নিউজিল্যান্ডের সাবেক ব্যাটসম্যান ব্রায়ান হ্যাস্টিংসের জীবনের ইনিংস থামলো ৮৪ বছর বয়সে। সোমবার (৭ অক্টোবর) না ফেরার দেশে পাড়ি জমান টেস্টে বিখ্যাত জুটির এই নায়ক। ঘরোয়া ক্রিকেটে যে দলের হয়ে প্রায় দুই দশক খেলেছেন, সেই ক্যান্টারবেরি ক্রিকেট মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিশ্চিত করেছে।
সাবেক এই কিউই ব্যাটার ক্যারিয়ারে ৩১ টেস্টে ৫৬ বার ব্যাট করে ৩০.২০ গড়ে ১৫১০ রান করেন। তার এমন সাদামাটা পরিসংখ্যানের পরও ক্রিকেট ইতিহাস কিংবদন্তি হিসেবেই তাকে মনে রেখেছে একটি জুটির জন্য।
১৯৬৯ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত ছিল তার টেস্ট ক্যারিয়ার। এর মধ্যে ১৯৭৩ সালে অকল্যান্ডে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে দশম উইকেট জুটিতে রিচার্ড কলিঞ্জকে নিয়ে ১৫১ রানের জুটি গড়েছিলেন হ্যাস্টিংস। ২০১৩ সালে পর্যন্ত টেস্টে শেষ উইকেটে এটিই ছিল বিশ্ব রেকর্ড।
পাকিস্তানের আজহার মেহমুদ-মুশতাক আহমেদ ১৯৯৭ সালে হ্যাস্টিংস-কলিঞ্জের রেকর্ড জুটি ছুঁয়ে ফেলেন। তবে ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬৩ রানের জুটি গড়ে হ্যাস্টিংসদের পেছনে ফেলেন অস্ট্রেলিয়ার ফিলিপ হিউজ-অ্যাশটন অ্যাগার জুটি। এক বছর পর ভারতের বিপক্ষে শেষ উইকেটে ১৯৮ রান যোগ করে রেকর্ডটি নতুন করে লিখেছেন ইংল্যান্ডের জো রুট ও জেমস অ্যান্ডারসন।
হ্যাস্টিংস ১৯৭৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় দিলেও ক্রিকেটের সঙ্গেই জড়িয়ে ছিলেন। ২০০০ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে ১০টি টেস্ট ও ১৮টি ওয়ানডেতে ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালন করা হ্যাস্টিংস ক্যান্টারবেরি ক্রিকেটের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।
১৯৭৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বিপক্ষে হ্যাস্টিংস তার সবচেয়ে বিখ্যাত ইনিংসটি যখন খেলতে নেমেছিলেন। সেদিন ১৮০ রানে নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় উইকেট খোয়ানোর পর ব্যাটিংয়ে নামেন এই ডানহাতি। হ্যাস্টিংস ব্যাটিংয়ে নামার পর দ্রুতই বদলে যায় পরিস্থিতি। তাকে এক প্রান্তে রেখে ফিরে যান সাত ব্যাটসম্যান। ১৮০/২ থেকে নিউজিল্যান্ড হয়ে যায় ২৫১/৯।
প্রথম ইনিংসে ৪০২ রান করা পাকিস্তানের বড় লিড নেওয়ার স্বপ্ন এরপর ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান কলিঞ্জকে নিয়ে চুরমার করেন হ্যাস্টিংস। ১৫১ রানের জুটি গড়ার পর ওয়াসিম রাজার বলে হ্যাস্টিংস যখন বোল্ড হলেন নিউজিল্যান্ডের রানও ৪০২। চারে নেমে হ্যাস্টিংস সেদিন ২৭৫ মিনিট ব্যাট করে ১১০ রান করেন। তার সঙ্গী কলিঞ্জ ১৫৫ মিনিট ব্যাট করে ৬৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।