সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় সাংবাদিক শফিক রেহমান আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তিনি সাজার বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের শর্তে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করেন আদালত।
আজ (সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুল হকের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেছেন। শুনানি শেষে বিচারক শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করেন। একইসঙ্গে সাজা পরোয়ানা রিকল করেছেন।
তার পক্ষে অ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ আপিল দায়েরের জন্য নকল এবং তার বিরুদ্ধে দেওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার ও সাজা পরোয়ানার রিকলের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করেন।
শফিক রেহমান সাংবাদিকদের বলেন, 'আলোর পথ দেখাতে হলে জেলখানা সংস্কার করতে হবে। যেখানে মানুষ নিরাপদ ও সুন্দর থাকবে। লন্ডনের জেলখানা দেখলে তাই মনে হয়।'
তিনি বলেন, 'জেলখানায় যারা বন্দি আছে তাদের প্রতি আমার সহানুভূতিশীল। অধিকাংশ যারা জেলখানায় বন্দি আছে তারা রাজনৈতিক কারণে বন্দি রয়েছে। এ মুহূর্তে আমি তাদেরকে ছেড়ে দিতে বলছি।'
তিনি বলেন, 'জনগণের বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। আমাদেরও বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। জনগণকে বাকরুদ্ধ করতেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।'
গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচ জনকে পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভুইয়া।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যে কোনো সময় থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন।
২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।