ঢাকা ০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোন কোন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করল ইরান?

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:২১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৮২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তিন ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে। প্রেস টিভি জানিয়েছে, এই অভিযানে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি ক্বদর, ইমাদ এবং ফাত্তাহ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের শতকরা ৯০ ভাগ কাঙ্খিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।

এখনো পর্যন্ত এসব হামলায় জনজীবন ও সহায়-সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য পাওয়া না গেলেও ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনাগুলোর মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এই অভিযানে ইরান যে কদর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে তা মূলত ২০০৫ সালে ব্যবহার উপযোগী করে যা শাহাব-৩ মধ্যমপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ। এটি লিকুইড ও সলিড ফুয়েল চালিত দুই ধাপ বিশিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র। প্রথম ধাপ লিকুইড ফুয়েল চালিত এবং দ্বিতীয় ধাপ সলিড ফুয়েল চালিত। এই ক্ষেপণাস্ত্রের তিনটি ভার্সন রয়েছে যার একটির পাল্লা ১৩৫০ কিলোমিটার, আরেকটির পাল্লা ১৬৫০ কিলোমিটার এবং সর্বশেষ ভার্সনের পাল্লা ১৯৫০ কিলোমিটার।

এই ক্ষেপণাস্ত্র ১৫.৮৬ মিটার থেকে ১৬.৫৮ মিটার পর্যন্ত লম্বা এবং এর ব্যাসার্ধ হচ্ছে ১.২৫ মিটার। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ১৫ থেকে সাড়ে ১৭ টন।

এই ক্বদর ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ হচ্ছে ইমাদ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ২০১৫ সালে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হয়। ইমাদ ক্ষেপণাস্ত্র মূলত ইরানের প্রথম ‘গাইডেড মিসাইল’ যা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগ পর্যন্ত নিজেকে প্রতিটি অবস্থায় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ইমাদ ক্ষেপণাস্ত্র ১৭৫০ কেজি ওয়ারহেড বহন করতে পারে এবং ১৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে। ক্ষেপণাস্ত্রটির দৈর্ঘ্য ১৫.৫ মিটার। এটি লিকুইড ফুয়েল চালিত ক্ষেপণাস্ত্র।

গত জুন মাসে ইরান ফাত্তাহ-১ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করে। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ ইব্রাহিম রায়িসি। ক্ষেপণাস্ত্রটির নামকরণ করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী। দুই ধাপ বিশিষ্ট এই ক্ষেপণাস্ত্র সম্পূর্ণভাবে সলিড ফুয়েল চালিত।

ফাত্তাহ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ১৪০০ কিলোমিটার এবং এজন্য একে মধ্যম পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বলা হয়। ইরানের পশ্চিমাঞ্চলের যেকোন জায়গা থেকে ইহুদিবাদী ইসরাইলে এই ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানতে পারে।

এটি শব্দের চেয়ে ১৩ থেকে ১৫ গুণ বেশি গতিতে ছুটতে পারে যার অর্থ হচ্ছে প্রতি ঘন্টায় ১৬ থেকে ১৮ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র।

ফাত্তাহ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের যেমন রয়েছে অনেক বেশি গতি, তেমনি আছে যেকোন পরিস্থিতিতে ম্যানুভার করার ক্ষমতা। ফলে বর্তমানে যে সমস্ত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে তার কোনোটিই এই ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিহত করতে পারবে না।

এই ক্ষেপণাস্ত্র উদ্বোধনের সময় ইরানের সামরিক কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ফাত্তাহ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শিল্পের জন্য ‘বিশাল বড় লাফ’।

ইরান এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির আগে শুধুমাত্র রাশিয়া, চীন এবং ভারতের কাছে এই প্রযুক্তি ছিল। পরবর্তীতে উত্তর কোরিয়া এই কাতারে যোগ দিয়েছে।

গত নভেম্বরে ইরান ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ ফাত্তাহ-২ উন্মোচন করে। পার্সটুডে

নিউজটি শেয়ার করুন

ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোন কোন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করল ইরান?

আপডেট সময় : ০২:২১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তিন ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে। প্রেস টিভি জানিয়েছে, এই অভিযানে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি ক্বদর, ইমাদ এবং ফাত্তাহ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের শতকরা ৯০ ভাগ কাঙ্খিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।

এখনো পর্যন্ত এসব হামলায় জনজীবন ও সহায়-সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য পাওয়া না গেলেও ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনাগুলোর মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এই অভিযানে ইরান যে কদর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে তা মূলত ২০০৫ সালে ব্যবহার উপযোগী করে যা শাহাব-৩ মধ্যমপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ। এটি লিকুইড ও সলিড ফুয়েল চালিত দুই ধাপ বিশিষ্ট ক্ষেপণাস্ত্র। প্রথম ধাপ লিকুইড ফুয়েল চালিত এবং দ্বিতীয় ধাপ সলিড ফুয়েল চালিত। এই ক্ষেপণাস্ত্রের তিনটি ভার্সন রয়েছে যার একটির পাল্লা ১৩৫০ কিলোমিটার, আরেকটির পাল্লা ১৬৫০ কিলোমিটার এবং সর্বশেষ ভার্সনের পাল্লা ১৯৫০ কিলোমিটার।

এই ক্ষেপণাস্ত্র ১৫.৮৬ মিটার থেকে ১৬.৫৮ মিটার পর্যন্ত লম্বা এবং এর ব্যাসার্ধ হচ্ছে ১.২৫ মিটার। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ১৫ থেকে সাড়ে ১৭ টন।

এই ক্বদর ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ হচ্ছে ইমাদ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। ২০১৫ সালে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হয়। ইমাদ ক্ষেপণাস্ত্র মূলত ইরানের প্রথম ‘গাইডেড মিসাইল’ যা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগ পর্যন্ত নিজেকে প্রতিটি অবস্থায় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ইমাদ ক্ষেপণাস্ত্র ১৭৫০ কেজি ওয়ারহেড বহন করতে পারে এবং ১৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে। ক্ষেপণাস্ত্রটির দৈর্ঘ্য ১৫.৫ মিটার। এটি লিকুইড ফুয়েল চালিত ক্ষেপণাস্ত্র।

গত জুন মাসে ইরান ফাত্তাহ-১ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করে। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট সাইয়েদ ইব্রাহিম রায়িসি। ক্ষেপণাস্ত্রটির নামকরণ করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী। দুই ধাপ বিশিষ্ট এই ক্ষেপণাস্ত্র সম্পূর্ণভাবে সলিড ফুয়েল চালিত।

ফাত্তাহ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ১৪০০ কিলোমিটার এবং এজন্য একে মধ্যম পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বলা হয়। ইরানের পশ্চিমাঞ্চলের যেকোন জায়গা থেকে ইহুদিবাদী ইসরাইলে এই ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানতে পারে।

এটি শব্দের চেয়ে ১৩ থেকে ১৫ গুণ বেশি গতিতে ছুটতে পারে যার অর্থ হচ্ছে প্রতি ঘন্টায় ১৬ থেকে ১৮ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র।

ফাত্তাহ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের যেমন রয়েছে অনেক বেশি গতি, তেমনি আছে যেকোন পরিস্থিতিতে ম্যানুভার করার ক্ষমতা। ফলে বর্তমানে যে সমস্ত ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে তার কোনোটিই এই ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিহত করতে পারবে না।

এই ক্ষেপণাস্ত্র উদ্বোধনের সময় ইরানের সামরিক কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ফাত্তাহ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শিল্পের জন্য ‘বিশাল বড় লাফ’।

ইরান এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির আগে শুধুমাত্র রাশিয়া, চীন এবং ভারতের কাছে এই প্রযুক্তি ছিল। পরবর্তীতে উত্তর কোরিয়া এই কাতারে যোগ দিয়েছে।

গত নভেম্বরে ইরান ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত সংস্করণ ফাত্তাহ-২ উন্মোচন করে। পার্সটুডে