ঢাকা ১১:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা দায়ী: ইরান

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:১৩:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৭১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানান, অপরাধ বন্ধ না করলে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে ইসরাইলকে। উত্তেজনা কমিয়ে আনতে জরুরি বৈঠক হয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে। যদিও এর আগেই ইসরাইল প্রবেশের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। এদিকে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে লেবাননে নিহত হয়েছেন ৮ ইসরাইলি সেনা।

৬ মাসের ব্যবধানে ইসরাইলে দ্বিতীয়বারের মতো হামলার পর উচ্ছ্বসিত মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমরা। আঞ্চলিক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কার মাঝেই বুধবারও দিনভর উল্লাস করেন ইরানের জনগণ। বিজয়োল্লাস ছিলো ইরাক ও ইয়েমেনের সড়কেও। হাসান নাসরাল্লাহ, ইসমাইল হানিয়ার ছবি হাতে উড়ানো হয় ফিলিস্তিন ও লেবাননের পতাকা।

মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমদের মধ্যে একজন জানান, গাজা ও লেবাননে ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞের জবাবে ইরানের হামলাকে স্বাগত জানাতে এসেছি।

আরও জানান, আজ ফিলিস্তিন, লেবানন, ইয়েমন ও ইরানের জনগণের জন্য আনন্দের দিন। ইহুদি ভূখণ্ডে আমরা সফল অভিযান চালাতে পেরেছি।

মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার পেছনে দায়ী যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। ট্রু প্রমিস টু নামের অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করার পর প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে এ কথা বলেছেন আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা জানান, মন্দ লোকেদের বিতারিত করা হলেই শান্তি আসবে মধ্যপ্রাচ্যে।

অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘অপরাধ বন্ধ না করলে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে ইসরাইলকে।’

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব যেকোনো মূল্যে রক্ষা করবো। যদি ইসরাইল তাদের অপরাধ বন্ধ না করে, তাহলে কঠোর প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হবে। তারা আমাদের দেশের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করলে তাদের দেশেও একই পরিণতি ঘটবে।’

ইরান সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ, সংঘাত, দ্বন্দ্ব কিংবা উত্তেজনা তারাই তৈরি করছে যারা এই অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার বুলি আওরাচ্ছে। সমস্যা তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কয়েকটি দেশ।’

মঙ্গলবার মধ্যরাতে ইসরাইলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ১৮০টির বেশি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোঁড়ে ইরান। যাতে ব্যবহার করা হয়েছে শক্তিশালী হাইপারসনিক ফাত্তাহ মিসাইল। খামেনি প্রশাসনের দাবি ৯০ শতাংশ মিসাইলই লক্ষ্যে আঘাত করেছে। তবে ইরানের ১০টি মিসাইল ধ্বংসের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সীমা লঙ্ঘন করায় ইরানকে চড়া মাশুল গুনতে হবে বলেও সতর্ক করেছে তেলআবিব।

ইসরাইল প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘বড় ভুল করেছে ইরান। এজন্য চড়া মাশুল গুণতে হবে। আত্মরক্ষা এবং শত্রুপক্ষকে জবাব দেয়ার লক্ষ্যে আমাদের দৃঢ়তা এখনও বুঝতে পারেনি দেশটি। তবে বুঝবে। লক্ষ্যে অবিচল থাকবো আমরা। যে আঘাত করবে, তাকে পাল্টা আঘাত করবো।’

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমিয়ে আনতে জরুরি বৈঠক হয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। ইসরাইলে ইরানের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তবে বৈঠক শুরুর আগ পর্যন্ত হামলার নিন্দা না জানানোয় জাতিসংঘ মহাসচিবের বিরুদ্ধে ইসরাইলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বছরব্যাপী সর্বাত্মক সামরিক অভিযানের মধ্যে লেবাননেও দু’সপ্তাহ ধরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তবে সীমান্ত এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে হিজবুল্লাহ। প্রথমবারের মতো সেনা নিহতের কথা স্বীকারও করছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী।

নিউজটি শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা দায়ী: ইরান

আপডেট সময় : ০৪:১৩:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪

মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানান, অপরাধ বন্ধ না করলে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে ইসরাইলকে। উত্তেজনা কমিয়ে আনতে জরুরি বৈঠক হয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে। যদিও এর আগেই ইসরাইল প্রবেশের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। এদিকে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে লেবাননে নিহত হয়েছেন ৮ ইসরাইলি সেনা।

৬ মাসের ব্যবধানে ইসরাইলে দ্বিতীয়বারের মতো হামলার পর উচ্ছ্বসিত মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমরা। আঞ্চলিক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কার মাঝেই বুধবারও দিনভর উল্লাস করেন ইরানের জনগণ। বিজয়োল্লাস ছিলো ইরাক ও ইয়েমেনের সড়কেও। হাসান নাসরাল্লাহ, ইসমাইল হানিয়ার ছবি হাতে উড়ানো হয় ফিলিস্তিন ও লেবাননের পতাকা।

মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমদের মধ্যে একজন জানান, গাজা ও লেবাননে ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞের জবাবে ইরানের হামলাকে স্বাগত জানাতে এসেছি।

আরও জানান, আজ ফিলিস্তিন, লেবানন, ইয়েমন ও ইরানের জনগণের জন্য আনন্দের দিন। ইহুদি ভূখণ্ডে আমরা সফল অভিযান চালাতে পেরেছি।

মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার পেছনে দায়ী যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। ট্রু প্রমিস টু নামের অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করার পর প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে এ কথা বলেছেন আয়াতুল্লাহ আল খামেনি। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা জানান, মন্দ লোকেদের বিতারিত করা হলেই শান্তি আসবে মধ্যপ্রাচ্যে।

অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘অপরাধ বন্ধ না করলে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে ইসরাইলকে।’

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব যেকোনো মূল্যে রক্ষা করবো। যদি ইসরাইল তাদের অপরাধ বন্ধ না করে, তাহলে কঠোর প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হবে। তারা আমাদের দেশের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করলে তাদের দেশেও একই পরিণতি ঘটবে।’

ইরান সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ, সংঘাত, দ্বন্দ্ব কিংবা উত্তেজনা তারাই তৈরি করছে যারা এই অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার বুলি আওরাচ্ছে। সমস্যা তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কয়েকটি দেশ।’

মঙ্গলবার মধ্যরাতে ইসরাইলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ১৮০টির বেশি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোঁড়ে ইরান। যাতে ব্যবহার করা হয়েছে শক্তিশালী হাইপারসনিক ফাত্তাহ মিসাইল। খামেনি প্রশাসনের দাবি ৯০ শতাংশ মিসাইলই লক্ষ্যে আঘাত করেছে। তবে ইরানের ১০টি মিসাইল ধ্বংসের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সীমা লঙ্ঘন করায় ইরানকে চড়া মাশুল গুনতে হবে বলেও সতর্ক করেছে তেলআবিব।

ইসরাইল প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘বড় ভুল করেছে ইরান। এজন্য চড়া মাশুল গুণতে হবে। আত্মরক্ষা এবং শত্রুপক্ষকে জবাব দেয়ার লক্ষ্যে আমাদের দৃঢ়তা এখনও বুঝতে পারেনি দেশটি। তবে বুঝবে। লক্ষ্যে অবিচল থাকবো আমরা। যে আঘাত করবে, তাকে পাল্টা আঘাত করবো।’

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমিয়ে আনতে জরুরি বৈঠক হয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। ইসরাইলে ইরানের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তবে বৈঠক শুরুর আগ পর্যন্ত হামলার নিন্দা না জানানোয় জাতিসংঘ মহাসচিবের বিরুদ্ধে ইসরাইলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বছরব্যাপী সর্বাত্মক সামরিক অভিযানের মধ্যে লেবাননেও দু’সপ্তাহ ধরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তবে সীমান্ত এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে হিজবুল্লাহ। প্রথমবারের মতো সেনা নিহতের কথা স্বীকারও করছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী।