ঢাকা ০৫:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সমবায় ব্যাংকের ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ চুরির ঘটনার অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:৪৬:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৬২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

২০২০ সালে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক থেকে প্রায় ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ চুরির ঘটনার অভিযুক্ত তৎকালীন চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহি। অভিযোগ রয়েছে, ভাগ্নে ও চাচাতো ভাইকে নিয়ে বড় এ চুরির ঘটনা ঘটান তিনি। শুধু স্বর্ণ চুরি নয়, প্রতিষ্ঠানে নিয়োগেও করেছেন অনিয়ম। ভুয়া সনদে নিয়োগ দিয়েছেন নিজের বান্ধবীকে। সেই সাথে যুবলীগ নেতা হওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বন্ধ করেছেন তদন্ত।

দেশের ইতিহাসে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে স্বর্ণ চুরির বড় ঘটনা ঘটে। এতে নড়েচড়ে উঠে আর্থিক খাত। এরপর আবার ২০২০ সালে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক থেকে প্রায় ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মহি।

২০০৯ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ মহি। পরে ব্যাংকের ভল্টের দায়িত্ব দেন তার ভাগ্নে ক্যাশ অফিসার নূর মোহাম্মদ ও এজিএম চাচাতো ভাই হেদায়েত কবিরকে। আর এদেরকে সাথে নিয়েই ভল্টের ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ লুট করার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে।

শুধু স্বর্ণ চুরি নয়, প্রতিষ্ঠানটির নিয়োগেও করেছেন নানা অনিয়ম। ভুয়া সনদের মাধ্যমে প্রথমে নিয়োগ দেন নিজের বান্ধবী কোহিনুর আক্তারকে। আর ২০০৯ থেকে ১৮ সাল পর্যন্ত ১৭৬ জনের নিয়োগের মধ্যে ১৩৮ জনকেই দিয়েছেন নিজের ও বান্ধবীর গ্রামের।

২০২০ সালের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ৪ মাসে ১৫০ কোটি টাকার স্বর্ণ চুরি করেন ভল্ট থেকে। পরের বছর স্বর্ণ চুরির মামলা করে দুদক। যে মামলার এক নম্বর আসামি হন মহিউদ্দিন আহমেদ মহি। এছাড়া আরও ৮ জন আসামি থাকলেও রাজনৈতিক ক্ষমতায় চার্জশিট থেকে নিজের নাম বাদ দিতে বাধ্য করেন তিনি।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর পুনরায় সামনে আসে স্বর্ণ চুরির বিষয়টি। এতে আদালতে মামলার কার্যক্রম আবারও চালু হয়। কিন্তু চার্জশিটে নাম না থাকায় এখনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি মহির বিরুদ্ধে। সেই সাথে অন্যান্যরাও রয়েছেন পলাতক।

সমবায় ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক ঝর্ণা প্রভা দেবী বলেন, করোনার সময় স্বর্ণের দাম বেড়ে যাওয়ায় তখন সে লোভ করে এখান থেকে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা নিয়ে যায়।

এছাড়া ভল্ট থেকে স্বর্ণ চুরির ঘটনা ধামাচাপা দিতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বন্ধ করেন অভ্যন্তরীণ তদন্ত। উল্টো মন্ত্রণালয়ের তদন্ত আদালতে মামলা করে স্থগিত করান।

সমবায় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক আহসানুল গনি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বন্ধ করেন অভ্যন্তরীণ তদন্ত। উল্টো মন্ত্রণালয়ের তদন্ত আদালতে মামলা করে স্থগিত করান তিনি।’

এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি দুদক। বর্তমানে সমবায় ব্যাংকে ৮ হাজার ৩৪৮ ভরি বন্ধকি স্বর্ণের বিপরীতে ঋণ দেয়া আছে ৩০ কোটি ১২ লাখ টাকা। আর চুরির ঘটনার পর স্বর্ণ ও টাকা তুলে নিচ্ছেন অনেক গ্রাহক।

নিউজটি শেয়ার করুন

সমবায় ব্যাংকের ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ চুরির ঘটনার অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা

আপডেট সময় : ০১:৪৬:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

২০২০ সালে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক থেকে প্রায় ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ চুরির ঘটনার অভিযুক্ত তৎকালীন চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহি। অভিযোগ রয়েছে, ভাগ্নে ও চাচাতো ভাইকে নিয়ে বড় এ চুরির ঘটনা ঘটান তিনি। শুধু স্বর্ণ চুরি নয়, প্রতিষ্ঠানে নিয়োগেও করেছেন অনিয়ম। ভুয়া সনদে নিয়োগ দিয়েছেন নিজের বান্ধবীকে। সেই সাথে যুবলীগ নেতা হওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বন্ধ করেছেন তদন্ত।

দেশের ইতিহাসে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে স্বর্ণ চুরির বড় ঘটনা ঘটে। এতে নড়েচড়ে উঠে আর্থিক খাত। এরপর আবার ২০২০ সালে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক থেকে প্রায় ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মহি।

২০০৯ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ মহি। পরে ব্যাংকের ভল্টের দায়িত্ব দেন তার ভাগ্নে ক্যাশ অফিসার নূর মোহাম্মদ ও এজিএম চাচাতো ভাই হেদায়েত কবিরকে। আর এদেরকে সাথে নিয়েই ভল্টের ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ লুট করার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে।

শুধু স্বর্ণ চুরি নয়, প্রতিষ্ঠানটির নিয়োগেও করেছেন নানা অনিয়ম। ভুয়া সনদের মাধ্যমে প্রথমে নিয়োগ দেন নিজের বান্ধবী কোহিনুর আক্তারকে। আর ২০০৯ থেকে ১৮ সাল পর্যন্ত ১৭৬ জনের নিয়োগের মধ্যে ১৩৮ জনকেই দিয়েছেন নিজের ও বান্ধবীর গ্রামের।

২০২০ সালের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ৪ মাসে ১৫০ কোটি টাকার স্বর্ণ চুরি করেন ভল্ট থেকে। পরের বছর স্বর্ণ চুরির মামলা করে দুদক। যে মামলার এক নম্বর আসামি হন মহিউদ্দিন আহমেদ মহি। এছাড়া আরও ৮ জন আসামি থাকলেও রাজনৈতিক ক্ষমতায় চার্জশিট থেকে নিজের নাম বাদ দিতে বাধ্য করেন তিনি।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর পুনরায় সামনে আসে স্বর্ণ চুরির বিষয়টি। এতে আদালতে মামলার কার্যক্রম আবারও চালু হয়। কিন্তু চার্জশিটে নাম না থাকায় এখনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি মহির বিরুদ্ধে। সেই সাথে অন্যান্যরাও রয়েছেন পলাতক।

সমবায় ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক ঝর্ণা প্রভা দেবী বলেন, করোনার সময় স্বর্ণের দাম বেড়ে যাওয়ায় তখন সে লোভ করে এখান থেকে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা নিয়ে যায়।

এছাড়া ভল্ট থেকে স্বর্ণ চুরির ঘটনা ধামাচাপা দিতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বন্ধ করেন অভ্যন্তরীণ তদন্ত। উল্টো মন্ত্রণালয়ের তদন্ত আদালতে মামলা করে স্থগিত করান।

সমবায় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক আহসানুল গনি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বন্ধ করেন অভ্যন্তরীণ তদন্ত। উল্টো মন্ত্রণালয়ের তদন্ত আদালতে মামলা করে স্থগিত করান তিনি।’

এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি দুদক। বর্তমানে সমবায় ব্যাংকে ৮ হাজার ৩৪৮ ভরি বন্ধকি স্বর্ণের বিপরীতে ঋণ দেয়া আছে ৩০ কোটি ১২ লাখ টাকা। আর চুরির ঘটনার পর স্বর্ণ ও টাকা তুলে নিচ্ছেন অনেক গ্রাহক।