ঢাকা ০৮:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ভবিষ্যতে তুষারপাত কমবে, বাড়বে বৃষ্টি ও বন্যা!

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:১৪:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৬৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইউরোপের মধ্যাঞ্চলে কয়েক দশকের ভয়াবহতম বন্যার কারণ কৃষ্ণ ও ভূমধ্যসাগরে পানির তাপমাত্রা বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠে তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাবে বাতাসে আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে আর্দ্রতা বিস্তীর্ণ অঞ্চল পার করে উঁচু পাহাড় কিংবা শীতল বাতাসের বাধায় বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ার চক্র চলতে থাকলে ভবিষ্যতে তুষারপাত আরও কমবে, বাড়বে বৃষ্টি ও বন্যা।

কয়লা, তেল আর গ্যাস পোড়ানোর কারণে বিশ্ব ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বলে ১৯৯০-এর দশক থেকেই সতর্ক করছিলেন জলবায়ু বিজ্ঞানীরা। সে সতর্কতা আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে চলতি সপ্তাহে। গত কয়েকদিনে ইউরোপের বড় অংশজুড়ে বন্যার তীব্রতা ভয়াবহ রূপ নেয়ার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাবকে।

সুইজারল্যান্ডের জলবায়ুবিজ্ঞানী এরিক ফিশার বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পরিবেশ উষ্ণ ও আর্দ্র হয়ে উঠছে। এ কারণেই অতিবৃষ্টির মতো দুর্যোগ আর এর তীব্রতাও বাড়ছে।’

প্রলয়ঙ্কারী দুর্যোগ ধ্বংসলীলা চালিয়েছে রোমানিয়া থেকে শুরু করে হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, পোল্যান্ড, জার্মানি, এমনকি সুদূর ইতালি পর্যন্ত। দুই দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার শিকার ইউরোপের মধ্যাঞ্চলের বাসিন্দারা। কৃষ্ণ ও ভূমধ্যসাগরে পানির তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় সৃষ্ট অতিরিক্ত বাষ্প বাতাসে মিশে গিয়ে বাড়াচ্ছে আর্দ্রতা। এতে সামগ্রিকভাবে পরিবেশও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বাতাসে বাড়তি আর্দ্রতার কারণে বাড়ছে ভারি বৃষ্টি।

জার্মান ওয়েদার সার্ভিসের আবহাওয়াবিদ সেবাস্টিয়ান আল্তনাউ বলেন, ‘গড় তাপমাত্রার চেয়েও বেশি উষ্ণ হয়ে উঠছে ভূমধ্যসাগর। অর্থাৎ আর্দ্রতা আরও বাড়বে, পরিবেশও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় গরম হয়ে উঠবে এবং আরও অনেক বেশি পানি শোষণ করবে। এরপর কোনো না কোনো সময় ঢল হয়ে নেমে আসবে।’

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বাতাসের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমবে তুষারপাত।

এরিক ফিশার বলেন, ‘পরিবেশ যত বেশি উষ্ণ হবে, প্রতি এক ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে আরও ছয় থেকে সাত শতাংশ করে অতিরিক্ত আর্দ্রতা যোগ হবে। আরও বেশি অঞ্চলজুড়ে এ আর্দ্রতা ছড়িয়ে পড়তে পড়তে পাহাড়ি অঞ্চল কিংবা শীতল বাতাসে গিয়ে বাধা পেলে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়বে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে তুষারপাত আরও কমবে, তুষারপাতের তুলনায় বৃষ্টিপাত বাড়তে থাকবে এবং এতে বন্যাও বেড়ে যাবে।’

ইউরোপে চলমান এই দুর্যোগের কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বিজ্ঞানীদের সন্দেহের অবকাশ না থাকলেও ঠিক কত প্রভাব পড়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিছুদিনের মধ্যে এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হতে পারে যেখানে থাকবে দুর্যোগের কারণ হিসেবে আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভবিষ্যতে তুষারপাত কমবে, বাড়বে বৃষ্টি ও বন্যা!

আপডেট সময় : ০২:১৪:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইউরোপের মধ্যাঞ্চলে কয়েক দশকের ভয়াবহতম বন্যার কারণ কৃষ্ণ ও ভূমধ্যসাগরে পানির তাপমাত্রা বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠে তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রভাবে বাতাসে আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে আর্দ্রতা বিস্তীর্ণ অঞ্চল পার করে উঁচু পাহাড় কিংবা শীতল বাতাসের বাধায় বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ার চক্র চলতে থাকলে ভবিষ্যতে তুষারপাত আরও কমবে, বাড়বে বৃষ্টি ও বন্যা।

কয়লা, তেল আর গ্যাস পোড়ানোর কারণে বিশ্ব ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বলে ১৯৯০-এর দশক থেকেই সতর্ক করছিলেন জলবায়ু বিজ্ঞানীরা। সে সতর্কতা আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে চলতি সপ্তাহে। গত কয়েকদিনে ইউরোপের বড় অংশজুড়ে বন্যার তীব্রতা ভয়াবহ রূপ নেয়ার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাবকে।

সুইজারল্যান্ডের জলবায়ুবিজ্ঞানী এরিক ফিশার বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পরিবেশ উষ্ণ ও আর্দ্র হয়ে উঠছে। এ কারণেই অতিবৃষ্টির মতো দুর্যোগ আর এর তীব্রতাও বাড়ছে।’

প্রলয়ঙ্কারী দুর্যোগ ধ্বংসলীলা চালিয়েছে রোমানিয়া থেকে শুরু করে হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, পোল্যান্ড, জার্মানি, এমনকি সুদূর ইতালি পর্যন্ত। দুই দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার শিকার ইউরোপের মধ্যাঞ্চলের বাসিন্দারা। কৃষ্ণ ও ভূমধ্যসাগরে পানির তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় সৃষ্ট অতিরিক্ত বাষ্প বাতাসে মিশে গিয়ে বাড়াচ্ছে আর্দ্রতা। এতে সামগ্রিকভাবে পরিবেশও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বাতাসে বাড়তি আর্দ্রতার কারণে বাড়ছে ভারি বৃষ্টি।

জার্মান ওয়েদার সার্ভিসের আবহাওয়াবিদ সেবাস্টিয়ান আল্তনাউ বলেন, ‘গড় তাপমাত্রার চেয়েও বেশি উষ্ণ হয়ে উঠছে ভূমধ্যসাগর। অর্থাৎ আর্দ্রতা আরও বাড়বে, পরিবেশও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় গরম হয়ে উঠবে এবং আরও অনেক বেশি পানি শোষণ করবে। এরপর কোনো না কোনো সময় ঢল হয়ে নেমে আসবে।’

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বাতাসের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমবে তুষারপাত।

এরিক ফিশার বলেন, ‘পরিবেশ যত বেশি উষ্ণ হবে, প্রতি এক ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে আরও ছয় থেকে সাত শতাংশ করে অতিরিক্ত আর্দ্রতা যোগ হবে। আরও বেশি অঞ্চলজুড়ে এ আর্দ্রতা ছড়িয়ে পড়তে পড়তে পাহাড়ি অঞ্চল কিংবা শীতল বাতাসে গিয়ে বাধা পেলে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়বে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে তুষারপাত আরও কমবে, তুষারপাতের তুলনায় বৃষ্টিপাত বাড়তে থাকবে এবং এতে বন্যাও বেড়ে যাবে।’

ইউরোপে চলমান এই দুর্যোগের কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বিজ্ঞানীদের সন্দেহের অবকাশ না থাকলেও ঠিক কত প্রভাব পড়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিছুদিনের মধ্যে এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হতে পারে যেখানে থাকবে দুর্যোগের কারণ হিসেবে আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা।