০৬:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পোশাক শিল্পের অস্থিরতায় হাতছাড়া হচ্ছে বিপুল অর্ডার

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : ০১:৪৯:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৯ দেখেছেন

পোশাক শিল্পে অস্থিরতায় ভাবমূর্তি সংকটে হাতছাড়া হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্ডার। বিদেশি ক্রেতাদের কাছে নেতিবাচক বার্তা যাওয়ায় গেল দুই মাসে অন্তত তিন বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাকের অর্ডার ভারত, ভিয়েতনামসহ প্রতিযোগী দেশে চলে গেছে বলে দাবি খাত সংশ্লিষ্টদের। এই অবস্থায় রপ্তানি কমার পাশাপাশি দীর্ঘ দিন প্রণোদনার টাকা আটকে থাকায় তারল্য সংকটে পড়েছেন পোশাক কারখানার মালিকরা। সংকট কাটাতে বেতন ভাতা পরিশোধে স্বল্প সুদে ঋণ এবং এই খাতকে স্থিতিশীল রাখতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রোডম্যাপ চান তারা।

গত ৪০ বছরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দেশের শীর্ষ রপ্তানি খাতে পরিণত হয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প। যদিও বৈশ্বিক মন্দায় ক্রয়াদেশ ও পোশাকের দাম কমে যাওয়াসহ গত তিন বছর ধরে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে এই খাত।

সবশেষ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও বন্যায় স্বাভাবিক আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন রপ্তানিকারকরা। এই ধকল না কাটতেই গাজীপুর, আশুলিয়াসহ ঢাকার বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা ও শ্রমিক অসন্তোষের জেরে ইমেজ সংকটে পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান এই খাত।

এমন প্রেক্ষাপটে গেল দুই মাসে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ক্রয়াদেশ হাতছাড়া হয়েছে বলে দাবি শিল্প মালিকদের। সংকট উত্তরণে নীতি সহায়তার পাশাপাশি সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা চান তারা।

বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসিরউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এটার প্রতি সরকারের সুনজর থাকতে হবে। পট পরিবর্তনের পর নতুন সরকার। এটার প্রতি যদি নজর না থাকে তাহলে আরো বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়তে হতে পারে।’

এশিয়ান গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘বর্হিবিশ্বে বায়ারদের কাছে আমাদের একটি নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট অবশ্যই আছে। আর যদি ঢাকাতেই বড় কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে চট্টগ্রামে তার একটা সাইড ইফেক্ট থাকবেই।’

একের পর এক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলো নিয়ে শঙ্কিত পোশাক শিল্প মালিকরা। গত দুই মাসে রপ্তানি কমেছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। আসছে হলিডে সিজনের প্রত্যাশিত ক্রয়াদেশ পাচ্ছেনা কারখানাগুলো। এতে বেশি বিপদে পড়েছে মধ্যম সারির পোশাক কারখানাগুলো।

বিজিএমই নেতাদের অভিযোগ, উদ্যোক্তাদের আর্থিক সংকট নিরসনে ব্যাংকগুলো কোন সহায়তা করছে না। সরকার পোশাক কারখানাগুলোকে এক মাসের বেতনের সমপরমিাণ ঋণ দেয়ার নির্দেশনা দিলেও ব্যাংকগুলো উচ্চ সুদ দাবি করায় তা কোন কাজ আসছে না বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘কিছু কিছু ব্যাংক থেকে আমরা সেই সহযোগিতা পাচ্ছি না এবং সেটার সুদ হার অনেক বেশি। সুতরাং যাদের বেশি প্রয়োজন, ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প, যাদের সমস্যা আছে ওরাই কিন্তু টাকা পাচ্ছে না।’

সরকার প্রণোদনার অর্থ ছাড় না করায় আর্থিক সংকট আরো প্রকট হয়েছে বলে অভিযোগ উদ্যোক্তাদের। তারা বলছেন, এলডিসি উত্তরণের অজুহাতে এমনিতেই প্রণোদনা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, দুই ঈদ ছাড়া প্রণোদনার টাকা না দেয়ায় কঠিন হয়ে পড়েছে খরচ সমন্বয় করা।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পণ্য ও সেবাখাতে মোট রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৫৭ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হলেও পোশাক খাতে লক্ষ্য এখনো ঘোষণা করেনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী বিদায়ী অর্থবছরে পোশাক খাতে রপ্তানি কমেছে।

তাপপ্রবাহ নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

পোশাক শিল্পের অস্থিরতায় হাতছাড়া হচ্ছে বিপুল অর্ডার

আপডেট : ০১:৪৯:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পোশাক শিল্পে অস্থিরতায় ভাবমূর্তি সংকটে হাতছাড়া হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্ডার। বিদেশি ক্রেতাদের কাছে নেতিবাচক বার্তা যাওয়ায় গেল দুই মাসে অন্তত তিন বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাকের অর্ডার ভারত, ভিয়েতনামসহ প্রতিযোগী দেশে চলে গেছে বলে দাবি খাত সংশ্লিষ্টদের। এই অবস্থায় রপ্তানি কমার পাশাপাশি দীর্ঘ দিন প্রণোদনার টাকা আটকে থাকায় তারল্য সংকটে পড়েছেন পোশাক কারখানার মালিকরা। সংকট কাটাতে বেতন ভাতা পরিশোধে স্বল্প সুদে ঋণ এবং এই খাতকে স্থিতিশীল রাখতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রোডম্যাপ চান তারা।

গত ৪০ বছরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দেশের শীর্ষ রপ্তানি খাতে পরিণত হয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প। যদিও বৈশ্বিক মন্দায় ক্রয়াদেশ ও পোশাকের দাম কমে যাওয়াসহ গত তিন বছর ধরে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে এই খাত।

সবশেষ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও বন্যায় স্বাভাবিক আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন রপ্তানিকারকরা। এই ধকল না কাটতেই গাজীপুর, আশুলিয়াসহ ঢাকার বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা ও শ্রমিক অসন্তোষের জেরে ইমেজ সংকটে পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান এই খাত।

এমন প্রেক্ষাপটে গেল দুই মাসে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ক্রয়াদেশ হাতছাড়া হয়েছে বলে দাবি শিল্প মালিকদের। সংকট উত্তরণে নীতি সহায়তার পাশাপাশি সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা চান তারা।

বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসিরউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এটার প্রতি সরকারের সুনজর থাকতে হবে। পট পরিবর্তনের পর নতুন সরকার। এটার প্রতি যদি নজর না থাকে তাহলে আরো বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়তে হতে পারে।’

এশিয়ান গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘বর্হিবিশ্বে বায়ারদের কাছে আমাদের একটি নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট অবশ্যই আছে। আর যদি ঢাকাতেই বড় কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে চট্টগ্রামে তার একটা সাইড ইফেক্ট থাকবেই।’

একের পর এক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সামনের দিনগুলো নিয়ে শঙ্কিত পোশাক শিল্প মালিকরা। গত দুই মাসে রপ্তানি কমেছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। আসছে হলিডে সিজনের প্রত্যাশিত ক্রয়াদেশ পাচ্ছেনা কারখানাগুলো। এতে বেশি বিপদে পড়েছে মধ্যম সারির পোশাক কারখানাগুলো।

বিজিএমই নেতাদের অভিযোগ, উদ্যোক্তাদের আর্থিক সংকট নিরসনে ব্যাংকগুলো কোন সহায়তা করছে না। সরকার পোশাক কারখানাগুলোকে এক মাসের বেতনের সমপরমিাণ ঋণ দেয়ার নির্দেশনা দিলেও ব্যাংকগুলো উচ্চ সুদ দাবি করায় তা কোন কাজ আসছে না বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘কিছু কিছু ব্যাংক থেকে আমরা সেই সহযোগিতা পাচ্ছি না এবং সেটার সুদ হার অনেক বেশি। সুতরাং যাদের বেশি প্রয়োজন, ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্প, যাদের সমস্যা আছে ওরাই কিন্তু টাকা পাচ্ছে না।’

সরকার প্রণোদনার অর্থ ছাড় না করায় আর্থিক সংকট আরো প্রকট হয়েছে বলে অভিযোগ উদ্যোক্তাদের। তারা বলছেন, এলডিসি উত্তরণের অজুহাতে এমনিতেই প্রণোদনা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, দুই ঈদ ছাড়া প্রণোদনার টাকা না দেয়ায় কঠিন হয়ে পড়েছে খরচ সমন্বয় করা।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পণ্য ও সেবাখাতে মোট রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৫৭ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হলেও পোশাক খাতে লক্ষ্য এখনো ঘোষণা করেনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী বিদায়ী অর্থবছরে পোশাক খাতে রপ্তানি কমেছে।