টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুর ও ময়মনসিংহে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। দুই জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোর বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফসলের মাঠ, সবজি খেত ও মাছের খামার ভেসে গেছে।
প্লাবিত হয়েছে সড়ক, প্রবল স্রোতে সড়ক ভেঙে গেছে। এতে অনেক এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাড়িঘর ডুবে যাওয়ায় অনেকে নিরাপদ স্থান ও আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন। বন্যাকবলিত পরিবারগুলোতে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী উপজেলার কমপক্ষে ১৮টি ইউনিয়নের আংশিক বন্যাকবলিত হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। এতে এসব ইউনিয়নের বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার বহু বাড়িঘর, অধিকাংশ রাস্তাঘাট, ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে মাছের পুকুর ও খামার।
নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শেরপুর থেকে তিনআনী হয়ে নালিতাবাড়ী আঞ্চলিক সড়ক পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে রানীগাঁও সেতুর কাছে ভেঙে গেছে। ওই সড়কে শনিবার দুপুর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঢলের পানির প্রবল তোড়ে ভেঙে গেছে অনেক ঘরবাড়ি ও গাছপালা।
সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে কাজ করছে। বানভাসি মানুষ উঁচু স্থানে ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বানভাসি মানুষকে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।
ময়মনসিংহে ধোবাউড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের অন্তত ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব পরিবারগুলোতে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও নেতাই নদীর আশপাশের এলাকায় অন্তত অর্ধশত ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।
এদিকে হালুয়াঘাটের ১২টি ইউনিয়নের প্রায় সবকটিই প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর জমির ধান, সবজি খেত ও ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। পানিবন্দি হয়ে আছে প্রায় ত্রিশ হাজার পরিবার। অনাহারে-অর্ধাহারে দিনযাপন করছে তারা।
নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও বারহাট্টার অন্তত পনেরোটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, ভারতে বৃষ্টির কারণে আগামী ২৪ ঘণ্টা ঢলের পানি ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, টানা বৃষ্টির কারণে ঢাকার কেরানীগঞ্জ, রংপুর, নোয়াখালী, টাঙ্গাইল ও কুড়িগ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।