মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার ফলে দেশের সব বিভাগেই মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টির ফলে ময়মনসিংহ, জামালপুর ও নেত্রকোনা জেলায় বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, ময়মনসিংহ বিভাগের ভুগাই–কংস, সোমেশ্বরী ও জিঞ্জিরাম নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভুগাই নদী শেরপুর জেলার নাকুয়াগাঁও পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভুগাই-কংস, সোমেশ্বরী ও জিঞ্জিরাম নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পেতে পারে, এবং শেরপুরের ভুগাই নদীর ভাটিতে নেত্রকোনার কংস নদী এবং জামালপুরের জিঞ্জিরাম নদী বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এর ফলে ভুগাই-কংস নদী সংলগ্ন শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা এবং জিঞ্জিরাম নদী সংলগ্ন জামালপুর জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
আবহাওয়ায় অধিদপ্তর বলছে, আরও দুই দিন বৃষ্টিপাত চলবে । আগামী রোববার থেকে বৃষ্টির প্রবণতা একটু কমতে পারে। তবে পরবর্তী ২ দিনে নদীসমূহের পানি হ্রাস পেতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হতে পারে বলে জানান তিনি।
আবহাওয়ার তথ্য অনুযায়ী আজ শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনাতে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময় ঢাকায় ১২ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়েছে।
এ দিকে বন্যার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের প্রধান নদীসমূহ সারিগোয়াইন, যাদুকাটা ও মনু নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে খোয়াই ও ধলাই নদীসমূহের পানি স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরবর্তী ২ দিনে নদীসমূহের পানি হ্রাস পেতে পারে।
চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে সাঙ্গু, মুহুরি, হালদা, ফেনী ও মাতামুহুরি নদীসমূহের পানি হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (২৪ ঘণ্টায় ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) প্রবণতা রয়েছে, যার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিভাগের এই সকল নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে এই পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী ২ দিনে নদীসমূহের পানি হ্রাস পেতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর প্রেক্ষিতে আগামী তিন দিন পর্যন্ত বরিশাল ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় নদীসমূহে স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা অধিক উচ্চতার জোয়ার পরিলক্ষিত হতে পারে।