ঢাকা ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

গাছ দিয়ে তৈরি মণ্ডপে পরিবেশ বাঁচানোর সবুজ বার্তা

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৪:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৩৭০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মণ্ডপ তৈরি হয়েছে আট হাজার গাছ দিয়ে। উষ্ণায়ণের বিশ্বে গাছ লাগিয়ে প্রাণ বাঁচানোর, গাছ বাঁচানোর বার্তা দিচ্ছে এই পূজামণ্ডপ। লালাবাগানের পূজামণ্ডপের থিম পরিবেশরক্ষা। কলকাতার মানিকতলার ঘিঞ্জি ও জনবহুল এলাকায় আট হাজার গাছ দিয়ে তৈরি হয়েছে এই মণ্ডপ। লালাবাগানে এই পূজার বার্তা একটাই—নিজে বাঁচতে গেলে, বিশ্বকে বাঁচাতে গেলে গাছ লাগান, তাকে সন্তানের স্নেহে যত্ন করুন।

এই মণ্ডপে প্রতিমাও অভিনব। দেবী মূর্তি ও তার পাশে পাতার ব্যবহার করা হয়েছে শৈল্পিকভাবে। উদ্দেশ—মানুষকে সচেতন করা। নান্দনিক বোধের সঙ্গে পরিবেশ সচেতনতা এখানে মিশে গেছে।

এই পূজায় আট হাজারের বেশি গাছ দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। ১৫টিরও বেশি প্রজাতির গাছ রয়েছে। মেদিনীপুরের গ্রামে এই গাছগুলিকে যত্ন করে বড় করা হয়েছে। তারপর নিয়ে আসা হয়েছে মণ্ডপে।

গত পাঁচমাস ধরে তৈরি হয়েছে এই অভিনব মণ্ডপ। ধীরে ধীরে তা রূপ পেয়েছে। গত দুই মাস ধরে গাছগুলোকে মণ্ডপে আনা হয়েছে। নানা ধরনের গাছ ব্যবহার করা হয়েছে এই মণ্ডপসজ্জায়। ফার্ন, মস, পান, বিভিন্ন ধরনের পাতাবাহার সবই আছে। এত গাছের উপস্থিতিতে মণ্ডপ সবুজ ও সুন্দর হয়েছে তাই নয়, তা দৃষ্টিনন্দনও হয়েছে। সেগুলোকে রক্ষা করাও ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। পূজা শেষ হওয়ার পর সেগুলিকে বাঁচিয়ে রাখাও বড় দায়িত্ব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সকাল থেকেই লালাবাগানের এই পূজামণ্ডপে উপচে পড়া ভিড়। মায়ের মোহময়ী রূপ ক্যামেরাবন্দি করছেন দর্শনার্থীরা। কলকাতার হাজারো থিমের মাঝে লালাবাগানের সবুজায়নের থিম আকর্ষণ করছে মানুষকে। মণ্ডপ দেখতে এসে ক্যামেরায় তা ধরে রাখছেন দর্শকেরা।

উদ্যোক্তা লালাবাগান নবাঙ্কুরের সুমন মালাকার বলেন, ‘আমাদের বার্তা বিশ্ব উষ্ণায়নের বিপক্ষে। গাছকে সন্তানের মতো লালন পালন করতে হবে। এই গাছগুলো আমরা গত চার-পাঁচ মাস ধরে লালন পালন করেছি। গাছ যদি ঠিকভাবে প্রতিপালন করা হয় তা আমাদের জন্যই ভালো।’

মুচিপাড়ার বাসিন্দা তথা মণ্ডপ পরিদর্শনকারী বিতান ঘোষ বলেন, ‘ইকো সিস্টেমের জন্য গাছ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গাছ দিনের পর দিন কমে যাচ্ছে। তাই পরিবেশ রক্ষা করতে আমাদেরও গাছ লাগানো উচিত।’

আরেক দর্শক শ্রীজা চট্টোপাধ্যায় মনে করেন, ‘আবাসন তৈরি ও শিল্পায়নের জন্য এখন গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। এই থিম থেকে সবুজ বাঁচানোর বার্তা যাবে।’

লালাবাগান নবাঙ্কুরের সম্পাদক তাপস রায় বলেন, আমাদের এ বছর ৬৫ বছরের পুজো। আমাদের শিল্পী প্রশান্ত পাল। আমাদের ভাবনা ‘লালাবাগানে নবাঙ্কুর’। প্রায় আট হাজার গাছ দিয়ে আমাদের মাতৃমণ্ডপ তৈরি হয়েছে। গাছকে সন্তানের মতো লালন-পালন করতে হবে এই বার্তা আমরা দিতে চেয়েছি। তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো থাকবে।

দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই পূজা কমিটির সদস্য সৌমিত্র সাহা জানিয়েছেন, ‘উন্নয়নের জন্য মানুষ দূষণ সৃষ্টি করছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য উৎসবের মাধ্যমে এই বার্তা দিতে চেয়েছি। গাছ লাগানো ও তা বাঁচিয়ে রাখাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মণ্ডপের মাথায় পরিবেশবান্ধব প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে। গাছের জন্য যে জল, আলো দরকার তা এখানে পাচ্ছে। এটা আমাদের এক বছরের পরিশ্রমের ফসল।’

নিউজটি শেয়ার করুন

গাছ দিয়ে তৈরি মণ্ডপে পরিবেশ বাঁচানোর সবুজ বার্তা

আপডেট সময় : ০৬:৫৪:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪

মণ্ডপ তৈরি হয়েছে আট হাজার গাছ দিয়ে। উষ্ণায়ণের বিশ্বে গাছ লাগিয়ে প্রাণ বাঁচানোর, গাছ বাঁচানোর বার্তা দিচ্ছে এই পূজামণ্ডপ। লালাবাগানের পূজামণ্ডপের থিম পরিবেশরক্ষা। কলকাতার মানিকতলার ঘিঞ্জি ও জনবহুল এলাকায় আট হাজার গাছ দিয়ে তৈরি হয়েছে এই মণ্ডপ। লালাবাগানে এই পূজার বার্তা একটাই—নিজে বাঁচতে গেলে, বিশ্বকে বাঁচাতে গেলে গাছ লাগান, তাকে সন্তানের স্নেহে যত্ন করুন।

এই মণ্ডপে প্রতিমাও অভিনব। দেবী মূর্তি ও তার পাশে পাতার ব্যবহার করা হয়েছে শৈল্পিকভাবে। উদ্দেশ—মানুষকে সচেতন করা। নান্দনিক বোধের সঙ্গে পরিবেশ সচেতনতা এখানে মিশে গেছে।

এই পূজায় আট হাজারের বেশি গাছ দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। ১৫টিরও বেশি প্রজাতির গাছ রয়েছে। মেদিনীপুরের গ্রামে এই গাছগুলিকে যত্ন করে বড় করা হয়েছে। তারপর নিয়ে আসা হয়েছে মণ্ডপে।

গত পাঁচমাস ধরে তৈরি হয়েছে এই অভিনব মণ্ডপ। ধীরে ধীরে তা রূপ পেয়েছে। গত দুই মাস ধরে গাছগুলোকে মণ্ডপে আনা হয়েছে। নানা ধরনের গাছ ব্যবহার করা হয়েছে এই মণ্ডপসজ্জায়। ফার্ন, মস, পান, বিভিন্ন ধরনের পাতাবাহার সবই আছে। এত গাছের উপস্থিতিতে মণ্ডপ সবুজ ও সুন্দর হয়েছে তাই নয়, তা দৃষ্টিনন্দনও হয়েছে। সেগুলোকে রক্ষা করাও ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। পূজা শেষ হওয়ার পর সেগুলিকে বাঁচিয়ে রাখাও বড় দায়িত্ব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সকাল থেকেই লালাবাগানের এই পূজামণ্ডপে উপচে পড়া ভিড়। মায়ের মোহময়ী রূপ ক্যামেরাবন্দি করছেন দর্শনার্থীরা। কলকাতার হাজারো থিমের মাঝে লালাবাগানের সবুজায়নের থিম আকর্ষণ করছে মানুষকে। মণ্ডপ দেখতে এসে ক্যামেরায় তা ধরে রাখছেন দর্শকেরা।

উদ্যোক্তা লালাবাগান নবাঙ্কুরের সুমন মালাকার বলেন, ‘আমাদের বার্তা বিশ্ব উষ্ণায়নের বিপক্ষে। গাছকে সন্তানের মতো লালন পালন করতে হবে। এই গাছগুলো আমরা গত চার-পাঁচ মাস ধরে লালন পালন করেছি। গাছ যদি ঠিকভাবে প্রতিপালন করা হয় তা আমাদের জন্যই ভালো।’

মুচিপাড়ার বাসিন্দা তথা মণ্ডপ পরিদর্শনকারী বিতান ঘোষ বলেন, ‘ইকো সিস্টেমের জন্য গাছ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গাছ দিনের পর দিন কমে যাচ্ছে। তাই পরিবেশ রক্ষা করতে আমাদেরও গাছ লাগানো উচিত।’

আরেক দর্শক শ্রীজা চট্টোপাধ্যায় মনে করেন, ‘আবাসন তৈরি ও শিল্পায়নের জন্য এখন গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। এই থিম থেকে সবুজ বাঁচানোর বার্তা যাবে।’

লালাবাগান নবাঙ্কুরের সম্পাদক তাপস রায় বলেন, আমাদের এ বছর ৬৫ বছরের পুজো। আমাদের শিল্পী প্রশান্ত পাল। আমাদের ভাবনা ‘লালাবাগানে নবাঙ্কুর’। প্রায় আট হাজার গাছ দিয়ে আমাদের মাতৃমণ্ডপ তৈরি হয়েছে। গাছকে সন্তানের মতো লালন-পালন করতে হবে এই বার্তা আমরা দিতে চেয়েছি। তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো থাকবে।

দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই পূজা কমিটির সদস্য সৌমিত্র সাহা জানিয়েছেন, ‘উন্নয়নের জন্য মানুষ দূষণ সৃষ্টি করছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য উৎসবের মাধ্যমে এই বার্তা দিতে চেয়েছি। গাছ লাগানো ও তা বাঁচিয়ে রাখাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মণ্ডপের মাথায় পরিবেশবান্ধব প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে। গাছের জন্য যে জল, আলো দরকার তা এখানে পাচ্ছে। এটা আমাদের এক বছরের পরিশ্রমের ফসল।’