ঢাকা ০৪:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আজ থেকে শুরু শারদীয় দুর্গোৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১২:১১:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৬৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, আনন্দময়ী দেবী দুর্গা শরৎকে রাঙাতে আবারও মর্ত্যে এসেছেন। হিমালয়ের কৈলাশ থেকে ভক্তকে দর্শন ও তাদের পূজা নিতে আসছেন নিজ গৃহে। আজ পূজার ষষ্ঠী। আর ষষ্ঠীর মাধ্যমেই শুরু হয় দুর্গোৎসব। দেবীবরণে দেশ জুড়ে এখন উৎসবের আমেজ। মণ্ডপগুলো চলছে পূজা অর্চনা, ঢাকের বোল, শঙ্খের আওয়াজ, চন্ডীপাঠ আর উলুধ্বনি।

ভক্তরা প্রতিমা দর্শন ও প্রণামের মাধ্যম আশীর্বাদ চাচ্ছেন দেবী দুর্গার কাছে। ঢাকা মহানগরে ২৫৩টিসহ সারাদেশে সরকারি হিসেব অনুযায়ী, এ বছর ৩২ হাজার ৬৬৬টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন করবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

এ বছর দেবী আসছেন দোলায় (পালকি) চড়ে। ফিরে যাবেন হাতির পীঠে চড়ে। পৌরাণিক মতে, দেবীর এই বাহনে যাওয়া-আসার অর্থ হলো, মড়কের সম্ভাবনা নিয়ে আসলেও ফিরে যাওয়ার পর বসুন্ধরা হবে শস্যপূর্ণ। গত ২ অক্টোবর মহালয়ার মাধ্যমে দেবীপক্ষ ও শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্নের শুরু হয়। মহালয়ায় দেবী মর্ত্যলোকে পা রাখেন।

এদিকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বাণীতে বলেছেন, ‘দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য।’ গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বাণীতে তিনি দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সব নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।

একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এই দেশ আমাদের সকলের। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশ সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি।’

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে এবার দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা। আয়োজকরা বলছেন, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে অতীতে এত নিরাপত্তাব্যবস্থা চোখে পড়েনি। নিরাপত্তায় রয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পূজামন্ডপগুলোতে নিরাপত্তায় থাকবে দুই লাখ আনসার সদস্য।

এবার সারা দেশে ৩১ হাজারের বেশি স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন হচ্ছে। ঢাকার বাইরে কমলেও ঢাকায় পূজামন্ডপের সংখ্যা কিছু বেড়েছে। আজ ষষ্ঠীতে দুর্গা দেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠিবিহিত পূজার মাধ্যমে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে পাঁচদিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

সেনাবাহিনী-পুলিশ-র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটগুলো পূজা মণ্ডপের বিশেষ নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে এই উৎসব।

নিউজটি শেয়ার করুন

আজ থেকে শুরু শারদীয় দুর্গোৎসব

আপডেট সময় : ১২:১১:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, আনন্দময়ী দেবী দুর্গা শরৎকে রাঙাতে আবারও মর্ত্যে এসেছেন। হিমালয়ের কৈলাশ থেকে ভক্তকে দর্শন ও তাদের পূজা নিতে আসছেন নিজ গৃহে। আজ পূজার ষষ্ঠী। আর ষষ্ঠীর মাধ্যমেই শুরু হয় দুর্গোৎসব। দেবীবরণে দেশ জুড়ে এখন উৎসবের আমেজ। মণ্ডপগুলো চলছে পূজা অর্চনা, ঢাকের বোল, শঙ্খের আওয়াজ, চন্ডীপাঠ আর উলুধ্বনি।

ভক্তরা প্রতিমা দর্শন ও প্রণামের মাধ্যম আশীর্বাদ চাচ্ছেন দেবী দুর্গার কাছে। ঢাকা মহানগরে ২৫৩টিসহ সারাদেশে সরকারি হিসেব অনুযায়ী, এ বছর ৩২ হাজার ৬৬৬টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন করবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

এ বছর দেবী আসছেন দোলায় (পালকি) চড়ে। ফিরে যাবেন হাতির পীঠে চড়ে। পৌরাণিক মতে, দেবীর এই বাহনে যাওয়া-আসার অর্থ হলো, মড়কের সম্ভাবনা নিয়ে আসলেও ফিরে যাওয়ার পর বসুন্ধরা হবে শস্যপূর্ণ। গত ২ অক্টোবর মহালয়ার মাধ্যমে দেবীপক্ষ ও শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্নের শুরু হয়। মহালয়ায় দেবী মর্ত্যলোকে পা রাখেন।

এদিকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বাণীতে বলেছেন, ‘দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য।’ গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বাণীতে তিনি দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সব নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।

একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এই দেশ আমাদের সকলের। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশ সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি।’

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে এবার দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা। আয়োজকরা বলছেন, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে অতীতে এত নিরাপত্তাব্যবস্থা চোখে পড়েনি। নিরাপত্তায় রয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পূজামন্ডপগুলোতে নিরাপত্তায় থাকবে দুই লাখ আনসার সদস্য।

এবার সারা দেশে ৩১ হাজারের বেশি স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন হচ্ছে। ঢাকার বাইরে কমলেও ঢাকায় পূজামন্ডপের সংখ্যা কিছু বেড়েছে। আজ ষষ্ঠীতে দুর্গা দেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠিবিহিত পূজার মাধ্যমে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে পাঁচদিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

সেনাবাহিনী-পুলিশ-র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটগুলো পূজা মণ্ডপের বিশেষ নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে এই উৎসব।