আগামী ৭২ ঘণ্টায় বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এই অবস্থায় বর্ধিত ৫ দিনে দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। সেই সঙ্গে আগামী তিন দিন দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এদিকে, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ নিয়ে সুসংবাদ দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। অর্থাৎ শনিবার সারা দেশে তাপপ্রবাহ থাকলেও রোববার থেকেই ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। পাশাপাশি এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। সেই সঙ্গে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।

এই অবস্থায় রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।

তবে সারাদেশের ওপর নিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ এই সময়েও অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পরদিন সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। তবে এই সময়ে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

অন্যদিকে আগামী মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। পাশাপাশি এই সময়ে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি হ্রাস পেতে পারে। তবে বর্ধিত ৫ দিনে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিকে, রাজধানীতে কয়েকদিন ধরেই ভ্যাপসা গরম। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল জনজীবন। শহরে বইছিল মৃদু তাপপ্রবাহ। এ অবস্থার কিছুটা পরবির্তন হয়েছে। স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজেছে ঢাকার রাজপথ। কমেছে গরমও।

আজ শনিবার সকাল থেকেই মেঘ মেঘ করছিল আকাশ। তাপমাত্রাও কিছুটা কমতে শুরু করে। ১০টার পর মুষলধারে নামতে শুরু করে বৃষ্টি। তবে এই বৃষ্টি অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। দুপুরের দিকেও নগরের আকাশ থেকে ঝরছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। ঢাকার বাইরেও বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে।

আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু–এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে।

আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটির বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পরবর্তী ৭২ ঘন্টার মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।

অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নেত্রকোনায় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন হাতিয়ায় ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চট্টগ্রামে দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ৯২ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সকাল ৯টায় ঢাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘন্টায় ৮-১২ কিলোমিটার। সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৬ শতাংশ।