০৩:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সাবেক মন্ত্রী-এমপির সিন্ডিকেট

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : ০১:০২:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৬ দেখেছেন

সাবেক সরকারের মন্ত্রী, এমপি আর এজেন্সি মিলে গড়ে তুলেছিল মালয়েশিয়া সিন্ডিকেট। শ্রমিক পাঠানোর নামে হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে তারা। ৭৮ হাজার টাকায় শ্রমিক নেওয়ার কথা থাকলেও এ সিন্ডিকেট আদায় করতো ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা। তাদের অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে টাকা দিয়েও মালয়েশিয়া যেতে পারেনি হাজারো শ্রমিক। পাওনা টাকার জন্য এজেন্সিতে ঘুরছেন শ্রমিকরা।

মালয়েশিয়ায় গিয়ে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের সেলিম। কিন্তু চুক্তিপত্র অনুযায়ী কাজ না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে দেশে ফিরতে হয় তাকে। সেলিম বলেন, ‘জীবন বাঁচানোর জন্য টাকার মায়া ত্যাগ করে আবার আমি দেশে চলে এসেছি। আয়না ঘরে মানুষকে যেভাবে কষ্টে রাখা হয় মালয়েশিয়ার প্রবাসী মানুষগুলোও ঠিক একই রকম কষ্টের মধ্যে আছে।’

২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে ৫ লাখ কর্মী নেয়ার চুক্তি করে মালয়েশিয়া। কিন্তু ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের মালিক রুহুল আমিন স্বপন, সাবেক ৪ সংসদ সদস্য ও ২৫ এজেন্সি মিলে তৈরি করে সিন্ডিকেট।

এর মধ্যে সাবেক এমপি নিজাম হাজারীর স্নিগ্ধা ওভারসিজ লিমিটেড, সাবেক এমপি অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাসুদউদ্দিন চৌধুরীর ফাইভ এম ইন্টারন্যাশনাল, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমেরী কামালের অরবিটালস এন্টারপ্রাইজ ও তার মেয়ে নাফিসা কামালের অরবিটালস ইন্টারন্যাশনাল ছাড়াও ঢাকা-২০ আসনের সাবেক এমপি বেনজীর আহমেদের প্রতিষ্ঠান আহমেদ ইন্টারন্যাশনাল এ সিন্ডিকেটের অন্যতম।

মালয়েশিয়ায় যেতে সরকার ৭৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করলেও ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা নেয় এই চক্র। কিন্তু অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে গত মে মাসে বন্ধ হয়ে যায় শ্রমবাজার। ফলে টাকা দিয়েও যেতে পারেনি হাজারো শ্রমিক।

একজন ভুক্তভোগী বলেন, ‘টাকা দিতে চায় ৭৮ হাজার, কিন্তু আমরা টাকা দিয়েছি ৬ লাখ। এখন তো আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।’

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে অনেক এজেন্সি কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে, কেউ কেউ পালিয়েছে। কিন্তু এখনো পাওনা টাকার জন্য এজেন্সিগুলোতে ঘুরছেন শ্রমিকরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিন্ডিকেট বন্ধে প্রয়োজন আইনের কঠোর প্রয়োগ।অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, ‘অভিবাসনের যে আইন ২০১৩ সালের, এগুলো অভিবাসনবান্ধব পুরোপুরি না। রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধেও যদি অভিযোগ আসে সেটাও আমরা দেখেছি অনেক সময় ধামাচাপা পড়ে যায়। অথবা সেটাকে একটা লঘু শাস্তির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।’

গত ১৫ বছরে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছে ৩ বার।

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সাবেক মন্ত্রী-এমপির সিন্ডিকেট

আপডেট : ০১:০২:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সাবেক সরকারের মন্ত্রী, এমপি আর এজেন্সি মিলে গড়ে তুলেছিল মালয়েশিয়া সিন্ডিকেট। শ্রমিক পাঠানোর নামে হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে তারা। ৭৮ হাজার টাকায় শ্রমিক নেওয়ার কথা থাকলেও এ সিন্ডিকেট আদায় করতো ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা। তাদের অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে টাকা দিয়েও মালয়েশিয়া যেতে পারেনি হাজারো শ্রমিক। পাওনা টাকার জন্য এজেন্সিতে ঘুরছেন শ্রমিকরা।

মালয়েশিয়ায় গিয়ে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের সেলিম। কিন্তু চুক্তিপত্র অনুযায়ী কাজ না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে দেশে ফিরতে হয় তাকে। সেলিম বলেন, ‘জীবন বাঁচানোর জন্য টাকার মায়া ত্যাগ করে আবার আমি দেশে চলে এসেছি। আয়না ঘরে মানুষকে যেভাবে কষ্টে রাখা হয় মালয়েশিয়ার প্রবাসী মানুষগুলোও ঠিক একই রকম কষ্টের মধ্যে আছে।’

২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে ৫ লাখ কর্মী নেয়ার চুক্তি করে মালয়েশিয়া। কিন্তু ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের মালিক রুহুল আমিন স্বপন, সাবেক ৪ সংসদ সদস্য ও ২৫ এজেন্সি মিলে তৈরি করে সিন্ডিকেট।

এর মধ্যে সাবেক এমপি নিজাম হাজারীর স্নিগ্ধা ওভারসিজ লিমিটেড, সাবেক এমপি অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাসুদউদ্দিন চৌধুরীর ফাইভ এম ইন্টারন্যাশনাল, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমেরী কামালের অরবিটালস এন্টারপ্রাইজ ও তার মেয়ে নাফিসা কামালের অরবিটালস ইন্টারন্যাশনাল ছাড়াও ঢাকা-২০ আসনের সাবেক এমপি বেনজীর আহমেদের প্রতিষ্ঠান আহমেদ ইন্টারন্যাশনাল এ সিন্ডিকেটের অন্যতম।

মালয়েশিয়ায় যেতে সরকার ৭৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করলেও ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা নেয় এই চক্র। কিন্তু অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে গত মে মাসে বন্ধ হয়ে যায় শ্রমবাজার। ফলে টাকা দিয়েও যেতে পারেনি হাজারো শ্রমিক।

একজন ভুক্তভোগী বলেন, ‘টাকা দিতে চায় ৭৮ হাজার, কিন্তু আমরা টাকা দিয়েছি ৬ লাখ। এখন তো আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।’

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে অনেক এজেন্সি কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে, কেউ কেউ পালিয়েছে। কিন্তু এখনো পাওনা টাকার জন্য এজেন্সিগুলোতে ঘুরছেন শ্রমিকরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিন্ডিকেট বন্ধে প্রয়োজন আইনের কঠোর প্রয়োগ।অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, ‘অভিবাসনের যে আইন ২০১৩ সালের, এগুলো অভিবাসনবান্ধব পুরোপুরি না। রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধেও যদি অভিযোগ আসে সেটাও আমরা দেখেছি অনেক সময় ধামাচাপা পড়ে যায়। অথবা সেটাকে একটা লঘু শাস্তির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।’

গত ১৫ বছরে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছে ৩ বার।