০৫:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • আপডেট : ০৭:০০:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ২০ দেখেছেন

টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে শেষ টেস্ট খেলবেন এই অলরাউন্ডার। আর ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলে ওয়ানডে থেকেও বিদায় নেবেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে সুযোগ পেলে, সেটাই হবে সাদা ক্রিকেটে সাকিব আল হাসানের শেষ সিরিজ। আজ কানপুর টেস্ট-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে এসে নিজের অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক।

২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে সাকিব জানিয়েছিলেন, তিনি ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও খেলতে চান। তবে হঠাৎ সাকিবের এমন ঘোষণাতে অনেক আলোচনা তৈরি হয়েছে। মূলত দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব তাঁর ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ার নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছিলেন, সাকিবকে হত্যা মামলার আসামিও করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের মাটিতে সাকিব আর খেলতে পারবেন কি না এমন আলোচনাও চলছিল।

এ অবস্থায় অক্টোবরে দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে খেলার ক্ষেত্রে বিসিবির কাছে কিছু প্রতিশ্রুতি চেয়েছেন সাকিব।

কী সেই প্রতিশ্রুতি? সংবাদ সম্মেলনে আজ সাকিব বলেছেন, ‘দেখুন, এখন পর্যন্ত আমি তো অ্যাভেইলেবল। দেশে যেহেতু অনেক পরিস্থিতি আছে, সবকিছু অবশ্যই আমার ওপরে না। আমি বিসিবির সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা করেছি। তাদেরকে বলা হয়েছে আমার কী পরিকল্পনা। এই সিরিজ আর হোম সিরিজটা আমি ফিল করেছিলাম আমার শেষ সিরিজ হবে, টেস্ট ক্রিকেটে স্পেশালি।’

দেশে ফিরে সাকিব যেন হেনস্তার শিকার না হন সেজন্য বিসিবিকে শর্তও দিয়েছেন সাকিব। নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় থাকা সাকিব বলেন, ‘আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোনো সমস্যা না হয়।’

এখন বোর্ডের দিকে তাকিয়ে সাকিব, ‘…বোর্ড খেয়াল রাখছে। বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবে, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারব। এভাবেই (বিসিবি সভাপতি) ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে ও নির্বাচকদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যদি সুযোগ থাকে, আমি যদি দেশে যাই, খেলতে পারি, তাহলে মিরপুর টেস্ট হবে আমার জন্য শেষ। সেই কথাটা বোর্ডের সবার সঙ্গে বলা হয়েছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন কীভাবে সুন্দরভাবে আয়োজন করা যায়।’

মিরপুরে টেস্ট না খেলতে পারলে কানপুর টেস্টই তাঁর শেষ হতে পারে এমনটা জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমার দেশের সমর্থকদের সামনে টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করাটা উপযুক্ত হবে বলে মনে হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে এবং এই ফরম্যাটের শেষটা আমি ঘরের মাঠেই খেলতে চাই। আমি বিসিবির কাছে নিজের শেষ টেস্টটি মিরপুরে খেলার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছি। যদি তা না হয়, তাহলে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিই আমার শেষ টেস্ট হবে।’

সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়ে সাকিব বলেন, ‘এই ধরনের পরিস্থিতিতে খেলাটা কঠিন। আমি কীভাবে সবকিছু সামলাচ্ছি, সেটা আল্লাহই জানে। আমার নামে মামলা হয়েছে, এটা করার অধিকার সবারই আছে। আপনারা সবাই জানেন, এটা কেমন মামলা। কিংবা আমি ওই সময় কোথায় ছিলাম বা আমার কাজ কি ছিল। এটা নিয়ে ‍খুব বেশি কিছু বলতে চাই না।’

শেয়ারবাজার কারসাজির অভিযোগ প্রসঙ্গে এই ক্রিকেটার আরও বলেন, ‘আমার জীবনে আমি কোনোদিন নিজে থেকে কোনো ট্রেড করিনি। কেউ যদি বলে এই ট্রেডিং নিয়ে কথাও বলেছি; আমাকে প্রমাণ দিলে আমি খুশি হব। এগুলো যার যেটা ইচ্ছে করতেই পারে। জিনিসগুলো গুছিয়ে করলে হয়তো আমার জন্য মানসিকভাবে আরেকটু ভালো হতো। কারণ মিথ্যা অভিযোগগুলো আমার কাছে মনে হয় না খুব ভালো কোনো বার্তা দেয়। আমি যেহেতু কোনো ট্রেডই করিনি, সেটার অভিযোগ আনাটা খুব একটা যৌক্তিক বলে মনে হয় না।’

১৮ বছরের ক্যারিয়ারে এই প্রথম তাঁর দলে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই প্রথম অধিনায়ক বা কোচকে যুক্তি দেখাতে হচ্ছে সাকিবের দলে থাকা নিয়ে।

আজ সব জল্পনাকল্পনা শেষ করে দিয়েছেন সাকিব। সংবাদসম্মেলনে এসে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, ‘যদি দলে নেওয়া হয়, তবে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টগুলোই হবে আমার শেষ।’

আগে ঘোষণা না দিলেও আজ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকেও অবসর নিয়েছেন সাকিব। বলেছেন, সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই ছিল এই ফরম্যাটে তাঁর শেষ ম্যাচ, ‘আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টিতে আমি আমার শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছি।’ অর্থাৎ, ভারতের বিপক্ষে আগামী মাসে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজেও আর দেখা যাবে না তাঁকে।

অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান

আপডেট : ০৭:০০:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে শেষ টেস্ট খেলবেন এই অলরাউন্ডার। আর ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলে ওয়ানডে থেকেও বিদায় নেবেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে সুযোগ পেলে, সেটাই হবে সাদা ক্রিকেটে সাকিব আল হাসানের শেষ সিরিজ। আজ কানপুর টেস্ট-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে এসে নিজের অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক।

২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে সাকিব জানিয়েছিলেন, তিনি ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও খেলতে চান। তবে হঠাৎ সাকিবের এমন ঘোষণাতে অনেক আলোচনা তৈরি হয়েছে। মূলত দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব তাঁর ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ার নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছিলেন, সাকিবকে হত্যা মামলার আসামিও করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের মাটিতে সাকিব আর খেলতে পারবেন কি না এমন আলোচনাও চলছিল।

এ অবস্থায় অক্টোবরে দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে খেলার ক্ষেত্রে বিসিবির কাছে কিছু প্রতিশ্রুতি চেয়েছেন সাকিব।

কী সেই প্রতিশ্রুতি? সংবাদ সম্মেলনে আজ সাকিব বলেছেন, ‘দেখুন, এখন পর্যন্ত আমি তো অ্যাভেইলেবল। দেশে যেহেতু অনেক পরিস্থিতি আছে, সবকিছু অবশ্যই আমার ওপরে না। আমি বিসিবির সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা করেছি। তাদেরকে বলা হয়েছে আমার কী পরিকল্পনা। এই সিরিজ আর হোম সিরিজটা আমি ফিল করেছিলাম আমার শেষ সিরিজ হবে, টেস্ট ক্রিকেটে স্পেশালি।’

দেশে ফিরে সাকিব যেন হেনস্তার শিকার না হন সেজন্য বিসিবিকে শর্তও দিয়েছেন সাকিব। নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় থাকা সাকিব বলেন, ‘আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোনো সমস্যা না হয়।’

এখন বোর্ডের দিকে তাকিয়ে সাকিব, ‘…বোর্ড খেয়াল রাখছে। বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবে, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারব। এভাবেই (বিসিবি সভাপতি) ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে ও নির্বাচকদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যদি সুযোগ থাকে, আমি যদি দেশে যাই, খেলতে পারি, তাহলে মিরপুর টেস্ট হবে আমার জন্য শেষ। সেই কথাটা বোর্ডের সবার সঙ্গে বলা হয়েছে। তাঁরা চেষ্টা করছেন কীভাবে সুন্দরভাবে আয়োজন করা যায়।’

মিরপুরে টেস্ট না খেলতে পারলে কানপুর টেস্টই তাঁর শেষ হতে পারে এমনটা জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমার দেশের সমর্থকদের সামনে টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করাটা উপযুক্ত হবে বলে মনে হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে এবং এই ফরম্যাটের শেষটা আমি ঘরের মাঠেই খেলতে চাই। আমি বিসিবির কাছে নিজের শেষ টেস্টটি মিরপুরে খেলার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছি। যদি তা না হয়, তাহলে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিই আমার শেষ টেস্ট হবে।’

সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়ে সাকিব বলেন, ‘এই ধরনের পরিস্থিতিতে খেলাটা কঠিন। আমি কীভাবে সবকিছু সামলাচ্ছি, সেটা আল্লাহই জানে। আমার নামে মামলা হয়েছে, এটা করার অধিকার সবারই আছে। আপনারা সবাই জানেন, এটা কেমন মামলা। কিংবা আমি ওই সময় কোথায় ছিলাম বা আমার কাজ কি ছিল। এটা নিয়ে ‍খুব বেশি কিছু বলতে চাই না।’

শেয়ারবাজার কারসাজির অভিযোগ প্রসঙ্গে এই ক্রিকেটার আরও বলেন, ‘আমার জীবনে আমি কোনোদিন নিজে থেকে কোনো ট্রেড করিনি। কেউ যদি বলে এই ট্রেডিং নিয়ে কথাও বলেছি; আমাকে প্রমাণ দিলে আমি খুশি হব। এগুলো যার যেটা ইচ্ছে করতেই পারে। জিনিসগুলো গুছিয়ে করলে হয়তো আমার জন্য মানসিকভাবে আরেকটু ভালো হতো। কারণ মিথ্যা অভিযোগগুলো আমার কাছে মনে হয় না খুব ভালো কোনো বার্তা দেয়। আমি যেহেতু কোনো ট্রেডই করিনি, সেটার অভিযোগ আনাটা খুব একটা যৌক্তিক বলে মনে হয় না।’

১৮ বছরের ক্যারিয়ারে এই প্রথম তাঁর দলে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই প্রথম অধিনায়ক বা কোচকে যুক্তি দেখাতে হচ্ছে সাকিবের দলে থাকা নিয়ে।

আজ সব জল্পনাকল্পনা শেষ করে দিয়েছেন সাকিব। সংবাদসম্মেলনে এসে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, ‘যদি দলে নেওয়া হয়, তবে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টগুলোই হবে আমার শেষ।’

আগে ঘোষণা না দিলেও আজ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকেও অবসর নিয়েছেন সাকিব। বলেছেন, সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই ছিল এই ফরম্যাটে তাঁর শেষ ম্যাচ, ‘আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টিতে আমি আমার শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছি।’ অর্থাৎ, ভারতের বিপক্ষে আগামী মাসে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজেও আর দেখা যাবে না তাঁকে।