হিজবুল্লাহ নেতা হাশেম সাফিকে হত্যা করতে লেবাননে ইসরাইলের হামলা
- আপডেট সময় : ০১:৪৪:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
- / ৩৮০ বার পড়া হয়েছে
লেবাননে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দিনভর ২০ বার হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৩৭ জন। ইসরাইলি গণমাধ্যমের দাবি, বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাশেম সাফি উদ্দীনকে হত্যা করতে গোষ্ঠীটির গোয়েন্দা সদর দপ্তরে হামলা চালানো হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, মার্কিন সেনাদের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে পাঠাবে না যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে ইসরাইলের হুমকি সত্ত্বেও লেবানন থেকে শান্তিরক্ষীদের সরিয়ে নেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে জাতিসংঘ।
বৃহস্পতিবার এক ভয়ংকর রাতের সাক্ষী হলো লেবাননবাসী। মধ্যরাতে বৈরুতে বেসামরিক যাত্রীবাহী বিমান অবতরণের কিছুক্ষণ বাদেই ইসরাইলি হামলায় কেঁপে উঠে পুরো রাজধানী। লেবাননে ২০টি হামলা চালায় ইসরাইল, যার ১১টিই ছিল বৈরুতে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর দাবি, যুদ্ধ শুরুর পর লেবাননে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা ছিল এটি। আইডিএফ জানিয়েছে, বৈরুতের এই হামলা চালানো হয়েছে হিজবুল্লাহর গোয়েন্দা সদরদপ্তরে। ধারণা করা হচ্ছে, হামলার জন্য বাঙ্কার বাস্টার বোমা ব্যবহার করেছে ইসরাইল। নৃশংস এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ।
ইসরাইলের গণমাধ্যমগুলোর দাবি, হামলার টার্গেট ছিলেন হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা হাশেম সাফি উদ্দীন। হাসান নাসরাল্লাহ নিহতের পর সাফি উদ্দীন হিজবুল্লাহর হাল ধরবেন বলে ধারণা করছেন অনেকে। যদিও সাফি উদ্দীন নিহত হয়েছেন কি না, এ বিষয়ে নিশ্চিত করেনি কোনো পক্ষই।
এদিকে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে হিজবুল্লাহ। বৃহস্পতিবার ২৩০টিরও বেশি রকেট হামলা চালিয়েছে গোষ্ঠীটি। সঙ্গে ইরাক থেকে ইসলামিক রেজিসট্যান্স বাহিনী ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে। যদিও হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
শুধু বৃহস্পতিবারই লেবাননে প্রাণ হারিয়েছেন ২৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী। দেড় সপ্তাহের যুদ্ধে বন্ধ হয়ে গেছে ৩৭টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তাই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে দুপক্ষকে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এদিকে ইসরাইলের হুমকি সত্ত্বেও লেবানন থেকে শান্তিরক্ষীদের সরিয়ে নেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে জাতিসংঘ।
এদিকে, ইসরাইলে হামলার পর পাল্টা হামলার শঙ্কায় রয়েছে ইরান। দেশটির জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা না চালাতে সতর্ক করলেও একদিন পরই নিজের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছেন জো বাইডেন। এখন এ নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও ইসরাইলের জন্য মার্কিন সেনাদের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে পাঠানো হবে না বলে জানিয়েছেন বাইডেন।
পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং বলেন, ‘আমরা বড় আঞ্চলিক সংঘাত চাই না। আমরা কোনো গোষ্ঠী, সংগঠন বা দেশের বিরুদ্ধেও যুদ্ধে জড়াতে চাই না। ইসরাইলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়তই যোগাযোগ রাখছি। তারা কীভাবে পাল্টা হামলা চালাতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা করছি। হামলার ধরণ কীরূপ হবে, এ নিয়ে জল্পনা তৈরি করতে দিতে চাই না। কিন্তু আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবো।’
এদিকে দোহার মাধ্যমে ওয়াশিংটনে বার্তা পাঠিয়েছে তেহরান। যেখানে দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরান আঞ্চলিক যুদ্ধ চায় না। তবে আত্মসংযমের ধাপ পেরিয়ে এসেছে শিয়া রাষ্ট্রটি।
গাজা ও লেবাননে যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার বার্লিনের রাস্তায় নামেন ১০ হাজার মানুষ। অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতির দাবি জানানো হয় বিক্ষোভ থেকে।