চলমান সিরিজের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কোনো ম্যাচই জয় পায়নি আফগানিস্তান। তবে সেসব রেকর্ডকে তুড়ি মেরে পরপর দুই ম্যাচে প্রোটিয়াদের নাকানিচুবানি খাইয়ে ইতিহাস গড়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতল হাশমতউল্লাহ শহীদির দল। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তাদের জয় ১৭৭ রানে।
প্রথম ওয়ানডেতে প্রোটিয়াদের ৬ উইকেট হাতে রেখে হারিয়েছিল আফগানরা। সে ম্যাচে বল হাতে সফরকারীদের ১০৬ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে কোনো লড়াই করতে দেননি রশিদ খান-গাজনফররা। দ্বিতীয় ম্যাচেও প্রায় একই চিত্র। ম্যাচ জয় তো দূরের কথা কোনো লড়াই করতে পারেনি প্রোটিয়ারা।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) শারজায় সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানদের দেয়া ৩১২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে রশিদ খানের ঘূর্ণির সামনে দাঁড়াতেই পারেনি প্রোটিয়ারা। ১৩৪ রানে অলআউট হয়ে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে টেম্বা বাভুমার দল। এতে ১৭৭ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আফগানিস্তান।
শারজায় টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৮৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রিয়াজ হাসান। রিয়াজ ২৯ করে ফিরে গেলেও ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি তুলে নেন গুরবাজ। আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ। রহমত শাহ’র ৫০ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ৮৬ রানের বিধ্বংসি ইনিংসে ভর করে ৪ উইকেটে ৩১১ রান তোলে আফগানিস্তান।
জবাবে রান তাড়ায় নেমে শুরুটা খারাপ হয়নি প্রোটিয়াদেরও। টেম্বা বাভুমা এবং টনি ডি জর্জির ব্যাটে ভালোভাবেই এগোচ্ছিল তারা। প্রথম ১৩ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৭ রান করে সফরকারীরা। দুই ওপেনারও ততক্ষণে বেশ ভালোভাবেই মানিয়ে নিয়েছিলেন উইকেটে। কিন্তু ১৪তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ৭৩ রানে বাভুমা আউট হওয়ার পর ইনিংসে ছন্দপতন হয়।
এরপরই তাদের ঘাড় মটকে দেয়ার কাজ করেন রশিদ খান ও নাংগায়েলিয়া খারোতে। এ দুজনের স্পিন ঘুর্ণিতে ৬১ রানে ১০ উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। নিজের জন্মদিনে রশিদ খান নেন ৫ উইকেট, আর খারোতে নেন ৪ উইকেট। সব উইকেট হারিয়ে প্রোটিয়োর ১৩৪ রানই করতে সক্ষম হয়।
এ জয়টি ছিল নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়। পাশাপাশি এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ৫-এ থাকা দলগুলোর বিপক্ষে এটাই আফগানিস্তানের প্রথম সিরিজ জয়। এই ম্যাচে মাত্র ১৯ রানে ৫ উইকেট ডানহাতি লেগস্পিনার রশিদ খান।
ম্যাচসেরা হয়ে জয়ের পর রশিদ খান বলেন, হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট ছিল। কিন্তু মাঠে থাকতে সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করেছি এবং দলকে জেতাতে নিজেকে নিংড়ে দিয়েছি। বড় দলের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের সুবর্ণ সুযোগ ছিল আমাদের জন্য। এ কারণে মাঠে শেষ পর্যন্ত থাকতে হয়েছে।
আগামীকাল রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে দু’দল। দক্ষিণ আফ্রিকা কি পারবে ধবলধোলাই হওয়া এড়াতে?