ভারতে বসে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন বলে মনে করছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
আজ শুক্রবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাংগাখাঁ ইউনিয়নের আমান উল্যাহপুর আয়েশা দাখিল মাদ্রাসায় বন্যার্ত মানুষের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী বলেন, ‘গত ১৭ বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য ও দেশের মানুষের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করছে বিএনপি। এটি এখনও অব্যাহত রয়েছে। বিএনপির হাজার হাজার নেতা–কর্মী হামলা-মামলা ও গুম–খুনের শিকার হয়েছেন।
‘যারা এসব অপকর্মের সাথে জড়িত, তাদের গ্রেপ্তার ও বিচার করতে হবে। স্বৈরাচারদের বিচার না হলে এই দেশে গণতন্ত্র থাকবে না। গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়বে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি, একদিকে দেশের মানুষের পক্ষে কাজ করতে হবে,অন্যদিকে হায়না ও খুনি স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও এবং তাদের দোসদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। একটা রাজনৈতিক লোক কখন পালিয়ে যায়, যখন ঘরের শত্রু ও জনগণের শত্রুতে পরিণত হয়। তখন তিনি পালায় যান। হাসিনা এ দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তার ষড়যন্ত্র পালায়নি। ভারতে বসে দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী আরও বলেন, ‘স্বৈরাচারদের ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। এদে শের মানুষ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। ষড়যন্ত্রের পেছনে রয়েছে দেশ থেকে পাচার করা লাখ লাখ, কোটি কোটি টাকা। কারণ তাদের টাকার অভাব নেই। পাচার করা ওইসব টাকা দিয়ে ষড়যন্ত্র করছে স্বৈরাচার হাসিনা ও তার দোসররা।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিদের্শে বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাড়িঁয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। ত্রাণ থেকে শুরু করে এখন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে। সামনে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনবার্সন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।’
দলীয় নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আচার-আচরণ পরির্বতন করতে হবে। আগে একভাবে রাজনীতি ছিল। এখন আর সেটা হবে না। নতুন ধারায়, যুগের সঙ্গে, প্রজন্মের সঙ্গে মিল রেখে রাজনীতি করতে হবে। তাহলেই সুন্দর একটি বাংলাদেশের যে স্বপ্ন, সেটা বাস্তবায়ন হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রতিশোধ নেবেন না। প্রতিশোধের ভাষা হবে আইনগত। মামলা হবে, বিচার বিভাগ মামলার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবেন। আইনের মাধ্যমে সবকিছু মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু আইনকে নিজেদের হাতে তুলে নেবেন না কোনোভাবেই।’
‘অন্তবর্তী সরকারকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে, যাতে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। যে লড়াইয়ে আমরা অবতীর্ণ হয়েছিলাম সেই গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার আদায়ের লড়াই এখনো শেষ হয়নি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাবুদ্দিন সাবু, জেলা বিএনপি নেতা হাসিবুর রহমান, হাফিজুর রহমান, মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ ও আনোয়ার হোসেন বাচ্ছুসহ স্থানীয় ড্যাবের চিকিৎসকরা। সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দিনব্যাপী বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ বিতরণ করা হয়।