০৬:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গণঅভ্যুত্থানে নিহত-আহতদের নেই পূর্ণাঙ্গ তালিকা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : ০১:৪৫:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৩৬ দেখেছেন

সরকারি ও বেসরকারিভাবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হলেও এখনও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেনি কেউই। এ কারণে যথাযথ চিকিৎসার অভাবে আহতদের অনেকের পঙ্গু হবার শঙ্কা চিকিৎসকদের। স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি বলছে, স্বচ্ছতার জন্য কয়েক স্তরের যাচাই-বাছাই শেষে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেই সাথে আহতদের বিনা খরচে চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দুই মাস পরও হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন অসংখ্য ছাত্র জনতা। চিরতরে অঙ্গ হারিয়েছেন অনেকে। এখনও নিখোঁজ বহু মানুষ।

তবে আহত, নিহত কিংবা নিখোঁজের এ সংখ্যা ঠিক কত? যদিও এরইমধ্যে সরকারি, বেসরকারিভাবে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি বলছে, মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৪২৪ এর আশেপাশে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা ৭০৮ জন। সরকারি, বেসরকারি পরিসংখ্যানের এই তারতম্য কেন? পূর্ণাঙ্গ তালিকাই বা কবে প্রকাশ হবে?

স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য সচিব তারেকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকেই আমাদের সঙ্গে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে চাননি। অনেকে ট্রমাটাইজড, ভয় পাচ্ছে এখনও। অনেকে এমনও আছে যে আমার নাম কেটে দেন। আমার টিমের একজন মেম্বারকে নারায়নগঞ্জে পাঠাতে হয়েছে যে ওই পরিবারের সাথে দেখা করে বুঝিয়ে আসো যে তাদের কিছু হবে না, যদি হয় সেটা আমাদের ওপর দিয়ে হবে।’

স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য মো. মাসউদুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতালে যে রোগীরা ভর্তি ছিলেন, সেখানে তাদের যে তথ্য দেয়া আছে, এগুলো অনেক তথ্য নেই। অনেকের শুধু নাম দেয়া আছে ফোন নম্বর নেই, ঠিকানা নেই। এই অপূর্ণ তথ্যগুলো নিয়ে কাজ করা একটু ঝামেলা হয়ে যাচ্ছে।’

স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য শাহরিয়ার হাসনাত তপু বলেন, ‘কিছু ভেরিফিকেশন আমরা করেছি যেগুলো এখনও ওনারা করেননি। আমরা আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দলের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে, কাগজ-পত্র নিয়ে ভেরিফাই করেছি।’

স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্যরা বলছেন, শুধু পরিসংখ্যান নয়, এটিকে গণঅভ্যুত্থানের দলিল হিসাবে তৈরি করা হচ্ছে। তাতে চলছে কয়েক স্তরের যাচাই-বাছাই।

তারেকুল ইসলাম বলেন, ‘আহত এবং শহীদদের সাহায্য পৌঁছানোই কিন্তু আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এটা গণহত্যার একটা ডকুমেন্ট হতে যাচ্ছে, আমরা যত প্রমাণ পাচ্ছি সব আমাদের ডেটাবেজে সংগ্রহ করছি। এর সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য হচ্ছে বিচার নিশ্চিত করা।’

পরিসংখ্যান বলছে, সারাদেশে আহতের সংখ্যা ২২ থেকে ২৫ হাজার। যার মধ্যে শুধু ঢাকার হাসপাতালে এখনও কাতরাচ্ছে ৩৫০ রোগী। ইতোমধ্যে গুরুতর দুই জনকে পাঠানো হয়েছে বিদেশে। বাকিদের বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী রুবিনা প্রমি বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেলে বর্তমানে আন্দোলনে আহত ৪২ জন রোগী এখনও ভর্তি আছেন। আর আইসিইউতে আছেন চারজন। আর আগস্টের মাঝামাঝি থেকে তাদের চিকিৎসা সেবা সম্পূর্ণ ফ্রি করা হয়েছে।’

খুব শিগগিরই নিখোঁজের তালিকা প্রকাশ করার কথা জানান, স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্যরা।

গণঅভ্যুত্থানে নিহত-আহতদের নেই পূর্ণাঙ্গ তালিকা

আপডেট : ০১:৪৫:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সরকারি ও বেসরকারিভাবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হলেও এখনও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেনি কেউই। এ কারণে যথাযথ চিকিৎসার অভাবে আহতদের অনেকের পঙ্গু হবার শঙ্কা চিকিৎসকদের। স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি বলছে, স্বচ্ছতার জন্য কয়েক স্তরের যাচাই-বাছাই শেষে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেই সাথে আহতদের বিনা খরচে চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দুই মাস পরও হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন অসংখ্য ছাত্র জনতা। চিরতরে অঙ্গ হারিয়েছেন অনেকে। এখনও নিখোঁজ বহু মানুষ।

তবে আহত, নিহত কিংবা নিখোঁজের এ সংখ্যা ঠিক কত? যদিও এরইমধ্যে সরকারি, বেসরকারিভাবে খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি বলছে, মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৪২৪ এর আশেপাশে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা ৭০৮ জন। সরকারি, বেসরকারি পরিসংখ্যানের এই তারতম্য কেন? পূর্ণাঙ্গ তালিকাই বা কবে প্রকাশ হবে?

স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য সচিব তারেকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকেই আমাদের সঙ্গে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে চাননি। অনেকে ট্রমাটাইজড, ভয় পাচ্ছে এখনও। অনেকে এমনও আছে যে আমার নাম কেটে দেন। আমার টিমের একজন মেম্বারকে নারায়নগঞ্জে পাঠাতে হয়েছে যে ওই পরিবারের সাথে দেখা করে বুঝিয়ে আসো যে তাদের কিছু হবে না, যদি হয় সেটা আমাদের ওপর দিয়ে হবে।’

স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য মো. মাসউদুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতালে যে রোগীরা ভর্তি ছিলেন, সেখানে তাদের যে তথ্য দেয়া আছে, এগুলো অনেক তথ্য নেই। অনেকের শুধু নাম দেয়া আছে ফোন নম্বর নেই, ঠিকানা নেই। এই অপূর্ণ তথ্যগুলো নিয়ে কাজ করা একটু ঝামেলা হয়ে যাচ্ছে।’

স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য শাহরিয়ার হাসনাত তপু বলেন, ‘কিছু ভেরিফিকেশন আমরা করেছি যেগুলো এখনও ওনারা করেননি। আমরা আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দলের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে, কাগজ-পত্র নিয়ে ভেরিফাই করেছি।’

স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্যরা বলছেন, শুধু পরিসংখ্যান নয়, এটিকে গণঅভ্যুত্থানের দলিল হিসাবে তৈরি করা হচ্ছে। তাতে চলছে কয়েক স্তরের যাচাই-বাছাই।

তারেকুল ইসলাম বলেন, ‘আহত এবং শহীদদের সাহায্য পৌঁছানোই কিন্তু আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এটা গণহত্যার একটা ডকুমেন্ট হতে যাচ্ছে, আমরা যত প্রমাণ পাচ্ছি সব আমাদের ডেটাবেজে সংগ্রহ করছি। এর সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য হচ্ছে বিচার নিশ্চিত করা।’

পরিসংখ্যান বলছে, সারাদেশে আহতের সংখ্যা ২২ থেকে ২৫ হাজার। যার মধ্যে শুধু ঢাকার হাসপাতালে এখনও কাতরাচ্ছে ৩৫০ রোগী। ইতোমধ্যে গুরুতর দুই জনকে পাঠানো হয়েছে বিদেশে। বাকিদের বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী রুবিনা প্রমি বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেলে বর্তমানে আন্দোলনে আহত ৪২ জন রোগী এখনও ভর্তি আছেন। আর আইসিইউতে আছেন চারজন। আর আগস্টের মাঝামাঝি থেকে তাদের চিকিৎসা সেবা সম্পূর্ণ ফ্রি করা হয়েছে।’

খুব শিগগিরই নিখোঁজের তালিকা প্রকাশ করার কথা জানান, স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্যরা।