স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলায় প্রায় ৫০০ মানুষ নিহত হওয়ার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু লেবাননের জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা হিজবুল্লাহর জন্য মানবঢাল হবেন না।’
কয়েক দিন ধরে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এরই মধ্যে গতকাল সোমবার ভোর থেকে আকাশপথে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত ৪৯২ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
এ হামলার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু অনলাইনে একটি ভিডিও শেয়ার করেন। ওই ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের যুদ্ধ লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে নয়, বরং হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে। হিজবুল্লাহর সন্ত্রাসীরা সাধারণ মানুষের বাড়িতে ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র মজুত করে রাখছে। সেসব অস্ত্র ধ্বংস করতেই অভিযান চালানো হচ্ছে।’
লেবাননের জনগণের উদ্দেশে নেতানিয়াহু আরও বলেন, ‘বহুদিন ধরেই হিজবুল্লাহ আপনাদেরকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা আপনার বসার ঘরে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র বসাচ্ছে। তারপর আমাদের শহরগুলোতে হামলা চালিয়ে আমাদের নাগরিকদের হত্যা করছে। আমাদের জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থেই হিজবুল্লাহর অস্ত্রগুলো ধ্বংস করতে হবে।’
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সেনারা আপনাদেরকে ধ্বংসের পথে থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছে। আপনারা তাদের কথাকে গুরুত্ব দিন। হিজবুল্লহর জন্য নিজের জীবন বিপন্ন করবেন না।’
হিজবুল্লাহ লেবাননকে বিপদে ফেলতে চাইছে উল্লেখ করে নেতানিয়াহু বলেন, ‘হিজবুল্লাহ লেবাননকে বিপদে ফেলবে। আপনারা এটি দেবেন না। দয়া করে ধ্বংসের পথ থেকে সরে আসুন। আমাদের অভিযান শেষ হলে আপনারা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবেন।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর থেকে হিজবুল্লাহ লেবাননে যত অবকাঠামো তৈরি করেছিল, তা ধ্বংসের অভিযানে নেমেছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, এরই মধ্যে হিজবুল্লাহর ১ হাজার ৩০০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। ফলে হাজার হাজার পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ২০০টিরও বেশি রকেট নিক্ষেপ করেছে।
বিশ্বের অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলো বলছে, ইসরায়েল ও লেবানন সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। উভয় পক্ষেরই সংযমী হওয়া উচিত।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে ৩৫ জন শিশু ও ৫৮ জন নারী রয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ১ হাজার ৬৪৫ জন। হতাহতের মধ্যে কতজন বেসামরিক মানুষ আর কতজন যোদ্ধা রয়েছেন, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।