০৪:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সারা দেশে দাম বেড়েছে ডিম–মুরগির, সবজিতে অস্বস্তি

গত ১৫ সেপ্টেম্বর মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। আজ পাঁচদিন পেরোলেও বাজারে কেউই মানছে না সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম। ফলে এই দুই পণ্য নিয়ে সরকারি নির্দেশনা শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। সপ্তাহ ব্যবধানে সবজির বাজার কিছুটা চড়া হয়েছে। প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

ঢাকার বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৬৫ টাকায়, যা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়েও ২৩ টাকা বেশি। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৭৫ টাকা করে, যা আবার নির্ধারণ করে দেওয়া দামের তুলনায় ৫ টাকা কম। সরকার কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ১৬৮ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১৭২ টাকা ৬১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করেছে।

বাজারে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকার মধ্যে, যা আগে ছিল ২৮০ টাকা কেজি। তবে সরকারিভাবে কেজিপ্রতি সোনালি মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ২৬০ টাকা ৭৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ২৬৪ টাকা ৫৭ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আজকের বাজারে দেশি প্রজাতির মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি, যা পূর্বেও একই দামে বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামে দেশি মুরগির দাম প্রসঙ্গে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

রফিক মিয়া নামে আরেক ক্রেতা আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের মতো যারা নিয়মিত মাছ মাংস খেতে পারে না, তাদের জন্য ডিমই ছিল ভরসা। এখন দেখি দিনদিন এর দামও বাড়তে শুরু করেছে। যে ডিমের দাম সর্বোচ্চ হওয়া উচিত ৩০/৩৫ টাকা হালি, সেটা এখন ৫৫ টাকা হালি। এগুলো দেখার কি কেউই নেই? তবে বাজারে ডিম-মুরগির দাম নিয়ে বরাবরই এক জবাব ব্যবসায়ীদের। তাদের দাবি, দেশের বাজারে মুরগির খাদ্যের প্রচুর দাম। তাছাড়া সম্প্রতি কয়েকটি জেলায় বন্যার কারণে অনেক মুরগির খামার নষ্ট হয়েছে। এতে ওই সব এলাকায় মুরগি ও ডিমের সরবরাহ কমেছে।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর মহাখালী, গুলশান, মিরপুর, মালিবাগ, বাড্ডা-রামপুরা এলাকার বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখীর কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ঝিঙে ৮০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ১০০ টাকা ও কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শিমের কেজি ২৫০ টাকা। ফুলকপি প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি প্রকারভেদে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা এবং গাজর ১৬০ টাকা। লেবুর হালি ২০ থেকে ৫০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকায় এবং মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

লাল শাকের আঁটি ১৫ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা এবং ডাঁটা শাক ২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারগুলোতে সপ্তাহ ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা, আদা ২৮০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা এবং আলু ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। এক ডজন লাল ডিম ১৬০ টাকায়, হাঁসের ডিমের ডজন ১৯০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকা।

সরবরাহ বাড়লেও আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। আকারভেদে ইলিশের কেজি ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষের শিংয়ের কেজি (আকারভেদে) ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুইয়ের দাম কেজিতে বেড়ে (আকারভেদে) ৩৩০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা, মৃগেল ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা, পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, মলা ৫৫০ টাকা, বাতাসি টেংরা এক হাজার ৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০ টাকা, বাইম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, দেশি কই এক হাজার ২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে ৮০০ টাকা এবং কাইক্ক্যা ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে পাঁচ কেজি সয়াবিন তেল ৮১৮ টাকা, দেশি মসুর ডালের কেজি ১৪০ টাকা, মিনিকেট চাল ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা, নাজিরশাইল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানী ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে বেড়েছে ডিম ও মুরগির দাম। মাছ–মাংসের দামও আগের মতোই চড়া। স্বস্তি ফেরেনি সবজি বাজারে। কোথাও কোথাও কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমেছে। আলু–শসার দাম গত সপ্তাহের মতোই। এ পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ মানুষ।

রাজশাহী
রাজশাহীর বাজারে কমেছে কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজের দাম। অনান্য সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে বেড়েছে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম। কাঁচা মরিচ কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা কমে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। একইভাবে আগের দামেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। কেজিতে ৩০ টাকা কমেছে আদার দাম। রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা । পটল বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি, করলা ৫০ টাকা কেজি দরে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। বেড়েছে মুরগির ডিমের দাম। প্রতি ডজনে ১৮ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫৬ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা এবং গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে।

বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ বেশি থাকায় পেঁয়াজের দাম কমেছে। ক্রেতারা বলছেন, আগের চেয়ে দাম কমলেও আনেক জিনিসের দাম পূর্বের দামে এখনো আস নি। সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়াসহ বাজারে নিয়মিত নজরদারি বাড়াতে নতুন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ক্রেতারা।

সিলেট
সিলেটে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

এ সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজিতে, কাঁচা মরিচের দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে, শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, শিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। স্বস্তি নেই মাছের দামেও। প্রতি কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকায়, কই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায়। ১কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৭ শ থেকে ১৮ শ টাকায়। মাংসের দামও চড়া। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়, খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়।

চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের বাজারে সপ্তাহের ব্যাবধানে কিছুটা বেড়েছে সবজির দাম। বেড়েছে সোনালি মুরগির দামও। আড়তে বেশ দামে বিক্রি হওয়ায় সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করতে পারছেন না খুচরা বিক্রেতারা। শুক্রবার নগরীর নানা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অনেক সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের নানা জায়গায় বন্যায় ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এমন অবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে সোনালি মুরগির দাম। ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে দেশি ও ব্রয়লার মুরগির দাম। বিক্রেতারা বলছেন, বন্যায় দেশের নানা জায়গায় বন্ধ হয়ে গেছে অসংখ্য খামার। এতদিন এর প্রভাব বোঝা না গেলেও ক্রমশ সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। ফলে দাম বাড়ছে। একই অবস্থা ডিমের দামেও। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সরকার প্রতি ডজন ডিম ১৫৫ টাকায় বিক্রি করার নির্দেশনা দিলেও আড়তদাররা সেই নির্দেশনা মানছে না। তাঁরা বেশি দামে বিক্রি করায় বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বগুড়া
বগুড়ায় শাক-সবজি, মাছ, মুরগি ও ডিমের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও, স্বস্তি নেই জনমনে। গত সপ্তাহের তুলনায় কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। এ ছাড়া, অন্যান্য সবজির মধ্যে করলা ৬০, আলু ৬০, পেঁয়াজ ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানান, সবজির দামে স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে শীতকালীন সবজি আসলে বাজারে দাম কমবে। ব্রয়লার মুরগির দাম ২০ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকা আর সোনালি মুরগি ২০ টাকা কমে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম এখনো হালি প্রতি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা জানান, এখনো ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসেনি পণ্যের মূল্য। চাদাবাজি, সিন্ডিকেটমুক্ত বাজার ব্যবস্থাপনা গড়তে কার্যকর ভূমিকা রাখার দাবি জানান তাঁরা।

খুলনা
খুলনায় গত সপ্তাহে মোটা চালের কেজি প্রতি দাম ছিল ৫০টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ২টাকা বৃদ্ধি পেয়ে আজ বিক্রি হচ্ছে ৫২টাকায়। তবে কেজিতে ২ টাকা পর্যন্ত কমেছে মাঝারি এবং চিকন চালের দাম। গত সপ্তাহে মাঝারি চাল ছিল ৬০টাকা, আজ বিক্রি হচ্ছে ৫৯ টাকা, চিকন চালের দাম ছিল ৭০ টাকা আজ বিক্রি হচ্ছে ৬৮টাকা।

বাজারে আজ প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা। চার দিন আগেও দাম ছিল ৭৫০ টাকা। সবজির দাম কেজিতে গত সপ্তাহের চেয়ে আজ ৫ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন বাজারে দেখা, ১০ টাকা কমে বেগুন ৬০ টাকা, করলা ৪০থেকে ৪৫ টাকা, পেপে ৩০টাকা, বরবটি ৩০ থেকে ৩৫টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা, সোনালি ২৪০ টাকা, লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা। সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবে বৃদ্ধি পেয়েছি কাঁচা মরিচের দাম। আজ কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। চার দিন আগেও দাম ছিল ২২০ টাকা। এ ছাড়া পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা কমে ১১৫ টাকা, আলু ৫ টাকা কমে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেনি ডিমের। প্রতি হালি ডিম ৪৮ টাকা থেকে ৫২টাকা বিক্রি হচ্ছে।

সারা দেশে দাম বেড়েছে ডিম–মুরগির, সবজিতে অস্বস্তি

আপডেট : ১২:৪০:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গত ১৫ সেপ্টেম্বর মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। আজ পাঁচদিন পেরোলেও বাজারে কেউই মানছে না সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম। ফলে এই দুই পণ্য নিয়ে সরকারি নির্দেশনা শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। সপ্তাহ ব্যবধানে সবজির বাজার কিছুটা চড়া হয়েছে। প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

ঢাকার বাজারে ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৬৫ টাকায়, যা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়েও ২৩ টাকা বেশি। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৭৫ টাকা করে, যা আবার নির্ধারণ করে দেওয়া দামের তুলনায় ৫ টাকা কম। সরকার কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ১৬৮ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১৭২ টাকা ৬১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করেছে।

বাজারে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকার মধ্যে, যা আগে ছিল ২৮০ টাকা কেজি। তবে সরকারিভাবে কেজিপ্রতি সোনালি মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ২৬০ টাকা ৭৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ২৬৪ টাকা ৫৭ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আজকের বাজারে দেশি প্রজাতির মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি, যা পূর্বেও একই দামে বিক্রি হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামে দেশি মুরগির দাম প্রসঙ্গে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

রফিক মিয়া নামে আরেক ক্রেতা আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের মতো যারা নিয়মিত মাছ মাংস খেতে পারে না, তাদের জন্য ডিমই ছিল ভরসা। এখন দেখি দিনদিন এর দামও বাড়তে শুরু করেছে। যে ডিমের দাম সর্বোচ্চ হওয়া উচিত ৩০/৩৫ টাকা হালি, সেটা এখন ৫৫ টাকা হালি। এগুলো দেখার কি কেউই নেই? তবে বাজারে ডিম-মুরগির দাম নিয়ে বরাবরই এক জবাব ব্যবসায়ীদের। তাদের দাবি, দেশের বাজারে মুরগির খাদ্যের প্রচুর দাম। তাছাড়া সম্প্রতি কয়েকটি জেলায় বন্যার কারণে অনেক মুরগির খামার নষ্ট হয়েছে। এতে ওই সব এলাকায় মুরগি ও ডিমের সরবরাহ কমেছে।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর মহাখালী, গুলশান, মিরপুর, মালিবাগ, বাড্ডা-রামপুরা এলাকার বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখীর কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ঝিঙে ৮০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ১০০ টাকা ও কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শিমের কেজি ২৫০ টাকা। ফুলকপি প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি প্রকারভেদে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা এবং গাজর ১৬০ টাকা। লেবুর হালি ২০ থেকে ৫০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকায় এবং মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

লাল শাকের আঁটি ১৫ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা এবং ডাঁটা শাক ২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। বাজারগুলোতে সপ্তাহ ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা, আদা ২৮০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা এবং আলু ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৮০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংসের কেজি ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। এক ডজন লাল ডিম ১৬০ টাকায়, হাঁসের ডিমের ডজন ১৯০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকা।

সরবরাহ বাড়লেও আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। আকারভেদে ইলিশের কেজি ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষের শিংয়ের কেজি (আকারভেদে) ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুইয়ের দাম কেজিতে বেড়ে (আকারভেদে) ৩৩০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা, মৃগেল ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা, পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, মলা ৫৫০ টাকা, বাতাসি টেংরা এক হাজার ৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০ টাকা, বাইম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, দেশি কই এক হাজার ২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে ৮০০ টাকা এবং কাইক্ক্যা ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে পাঁচ কেজি সয়াবিন তেল ৮১৮ টাকা, দেশি মসুর ডালের কেজি ১৪০ টাকা, মিনিকেট চাল ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা, নাজিরশাইল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানী ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে বেড়েছে ডিম ও মুরগির দাম। মাছ–মাংসের দামও আগের মতোই চড়া। স্বস্তি ফেরেনি সবজি বাজারে। কোথাও কোথাও কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমেছে। আলু–শসার দাম গত সপ্তাহের মতোই। এ পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাধারণ মানুষ।

রাজশাহী
রাজশাহীর বাজারে কমেছে কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজের দাম। অনান্য সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে বেড়েছে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম। কাঁচা মরিচ কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা কমে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। একইভাবে আগের দামেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। কেজিতে ৩০ টাকা কমেছে আদার দাম। রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা । পটল বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি, করলা ৫০ টাকা কেজি দরে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। বেড়েছে মুরগির ডিমের দাম। প্রতি ডজনে ১৮ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫৬ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা এবং গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে।

বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ বেশি থাকায় পেঁয়াজের দাম কমেছে। ক্রেতারা বলছেন, আগের চেয়ে দাম কমলেও আনেক জিনিসের দাম পূর্বের দামে এখনো আস নি। সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়াসহ বাজারে নিয়মিত নজরদারি বাড়াতে নতুন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ক্রেতারা।

সিলেট
সিলেটে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

এ সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজিতে, কাঁচা মরিচের দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজিতে, শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, শিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। স্বস্তি নেই মাছের দামেও। প্রতি কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকায়, কই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায়। ১কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৭ শ থেকে ১৮ শ টাকায়। মাংসের দামও চড়া। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়, খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়।

চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের বাজারে সপ্তাহের ব্যাবধানে কিছুটা বেড়েছে সবজির দাম। বেড়েছে সোনালি মুরগির দামও। আড়তে বেশ দামে বিক্রি হওয়ায় সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করতে পারছেন না খুচরা বিক্রেতারা। শুক্রবার নগরীর নানা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অনেক সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের নানা জায়গায় বন্যায় ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এমন অবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে সোনালি মুরগির দাম। ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে দেশি ও ব্রয়লার মুরগির দাম। বিক্রেতারা বলছেন, বন্যায় দেশের নানা জায়গায় বন্ধ হয়ে গেছে অসংখ্য খামার। এতদিন এর প্রভাব বোঝা না গেলেও ক্রমশ সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। ফলে দাম বাড়ছে। একই অবস্থা ডিমের দামেও। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সরকার প্রতি ডজন ডিম ১৫৫ টাকায় বিক্রি করার নির্দেশনা দিলেও আড়তদাররা সেই নির্দেশনা মানছে না। তাঁরা বেশি দামে বিক্রি করায় বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বগুড়া
বগুড়ায় শাক-সবজি, মাছ, মুরগি ও ডিমের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও, স্বস্তি নেই জনমনে। গত সপ্তাহের তুলনায় কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। এ ছাড়া, অন্যান্য সবজির মধ্যে করলা ৬০, আলু ৬০, পেঁয়াজ ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানান, সবজির দামে স্থিতিশীল রয়েছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে শীতকালীন সবজি আসলে বাজারে দাম কমবে। ব্রয়লার মুরগির দাম ২০ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকা আর সোনালি মুরগি ২০ টাকা কমে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম এখনো হালি প্রতি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা জানান, এখনো ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসেনি পণ্যের মূল্য। চাদাবাজি, সিন্ডিকেটমুক্ত বাজার ব্যবস্থাপনা গড়তে কার্যকর ভূমিকা রাখার দাবি জানান তাঁরা।

খুলনা
খুলনায় গত সপ্তাহে মোটা চালের কেজি প্রতি দাম ছিল ৫০টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ২টাকা বৃদ্ধি পেয়ে আজ বিক্রি হচ্ছে ৫২টাকায়। তবে কেজিতে ২ টাকা পর্যন্ত কমেছে মাঝারি এবং চিকন চালের দাম। গত সপ্তাহে মাঝারি চাল ছিল ৬০টাকা, আজ বিক্রি হচ্ছে ৫৯ টাকা, চিকন চালের দাম ছিল ৭০ টাকা আজ বিক্রি হচ্ছে ৬৮টাকা।

বাজারে আজ প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা। চার দিন আগেও দাম ছিল ৭৫০ টাকা। সবজির দাম কেজিতে গত সপ্তাহের চেয়ে আজ ৫ থেকে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন বাজারে দেখা, ১০ টাকা কমে বেগুন ৬০ টাকা, করলা ৪০থেকে ৪৫ টাকা, পেপে ৩০টাকা, বরবটি ৩০ থেকে ৩৫টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা, সোনালি ২৪০ টাকা, লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা। সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবে বৃদ্ধি পেয়েছি কাঁচা মরিচের দাম। আজ কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। চার দিন আগেও দাম ছিল ২২০ টাকা। এ ছাড়া পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা কমে ১১৫ টাকা, আলু ৫ টাকা কমে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। দাম কমেনি ডিমের। প্রতি হালি ডিম ৪৮ টাকা থেকে ৫২টাকা বিক্রি হচ্ছে।