বাসিন্দাদের প্রশ্ন, বাংলার মেয়ের হাতে বাংলার মেয়ের নিরাপত্তা-সুবিচার কোথায়? প্রশ্ন উঠছে, নিহত চিকিৎসকের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা আর চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবি পূরণে কেনো এমন কালক্ষেপণ করছেন মমতা?

কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক সহকর্মীকে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় ন্যায়বিচারের দাবিতে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন গড়িয়েছে ষষ্ঠ সপ্তাহে। গেল ৯ আগস্ট থেকে কর্মবিরতির পাশাপাশি পাঁচ দাবিতে মঙ্গলবার থেকে রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবনের বাইরেও বসেছেন ধর্নায়। দাবি না মানা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যেতে অনড় তারা।

একজন চিকিৎসক বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যখন ভোটের প্রচার করেন, তখন বড় বড় করে লেখা থাকে বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়, তবে বাংলা নিজের মেয়ের বিচার কেনো দিচ্ছে না এখন।’

জুনিয়র চিকিৎসকদের দীর্ঘ কর্মবিরতিতে অচলপ্রায় পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য খাত। এমন পরিস্থিতিতে ন্যায়বিচার, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ দ্রুত দাবি আদায়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতকে সচল করতে আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন প্রবীণ চিকিৎসকরাও। এমনকি প্রয়োজনে তারাও কর্মবিরতিতে যাবেন বলেও সতর্ক করেন প্রশাসনকে।

একজন চিকিৎসক বলেন, ‘আম,রা সিনিয়র চিকিৎসকরা জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে সর্বদাই আছি। যদি তাদের ওপর কোনোরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেমে আসে তাহলে আমরা বধ্য হবো কর্মবিরতির মতো বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে।’

দাবি পাঁচ দফা হলেও একটা দফাতেই আটকে আছে চিকিৎসকদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের আলোচনা। সেই আলোচনার অপেক্ষায় রাজ্যবাসী। বিক্ষুব্ধ জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে বৈঠকটি সরাসরি সম্প্রচার বা লাইভ স্ট্রিমিং করতে হবে, যেন আলোচনায় কী কথা হচ্ছে না হচ্ছে, সেসব যেন জানতে পারেন সারা বাংলার মানুষ। কিন্তু এতে কোনোভাবেই রাজি নয় রাজ্য সরকার। নিহত চিকিৎসকের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত আর চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের মতো সাধারণ দাবি পূরণে মমতার কালক্ষেপণে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।

গেলো সপ্তাহে রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নে বৈঠকের জন্য দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেও আন্দোলনকারীদের দেখা পাননি বলে দাবি করেন মমতা। যদিও দেননি আলোচনা লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সুযোগ। তার দাবি, সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন মামলা বলে এ নিয়ে বৈঠক সরাসরি সম্প্রচারের সুযোগ নেই। এ যুক্তি মানতে চাননি জুনিয়র চিকিৎসকরা। যদিও আইন বলছে ভিন্ন কথা।

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘মিটিং লাইভ স্ট্রিমিং হবে কি হবে না? এটা বিচারাধীন ব্যাপার না, হতে পারে না। মিটিং ডাকা বা আলোচনা করার কথা সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারে বলা আছে। কীভাবে আলোচনা হবে তা বলা থাকতে পারে না।’

জ্যোতি বসুর পর পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক হাজার একর কৃষিজমি পুঁজিবাদীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নয় হাজারের বেশি ভূমিমালিককে ফিরিয়ে দিতে প্রতিবাদের মশাল ধরা নেত্রী তিনি। সেই মমতাই টানা ১৩ বছরের বেশি সময়ের ক্ষমতায় সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন এখন। চতুর্দিক থেকে চাপ বাড়তে থাকার মধ্যে কোন পথ বেছে নেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান, সেটাই দেখার অপেক্ষায় পশ্চিমবঙ্গবাসী।