ঢাকা ১১:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্প বাতিল : পরিকল্পনা উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৭:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বিগত সময়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বিপুল সংখ্যক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের গতি এক থাকতো না। অপ্রয়োজনীয় রাজনৈতিক প্রকল্পও থাকতো। বিগত সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সব প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, চলমান প্রকল্পগুলো কোন পর্যায়ে রয়েছে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। কাজেই আগের মতো একনেক সভা মানেই যেখানে অর্থ ব্যয়ের কর্মযজ্ঞ ছিল, এখন সে পরিধি কমে আসবে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিকেল ৩টায় শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। রীতি অনুযায়ী সবসময় একনেক সভা পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হলেও এবার তা পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো তেজগাঁওয়ের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অনুষ্ঠিত হলো। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, বিদেশি অর্থায়ন পাওয়া যাবে এমন প্রকল্প গ্রহণে গুরুত্ব দেবে সরকার। বহু বছর আগের অনেক প্রকল্প পড়ে আছে। এগুলোতে বিদেশি সহযোগীদের নজরদারি বেশি থাকে। অনিয়ম করা যায় না। তাই ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ কম থাকে। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও অগ্রাধিকারের সঙ্গে মিলে এমন কিছু নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, নিজেদের জন্য গ্যাসকূপ খনন না করে কেন বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির ব্যয়বহুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা বোধগম্য না। যেসব কূপ উন্নয়ন বা খননের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাও দেওয়া হয়েছে বিদেশি কোম্পানিকে। এসব ক্ষেত্রে কতটা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। নিজেদের গ্যাসের সম্ভাবনা থাকতে এলএনজি আমদানি ভ্রান্ত নীতি। এতদিন যে অর্থনীতি চালিয়ে এসেছি এলডিসি উত্তোরণের পর দ্বিপাক্ষীক চুক্তি করতে হবে। শিক্ষা প্রযুক্তিতে আরো প্রকল্প নিতে হবে। মানবসম্পদে অনেক পিছিয়ে আছি আমরা।

তিনি বলেন, এর মধ্যে কিছু প্রকল্প আছে অনেকদিন ঝুলে আছে সেগুলো দেখা হবে। নিরপেক্ষভাবে অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য নতুন প্রকল্পকগুলোকেই শুধুমাত্র একনেকে অনুমোদন হবে। বৈদেশিক সাহায্য পুষ্ট প্রকল্প তরান্বিত করা। বিশ্বব্যাংক চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রকল্প খুব কম। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া চলমান প্রকল্প কোন পর্যায়ে আছে সেগুলো যাচাই বাছাই করতে চান উপদেষ্টারা। বৈদেশিক সাহায্য পুষ্ট প্রকল্প একনেকে পাস করা হবে। তারপর সেগুলো নজরে রাখবে। বিদেশি অর্থের পরিপূর্ণ ব্যবহার করা হবে বলেও জানান উপদেষ্টা।

উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ আরও জানান, নিরপেক্ষভাবে অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য নতুন প্রকল্পকেই একনেকে অনুমোদন হবে। নিজেদের গ্যাসের সম্ভাবনা থাকতে এলএনজি আমদানি ভ্রান্ত নীতি।

নতুন সরকারের প্রথম একনেক সভায় মোট চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২২২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৯৬৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ১০০ কোটি ১৬ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৫৮ কোটি ১৬ লাখ পাওয়া যাবে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে দুটি সংশোধিত ও দুটি নতুন প্রকল্প রয়েছে।

একনেকে অনুমোদিত চারটি প্রকল্প হলো– শিল্প ও শক্তি বিভাগের বাখরাবাদ-মেঘনাঘাট-হরিপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প (১ম সংশোধিত), ২টি মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ (সুন্দলপুর-৪ ও শ্রীকাইল-৫) এবং ২টি অনুসন্ধান কূপ (সুন্দরপুর সাউথ-১ ও জামালপুর-১) খনন প্রকল্প, আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত) তথ্য আপা নামক প্রকল্প এবং কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্প (২য় পর্যায়) প্রকল্প।

নিউজটি শেয়ার করুন

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রকল্প বাতিল : পরিকল্পনা উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০৪:৩৭:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বিগত সময়ে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বিপুল সংখ্যক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের গতি এক থাকতো না। অপ্রয়োজনীয় রাজনৈতিক প্রকল্পও থাকতো। বিগত সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সব প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, চলমান প্রকল্পগুলো কোন পর্যায়ে রয়েছে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। কাজেই আগের মতো একনেক সভা মানেই যেখানে অর্থ ব্যয়ের কর্মযজ্ঞ ছিল, এখন সে পরিধি কমে আসবে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিকেল ৩টায় শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। রীতি অনুযায়ী সবসময় একনেক সভা পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হলেও এবার তা পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো তেজগাঁওয়ের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অনুষ্ঠিত হলো। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, বিদেশি অর্থায়ন পাওয়া যাবে এমন প্রকল্প গ্রহণে গুরুত্ব দেবে সরকার। বহু বছর আগের অনেক প্রকল্প পড়ে আছে। এগুলোতে বিদেশি সহযোগীদের নজরদারি বেশি থাকে। অনিয়ম করা যায় না। তাই ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ কম থাকে। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও অগ্রাধিকারের সঙ্গে মিলে এমন কিছু নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, নিজেদের জন্য গ্যাসকূপ খনন না করে কেন বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির ব্যয়বহুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা বোধগম্য না। যেসব কূপ উন্নয়ন বা খননের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাও দেওয়া হয়েছে বিদেশি কোম্পানিকে। এসব ক্ষেত্রে কতটা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। নিজেদের গ্যাসের সম্ভাবনা থাকতে এলএনজি আমদানি ভ্রান্ত নীতি। এতদিন যে অর্থনীতি চালিয়ে এসেছি এলডিসি উত্তোরণের পর দ্বিপাক্ষীক চুক্তি করতে হবে। শিক্ষা প্রযুক্তিতে আরো প্রকল্প নিতে হবে। মানবসম্পদে অনেক পিছিয়ে আছি আমরা।

তিনি বলেন, এর মধ্যে কিছু প্রকল্প আছে অনেকদিন ঝুলে আছে সেগুলো দেখা হবে। নিরপেক্ষভাবে অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য নতুন প্রকল্পকগুলোকেই শুধুমাত্র একনেকে অনুমোদন হবে। বৈদেশিক সাহায্য পুষ্ট প্রকল্প তরান্বিত করা। বিশ্বব্যাংক চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রকল্প খুব কম। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া চলমান প্রকল্প কোন পর্যায়ে আছে সেগুলো যাচাই বাছাই করতে চান উপদেষ্টারা। বৈদেশিক সাহায্য পুষ্ট প্রকল্প একনেকে পাস করা হবে। তারপর সেগুলো নজরে রাখবে। বিদেশি অর্থের পরিপূর্ণ ব্যবহার করা হবে বলেও জানান উপদেষ্টা।

উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ আরও জানান, নিরপেক্ষভাবে অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য নতুন প্রকল্পকেই একনেকে অনুমোদন হবে। নিজেদের গ্যাসের সম্ভাবনা থাকতে এলএনজি আমদানি ভ্রান্ত নীতি।

নতুন সরকারের প্রথম একনেক সভায় মোট চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২২২ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৯৬৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ১০০ কোটি ১৬ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৫৮ কোটি ১৬ লাখ পাওয়া যাবে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে দুটি সংশোধিত ও দুটি নতুন প্রকল্প রয়েছে।

একনেকে অনুমোদিত চারটি প্রকল্প হলো– শিল্প ও শক্তি বিভাগের বাখরাবাদ-মেঘনাঘাট-হরিপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প (১ম সংশোধিত), ২টি মূল্যায়ন কাম উন্নয়ন কূপ (সুন্দলপুর-৪ ও শ্রীকাইল-৫) এবং ২টি অনুসন্ধান কূপ (সুন্দরপুর সাউথ-১ ও জামালপুর-১) খনন প্রকল্প, আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত) তথ্য আপা নামক প্রকল্প এবং কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্প (২য় পর্যায়) প্রকল্প।